Farm Laws: ৩ কৃষি আইন প্রত্যাহার,কৃষকদের জয়, অন্নদাতাদের কাছে মাথা নত করতে হল মোদিকে

কৃষকদের প্রায় এক বছরের আন্দোলনের পর প্রত্যাহার করা হল ২০২০ সালে পাশ হওয়া বিতর্কিত তিন কৃষি আইন। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) জাতির উদ্দেশে ভাষণে কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছেন। বিতর্কিত এই আইন প্রত্যাহার করার পরই বিষয়টিকে অভিনন্দন করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন বিরোধীরা।

আরও পড়ুন:কৃষি আইন প্রত্যাহার মোদির: একনজরে একবছরের লড়াই

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষি আইন প্রত্যাহারের পরই টুইট করে কৃষকদের অভিনন্দন জানিয়ে লেখেন, এই জয় তাঁদেরই। টুইটে তিনি লেখেন,  ‘বিজেপি কৃষকদের প্রতি নৃশংস। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে সমস্ত কৃষক নিরন্তর লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন তাঁদের প্রত্যেককে আমার হার্দিক অভিনন্দন। এটা আপনাদের জয়। এই লড়াইয়ে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা।’ পাশাপাশি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhisekh Bandyopadhaya)টুইটে লেখেন,’আমাদের কৃষকদের শক্তি আরও বৃদ্ধি পেল!তাঁদের দীর্ঘ এবং কঠিন সংগ্রাম,তাঁদের দৃঢ়তা এবং সংকল্প সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই বিজেপিকে তার আসল জায়গা দেখিয়ে দিয়েছে।’ তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়(Sukhendusekhar Roy) বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত থেকেই স্পষ্ট মোদি যুগের শেষের শুরু৷ ফেব্রুয়ারি মাসে যে রাজ্যগুলিতে নির্বাচন আছে, সেখানে নিজেদের হার নিশ্চিত বুঝতে পেরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।দেরিতে হলেও বোধহয়। অন্যদিকে কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করতেই বিজেপি-কে খোঁচা দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়(Sougata Roy)। বর্ষীয়ান এই সাংসদের মতে, এই আইন প্রত্যাহার আসলে দেশের গণতন্ত্রের জয়। তিনি বলেছেন, ‘‘দিল্লি সীমানায় গত বছর থেকে আন্দেলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। বিজেপি সেই আন্দোলন ভাঙার অনেক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পারে নি। এটাই গণতান্ত্রিক শক্তি।’’ এর পরই বিজেপি-র উদ্দেশে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘‘সামনে পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে। নির্বাচনে ভরাডুবির ভয়েই বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করলেন মোদি।’’ সাংসদের অধিবেশনে বিক্ষোভ এড়াতেই আগেভাগে এই ঘোষণা করা হল বলে মনে করেন তিনি। মোদির ঘোষণার পরই কৃষি আইন প্রত্যাহার নিয়েই একাধিক টুইট করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন(Derek O’Brien)। প্রথম টুইটেই তিনি খোঁচা দিয়েছেন তিনি লিখেছেন, ‘অহংকারের হার। অহঙ্কারের হার, অতিরিক্ত গর্ব থেকে ভূপতিত।’

কেন্দ্রের এই পিছু হঠাকে কৃষকদের আন্দোলনের জয় বলে মনে করে বামপন্থী দল। এমনই মত এই অন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকা সিপিএম(CPM) নেতা এবং প্রাক্তন সাংসদ হান্নান মোল্লার(Hannan Mollah)।আইন প্রত্যাহারের বিষয়টিকে নিয়ে সিপিএম সংযুক্ত কিষান মোর্চা এবং দেশের লক্ষাধিক আন্দোলনরত কৃষককে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সিপিএমের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, “সংযুক্ত কিষান মোর্চার নেতৃত্বে লক্ষাধিক কৃষকের সঙ্ঘবদ্ধ লড়াইয়ে জয় এল। মোদি সরকারের সমস্ত নোংরা চেষ্টা পরাজিত হয়েছে। স্বৈরাচারী রাজত্ব বাধ্য হয়েছে তিন কালা কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে। কৃষক মোদি সরকারপকে শিক্ষা দিল:স্বৈরাচার কাজ করে না। শহিদ কিষানদের আমরা স্মরণ করছি এবং তাঁদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছি”। সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ হান্নার মোল্লা  জনান, ‘‘এটি গণতন্ত্রের জয়।’’ পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর(Sujan Chakraborty) গলাতেও একই সুর। তিনি বলেছেন, ‘‘এই আইন প্রত্যাহার কৃষকদের লড়াইয়ের জয়। এই আন্দোলন শেখাল— যত বড় স্বৈরাচারী শাসকই হোক না কেন, মানুষের আন্দোলনের কাছে তাকে মাথা নত করতে হবে। এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। মোদিজিকে হার স্বীকার করতে হয়েছে।’’

শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতির উদ্দেশে ভাষণে কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণার পর সোচ্চার হয়ে ওঠে কংগ্রেস। কৃষি আইন প্রত্যাহার প্রসঙ্গে টুইটারে  রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) লিখেছেন,  ‘দেশের অন্নদাতাদের সত্যাগ্রহ অহঙ্কারের মাথা নত করে দিয়েছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে জয়কে অভিনন্দন। জয় হিন্দ। জয় হিন্দের (ভারতের) কৃষক।’কংগ্রেসের তরফে শুক্রবার বলা হয়েছে উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব-সহ পাঁচ রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা ভোট নজরে রেখেই কৃষি আইন নিয়ে পিছু হঠেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম(P Chidambaram) বলেন, ‘‘ভোটে হারার ভয়েই এমন পদক্ষেপ করল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।’’

Previous articleকৃষি আইন প্রত্যাহার মোদির: একনজরে একবছরের লড়াই
Next articleAb De Villiers: ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরই এবিডিকে আবেগঘন বার্তা বিরাট কোহলি, অনিল কুম্বলে, জেপি ডুমিনিদের