বাদল অধিবেশনে জেরে শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যসভার ১২ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়। এর প্রতিবাদে সংসদের (Parliament) গান্ধীমূর্তির সামনে ধর্না দিচ্ছেন সাসপেন্ডেড সাংসদরা। তাতে বেশিরভাগ দিনই যোগ দিচ্ছেন বিজেপি (Bjp) বিরোধীদলের অন্যান্য সাংসদরাও। মঙ্গলবার, এই ধর্না কর্মসূচিতে যোগ দেন তৃণমূলের (Tmc) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay)। ধর্না মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ক্ষমা চাইলে সাংসদদের সাসপেনশন তুলে নেওয়া হবে। এর জবাবে অভিষেক বলেন, ক্ষমা যদি চাইতেই হয় সেটা চাইবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী। কারণ সংসদের ভিতরে দাঁড়িয়ে অভব্য আচরণ করেছিলেন তিনি। তিনি যদি ক্ষমা চান তাহলে অবশ্যই আমাদের সাংসদরাও ক্ষমা চাইবেন। সরকার শুধুমাত্র বিরোধীদের ক্ষমা চাইতে বলেছে, কারণ বিরোধীরা সরকারের স্বৈরাচারী শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধে গলা চড়িয়েছে।” তার মতে, সরকারের উচিত আগে নিজেদের ঘর সামলানো। সংসদে দ্বিচারিতা করছে বিজেপি। তাঁদের দলীয় সাংসদরা যখন অধিবেশনের মধ্যে গোলমাল করেন, অসাংবিধানিক কথা বলেন, তখন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অথচ তৃণমূল-সহ বিরোধী দলের সাংসদরা গণতন্ত্রের পক্ষে সাওয়াল করলেই তাঁদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। “বিজেপি সাংসদরা করলে ভালো, আর বিরোধীরা করলেই খারাপ! সংসদে এই দ্বিচারিতা চলতে পারে না”।

তৃণমূলের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কোন ভিত্তিতে কংগ্রেস এই অভিযোগ করছে? আমিও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারি, কংগ্রেস ও পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে গিয়ে বিজেপিকে পরোক্ষে সাহায্য করেছে। দেশের মানুষ কংগ্রেসের ওপর নির্ভর করেছিল কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে সংসদের ভিতর ও বাহিরে প্রধান বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করতে। কংগ্রেসের কারণেই আজ বিজেপি দেশে স্বৈরাচারী শাসন চালাচ্ছে।” তাঁর মতে,কংগ্রেস যেভাবে চলছে তাতে মনে হচ্ছে আগামী ৫০ বছরেও কংগ্রেস বর্তমান সরকারের প্রধান “সাপোর্ট সিস্টেম” হিসেবে থেকে যাবে।

মুম্বইতে শরদ পাওয়ারের সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক প্রসঙ্গে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শরদ পাওয়ার পুরনো সহকর্মী ।আর সেই সূত্রে তাঁরা একে অপরের সাথে দেখা করতেই পারেন।

বিভিন্ন রাজ্যে তৃণমূলের বিস্তার প্রসঙ্গে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে এসে যেমন সবার অধিকার আছে নির্বাচনী প্রচার চালানোর তেমন আমাদেরও অধিকার আছে গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয় বা হরিয়ানায় গিয়ে নিজেদের দলের বিস্তার ঘটানোর প্রক্রিয়া শুরু করার।”

২০২৪ এ প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসাবে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি দেখতে চান? এই কথার উত্তরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “এই কথাটা কংগ্রেসকেও বুঝতে হবে যে আমরা ঘোষণা করার কেউ নই। মানুষ যাঁকে চাইবে তিনিই প্রধানমন্ত্রী হবেন। আর মানুষ জানে তাদের জন্য কে ভালো, কে তাদের পাশে আছে”।

আরও পড়ুন-Rahul Gandhi: বক্তব্যের মাঝেই রাহুলের মাইক বন্ধের অভিযোগ, সংসদ থেকে ওয়াকআউট কংগ্রেসের

সংসদের তৃণমূলের রণকৌশল ঠিক করতে, এবং সেই মতো দলীয় সাংসদদের নির্দেশ দিতে মঙ্গলবারই দিল্লি পৌঁছেছেন অভিষেক। বিমানবন্দর থেকে সোজা ধর্নাস্থলে পৌঁছে যান তিনি। সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের সঙ্গে বসেন ধর্নাতে। ছিলেন শান্তা ছেত্রী, দোলা সেন, শান্তনু সেন, অপরূপা পোদ্দাররাও। বুধবার, সমস্ত বিরোধী দলের সাংসদরা অধিবেশন বয়কট করে ধর্না মঞ্চে যোগ দেবেন বলে জানা গিয়েছে।
