বিজেপিতে গৃহযুদ্ধ, সাসপেন্ড হতেই বোমা ফাটালেন রীতেশ

বিজেপিতে গৃহযুদ্ধ। শো’কজ করা দুই নেতার জবাবের অপেক্ষা না করেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করা হলো রীতেশ তিওয়ারি ও জয়প্রকাশ মজুমদারকে। শো’কজ হাতে পেয়েই বিস্ফোরক রীতেশ বলেছেন, যারা এসব করছে তারা দলটাকে বেচে দেবে। এরা না মানে দলীয় শৃঙ্খলা, না জানে চিঠি লিখতে। এসব তৎকাল নেতাদের কাছে এর চেয়ে বেশি আশা করা যায় না। অন্যদিকে শো’কজের খবর শুনেই ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, দল ভেঙে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈর করল নেতারাই। ফল ভোগ করতে হবে রাজ্য বিজেপিকে। কতো পোস্টার ওরা ছিঁড়তে পারে দেখা যাবে।

নেতাজির জন্মদিনেই শো’কজের চিঠি ধরানো হয় রীতেশ ও জয়প্রকাশকে। চিঠিতে কতদিনের মধ্যে দুই নেতাকে জবাব দিতে হবে তা জানানো হয়নি। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পেরতেই দু’জনকে সাসপেনশনের চিঠি ধরানো হয়। বিস্ফোরক রীতেশ কটাক্ষ করে বলেন, এটা ভার্চুয়াল চক্রবর্তী (অমিতাভ) আর ট্যুইট মালব্যর (অমিত) কীর্তি। এই সব নেতারা হল তৎকাল বিজেপি। যারা ২০১৯-এ রাজ্য বিজেপি সাফল্য পাওয়ার পর দলে ভিড়েছে। এরা মিছিল বা মিটিং ডাকলে বাড়ির তলায় দশটা লোকও জড়ো হয় না। এদের জন্যই তথাগত রায় কামিনী-কাঞ্চনের অভিযোগ তুলেছিলেন। বাংলা এবং বাঙালির রাজনৈতিক লড়াইয়ের সঙ্গে এদের কোনও যাগোযোগ নেই।

সাসপেনশন যে অনৈতিক এবং অযৌক্তিকভাবে করা হয়েছে, তা তথ্য দিয়ে বলেছেন রীতেশ। কী যুক্তি?

১) চিঠিতে জবাব দেওয়ার জন্য কোনও নির্দিষ্ট সময় ছিল না। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পেরতে না পেরতেই সাসপেন্ড করা হল। কোন যুক্তিতে? আসলে আগে থেকেই ঠিক ছিল সাসপেনশনের চিঠি ধরানো হবে।

২) ২৩ তারিখ ৩.৫০ মিনিটে শো’কজের চিঠি দেওয়া হয়। তার ২৪ ঘণ্টা আগেই খবরটা খাওয়ানো হয় সংবাদমাধ্যমে। তাহলে দল বিরোধী কারা?

৩) রীতেশ বলেন, চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে আমি নাকি সংবাদমাধ্যমে দল বিরোধী মন্তব্য করেছি। আমার চ্যালেঞ্জ দলীয় নেতারা সেই দল বিরোধী মন্তব্যের বাইট প্রকাশ্যে আনুন। পারবেন না। কারণ, আমি বলিনি।

৪) শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি নাকি মিটিং করে শো’কজের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ১৩ জানুয়ারি এই শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি ভেঙে দিয়েছিলেন। তাহলে কারা সিদ্ধান্ত নিল? ভার্চুয়াল আর ট্যুইট?

৫) সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। নতুন ও কম বয়সী সভাপতি। কিন্তু ওকে বলির বখরা করেছে ভার্চুয়াল আর ট্যুইট। ক্ষমতাসীনদের নব্য বিজেপি আখ্যা দিয়ে রীতেশ এদিন ২০১৯-এর পরে আসা নেতাদের দিকে আঙুল তুলেছেন। ফলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধেও যে তাঁর অভিযোগ রয়েছে তা পরিস্কার হয়ে গিয়েছে।

২৩ জানুয়ারি পরের দিনেই রাজ্য বিজেপিতে ডামাডোল চূড়ান্ত পর্যায়ে। ভোটের সময় দলে এসেছিলেন দুই অভিনেতা, বনি সেনগুপ্ত ও সোহেল দত্ত। দু’জনেই দল ছেড়ে বলেছেন, এরা মিথ্যার ঝুলি সাজিয়েছিল। একটা প্রতিশ্রুতিও রাখেনি।

সোমবার সকালেই শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করতে আসেন হরিনঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার। নতুন দল গড়ার ব্যাপারে দু’জনের মধ্যে কথা হয় বলে জানা গিয়েছে। শান্তনুর দল ক্রমশ ভারি হচ্ছে। অন্যদিকে দলে তাঁর অনেক সমর্থক আছে এটা প্রমাণ করতে অমিতাভ চক্রবর্তী দলীয় কিছু কর্মীকে দিয়ে পোস্টার লাগান মুরলীধর সেন লেনের আশপাশে। যা দেখে বিজেপি কর্মীরা বলছেন, আসলে ভার্চুয়াল চক্রবর্তী যে কাজটি করিয়েছেন, সেটি নিজেই প্রমাণ করলেন। রাজ্যে দলটাকে এরাই তুলে দেবে।

আরও পড়ুন- AITC Goa: গোয়ায় ১২ জনের ইস্তেহার কমিটি প্রকাশ করল তৃণমূল

Previous articleAITC Goa: গোয়ায় ১২ জনের ইস্তেহার কমিটি প্রকাশ করল তৃণমূল
Next articlePrashant Kishor: ২০২৪-এ কি বিজেপি ক্ষমতায় থাকবে? সম্ভাবনা উড়িয়ে কী বললেন পিকে?