পরপর ট্যুইটে বিজেপিকে ধুইয়ে দিয়েছেন দলের এই বর্ষীয়ান নেতা। কলকাতা পুরভোটে বিজেপির ভরাডুবির পরেও দলের নেতাদের বয়ানবাজি, দায় এড়িয়ে গিয়ে সন্ত্রাসের জিগির তোলা, অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টাকে কার্যত দাঁড় করিয়ে চাবকেছেন রাইটসের প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ার। রাখঢাক না করে তাদের অসৎ-লম্পটও বলে ফেললেন!

বুধবার সকাল থেকেই একের পর এক ট্যুইট করেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। বিষ মেশানো সেই ট্যুইটে তথাগতর দাবি, দলের অনেক ভাল ফল হতে পারত বিধানসভা ভোটে, এমনকী কলকাতা পুরভোটেও। কিন্তু শুধরে নেওয়ার কোনও ইচ্ছা নেই দলের। যে কারণে বিধানসভা ভোটের বিপর্যয়ের প্রসারণপর্ব চলছে এখন বাংলার বিজেপির। বেশ কিছু নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে বেনজির আক্রমণ করেন প্রাক্তন রাজ্যপাল। বলেন, বিধানসভা ভোটের পরই যদি দলে আত্মানুসন্ধান হতো, তাহলে এমন বিপর্যয় হতো না। প্রথমবার ধাক্কা খাওয়ার পরেই যদি অসৎ-লম্পটদের দল থেকে সরানো হতো তাহলে সাধারণ কর্মীরা উজ্জীবিত হতেন। আর সেক্ষেত্রে পুরভোটের ফল বেরনোর পরেও এমন কান্নাকাটিও করতে হতো না।
প্রথমটা ভুল। দ্বিতীয়টা ঠিক।
কারণ বিজেপি কলকাতায় তৃতীয় দলে পরিণত হয়েছে। আসনও পেয়েছে তিনটি। pic.twitter.com/vuyTm4xA1m— Tathagata Roy (@tathagata2) December 22, 2021
পুরভোটের শতাংশের হিসাবে তৃতীয় স্থানে নেমে যাওয়া নিয়ে তথাগত দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ভি ফর ভিকট্রির ছবি পোস্ট করেছেন। আর কটাক্ষ করতে তারপরেই নিজের তিন আঙুলের ছবি দিয়েছেন। তারপর লিখেছেন, প্রথমটা ভুল, দ্বিতীয়টা ঠিক। কেন? উত্তরে বলেছেন, কলকাতায় বিজেপি তৃতীয় দল, আসনও পেয়েছে তিনটি। এটাই বাস্তব। বাকিটা লোক দেখানো, খবরে থাকার চেষ্টা, ছবি তোলার অপচেষ্টা বলে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

দলের মধ্যে ঠোঁট কাটা নেতা বলে পরিচিত তথাগত। নিজে রাজ্য সভাপতি থাকার সময় রাজ্যে বিজেপিকে খুঁজতে দূরবীনের সাহায্য নিতে হতো। সে ব্যর্থতার কথা ভুলে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু সমালোচনা করে ‘সচ বাত’-এর বয়ানবাজিতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। দলের সংশোধন পর্ব নিয়ে পরামর্শ দিতে গিয়ে সিপিএমের প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন। লিখেছেন, ২০০১ সালে জ্যোতিবাবুকে খারিজ করে সাফল্য পেয়েছিল সিপিএম। ভেঙে পড়া অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে গেলে আত্মবিশ্লেষণ করতে হয়। শুধু কারচুপি-কারচুপি বলে চেঁচালেই হয় না। তৃণমূলের কলকাতা পুরসভা ভোটে জয়টা যে অবশ্যম্ভাবী ছিল, সে কথাও তার ট্যুইটে স্পষ্ট। বলেছেন, তৃণমূল জানত তারা ভালভাবেই জিতবে। কিন্তু তাবলে মাঠ ছেড়ে দিয়ে হারার আগেই হের যাব বললে তো আর আত্মবিশ্লেষণের দরকার হয় না!

একটা দল ভেঙে পড়েও আবার উঠে দাঁড়াতে পারে যদি তার ইচ্ছা থাকে। তার জন্য হারের বিশ্লেষণ করতে হয়, course correction করতে হয়। সিপিএম ঠিক এইভাবেই ২০০১ সালে জ্যোতিবাবুকে খারিজ করে সাফল্য পেয়েছিল। এই পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রচুর কারচুপি করেছে, কিন্তু শুধু তা দেখলেই হবে না।
— Tathagata Roy (@tathagata2) December 22, 2021
কেন প্রকাশ্যে বলছেন? তার জবাব দিয়ে তথাগতর দাবি, প্রকাশ্যে বলায় অন্যরা দুঃখ পাচ্ছেন, আমিও। বহুবার গোপনে বলেও লাভ হয়নি। অর্থাৎ তাঁর এই সমালোচনার পরেও যে রাজ্য বিজেপির রসাতলে যাওয়া আটকাতে পারবেন না, সে দুঃখও তথাগত গোপন করেননি।

আরও পড়ুন:Paliament: বিরোধীদের বিক্ষোভের জের! একদিন আগেই শেষ সংসদের শীতকালীন অধিবেশন
