নাগরিক পরিষেবাকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিতে ঐতিহ্যবাহী কলকাতা পুরসভার (KMC) ইতিহাসে “টক টু মেয়র” (Talk to Mayor) চালুর মাধ্যমে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তিনি পুরসভার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়ম করে সরাসরি ফোনালাপে শহরবাসীর অভাব-অভিযোগ শুনে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন। যেখানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উপকৃত হয়েছেন কলকাতার হাজার হাজার নাগরিক। দ্বিতীয়বার মেয়র হওয়ার পরও সেই ধারা বজায় রেখেছেন ফিরহাদ।

তারই অঙ্গ হিসাবে আজ, শনিবার “টক টু মেয়র” অনুষ্ঠানে বসেছিলেন ফিরহাদ হাকিম। আর সেখানেই বিপত্তি। দু‘বার ফোনেও সমস্যা মেটেনি, আধিকারিকদের এমন উদাসীন ভূমিকায় লাইভ অনুষ্ঠানেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এভাবে চলতে থাকলে মেয়র পদ ছাড়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

ঠিক কী ঘটেছিল?

এদিন, টক-টু-মেয়র অনুষ্ঠানে উত্তর কলকাতার বিটি রোডের বাসিন্দা জনৈক দিব্যেন্দুবাবু ফোন করে ফিরহাদ হাকিমকে নিজেদের সমস্যা জানান। লাইভ অনুষ্ঠানে সরাসরি তাঁর অভিযোগ, “গত বছর দু’বার ফোন করেছিলাম এই সমস্যার জন্য। সাউথ সিটি রোড থেকে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর নিকাশি নালা আটকে রয়েছে ৷ ফলে আমাদের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে জল বেরোচ্ছে না । কিন্তু এখনও এই সমস্যার সমাধান হয়নি ৷ সিঁথির মোড় থেকে বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি পর্যন্ত গোটা নিকাশি নালা বুজে রয়েছে । মশা মাছির উপদ্রব হচ্ছে ।”


দিব্যেন্দুবাবুর এমন অভিযোগের পরই সাময়িক অস্বস্তিতে পড়ে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এরপর নিজেকে সামলে নিয়ে তৃতীয় বারের জন্য একই অভিযোগ আসায় উপস্থিত আধিকারিকদের উপর বেজায় চটে যান ফিরহাদ হাকিম ।অভিযোগকারীকে কিছু সময় ফোন ধরে রাখার অনুরোধ করেই ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিজি পিকে দুয়াকে মেয়র বলেন, “এক নম্বর বরো কী করছে? এটা ছোটখাটো ব্যাপার । বরো দেখে নেবে, তারপর জানাবে সুয়ারেজ এবং ড্রেনেজ ডিপার্টমেন্টকে । দুয়া সাহেব আপনি গোটা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে আমাকে রিপোর্ট দিন । সব জায়গায় বলছে পলি তোলার কাজ হচ্ছে, কিন্তু কোথাও কিছু হচ্ছে না । ”

লাইভ অনুষ্ঠানেই নিজের আপ্তসহায়ককেও মেয়র বলেন, “এটা তুমি একা পারবে না একটা দফতর তৈরি করো। এটা আমার জন্য খুব অসম্মানজনক, আমাকে ফোন করার পরও কর্পোরেশনে কাজ হল না । আমি কাজ করার জন্য এই পদে আছি, কাজ না হলে আমায় চেয়ার ছাড়তে হবে ৷ তুমি এইরকম ভাবে ক্যাজুয়ালি বিষয়টাকে নিতে পার না । তুমি একজন মেয়রের সঙ্গে কথা বলছো। বলে দিলাম আর হয়ে গেল এটা হতে পারে না । কাজ করতে হবে এবং নিয়মিত নজর রাখতে হবে । সুয়ারেজ অ্যান্ড ড্রেনেজ না করলে তার ডিজিকে পাল্টে দিতে হবে । বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে ৷ আমার কাছে অভিযোগ আসার পরেও যদি কাজ না হয় তাহলে আমায় পদ ছাড়তে হবে ৷’’

আরও পড়ুন- ৯৩ নট আউট! ভোটে হারার রেকর্ড গড়লেন এই ব্যক্তি, এবার লক্ষ্য সেঞ্চুরি!

এমন কথোপকথনের মধ্যেও ফোনে ছিলেন দিব্যেন্দুবাবু। তাঁকে আশ্বাস দিয়ে মেয়র জানান, সোম-মঙ্গলবারের মধ্যে বিষয়টি দেখে নিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
