একুশের বিধানসভা নির্বাচনে (West Bengal Assembly Election 2021) জোট (Alliance) পাকিয়ে শূন্য হয়েছে বাম (Left front) ও কংগ্রেস (Congress)। পুজোর আগে-পরে উপনির্বাচনে (By Poll) তাই জোটের পথে হাঁটেনি দুই দলই। কিন্তু সেখানেও গো-হারা। এরপর কলকাতা পুরভোটে (KMC) আলাদা লড়াই করে বাম-কংগ্রেসের সম্মিলিত আসন দুয়ে-দুয়ে চার। তবে বামেদের জন্য ইতিবাচক, কলকাতা পুরভোটে জোট না পাকিয়ে কিছুটা রক্তক্ষরণ কমেছে তাদের। ভোট শতাংশে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপিকে (BJP) পিছনে ফেলে দু’নম্বরে উঠে এসেছে তারা। কিছুটা ভোট বেড়েছে কংগ্রেসেরও। সুতরাং, কলকাতা পুরভোটের নিরিখে বলাই যায়, বাম-কংগ্রেস জোট না করেই বরং ভালো ফল করতে পারে।

আরও পড়ুন:Snow Fall: দার্জিলিঙে প্রবল তুষারপাত, টাইগার হিল থেকে ঘুম ঢেকেছে বরফে
এর মাঝেই ফের রাজ্যের চার পুরনিগমের ভোট জানুয়ারিতে। চার পুরভোটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে (Siliguri)। কারণ, একুশের বিধানসভা ভোটে প্রবল মমতা ঝড়ের মধ্যেও শিলিগুড়ি আসনটি ৫০ শতাংশ ভোট নিয়ে জিতেছিল বিজেপি। ৩০ শতাংশ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল তৃণমূল (TMC)। আর ১৬ শতাংশ ভোট নিয়ে তৃতীয় হয়েছিল বাম তথা সিপিএম (CPIM), যার মধ্যে অবশ্য কংগ্রেসের ভোটও ছিল।
এবার ফের শিলিগুড়ি পুরসভার নির্বাচনে (Siliguri Corporation Election) জোট মডেলেই যেতে চাইছে বাম ও কংগ্রেস। দুই পক্ষেরই জেলা নেতৃত্ব পাকাতে তৎপরতা শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই একপ্রস্ত বৈঠক সেরে নিয়েছেন সিপিএম ও কংগ্রেসের জেলা নেতারা। সেখানে শিলিগুড়ির ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে কোন পক্ষ কোন আসনে লড়বে, সেই আলোচনা অবশ্য এখনও শুরু হয়নি। জোটের এই ঘোঁট তৈরির বৈঠকে ছিলেন সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য, জীবেশ সরকার।
এরই মাঝে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Budhyadev Bhattachriya) অনুরোধের ফের ভোটের ময়দানে নামতে চলেছেন শিলিগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য (Ashok Bhattacjariya)। তিনি শিলিগুড়ির ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ফের সিপিএমের প্রার্থী। বলা যায়, বাম বা জোটের মেয়র পদপ্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য। শুধু অশোকবাবু নয়, ইতিমধ্যেই শিলিগুড়ি পুররসভার জন্য আংশিকভাবে প্রার্থীপদ ঘোষণা করেছে বামেরা। এখনও যেহেতু কংগ্রেসের সঙ্গে পুরোপুরি সমঝোতার জায়গায় আসা যায় নি, তাই বেশ কয়েকটি আসন কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে রাখা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত জোট না হলে দ্বিতীয় পর্যায়ে ওই ওয়ার্ডগুলিতে প্রার্থী দেবে বামেরা। তবে জোট হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৫ সালের শেষ পুরভোটে শিলিগুড়িতে প্রাক্-নির্বাচনী আসন সমঝোতা হয়নি। ভোটের দিন জোট পাকিয়ে একসঙ্গে ময়দানে নেমেছিল বাম-কংগ্রেস। ভোটের পরে বাম ও কংগ্রেস মিলিত ভাবেই শিলিগুড়ি বোর্ড গড়েছিল, মেয়র হয়েছিলেন অশোক ভট্টাচার্য। এ বার সেখানে বিজেপির উত্থান হয়েছে। এবার পুরভোটে বিজেপির মুখ শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা অশোক ভট্টাচার্যের একদা ছায়াসঙ্গী শঙ্কর ঘোষ। তাই তৃণমূল ও বিজেপির মোকাবিলায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চাইছেন তথা সিপিএম। শিলিগুড়িতে এই জোটের ফসল কি আদৌ তোলা যাবে, নাকি একুশের ভোটের মত মুখ থুবড়ে পড়বে বাম-কংগ্রেস, তা অবশ্য সময় বলবে!