আনিস-মৃত্যুর প্রতিবাদে মিছিল: ব্যস্ত সময়ে মহানগরে যানজট, দুর্ভোগে পথচারীরা

ছাত্র নেতার রহস্যমৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ বিশৃংখল পরিস্থিতির সৃষ্টি পড়ুয়াদের দুর্ভোগে নাকাল পথচারীরা।

আনিস-মৃত্যুর প্রতিবাদে কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে দফায় দফায় অবরোধ-মিছিল-বিক্ষোভ (Agitation)। যার জেরে কাজের দিনে ব্যস্ত সময়ে নাকাল শহরবাসী। আনিস খানের মৃত্যুরহস্যকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ কলকাতার রাজপথে। ছাত্রনেতার মৃত্যুর প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Alia University) ছাত্রছাত্রীরা। পরে সেই বিক্ষোভে যোগ দেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) পড়ুয়ারাও।

মহাকরণ অভিযানে ডাক দিয়ে মহানগরীর রাজপথে মিছিল করেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। মল্লিক বাজার, পার্ক সার্কাস হয়ে মৌলালিতে পৌঁছয় মিছিল। সেখান থেকে এস এন ব্যানার্জি হয়ে ডোরিনা ক্রসিংয়ের দিকে মিছিলের অভিমুখ যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেদিকে না গিয়ে হঠাৎ করেই শিয়ালদহের দিকে হাঁটা শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। রাস্তায় তখন প্রবল যানজট। দিনের ব্যস্ত সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মৌলালি মোড় থেকে শিয়ালদহ কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়। ওই অঞ্চলে রয়েছে একাধিক হাসপাতাল। এই বিক্ষোভের জেরে আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্স। তবে, বিক্ষোভকারীরা বেশকিছু আম্বুল্যান্সকে (Ambulance) যেতে জায়গা করে দেন। কিন্তু আটকে যায় বাস-গাড়ি-সহ অন্যান্য যান। প্রবল দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। তবে, পুরো যাত্রাপথে পুলিশ কখনোই সেভাবে বাধা দেয়নি মিছিলকে। শিয়ালদহ ফ্লাইওভার দিয়ে মিছিল যায় কলেজস্ট্রিটের দিকে। কলেজস্ট্রিট (College Street) মোড়ে সেই সময়ে পৌঁছে যান উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা। প্রস্তুত রাখা হয় জলকামান। রাস্তার দু’পাশে এবং সামনে ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। কারণ, পুলিশ হাতে হাত ধরে বিক্ষোভকারীদের আটকানোর চেষ্টা করলেও পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে এগিয়ে যান পড়ুয়ারা। ফলে, ব্যারিকেড ছাড়া অন্য কোনও উপায় ছিল না পুলিশের কাছে। এরপর কলেজস্ট্রিটে বিক্ষোভকারীরা বসে পড়েন। বেশ খানিকক্ষণ তাঁদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিআধিকারা। তবে, সে চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুন: আনিসের বাড়িতে SIT, তদন্তকারীদের সহযোগিতা করলেন পরিবারের সদস্যরা

একই সঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Javadpur University) ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেয় এসএফআই (SFI)। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেট, সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও অরবিন্দ ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

বিকেলে আনিস খানের মৃত্যুর প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ (Agitation) দেখান প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। ইউনিভার্সিটির গেটের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।

যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay) নিজেই সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন, ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন বিশেষ তদন্তকারী দলের আধিকারিকরা। আনিস খানের বাড়িতে গিয়ে দিনভর তদন্ত করেন সিটের সদস্যরা। সেখানে এভাবে জনজীবন স্তব্ধ করে মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে বিক্ষোভের যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না কেউই। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, তদন্তকারীদের কাজ করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করতে কিছুটা সময় দিতেই হবে। তার আগেই এই ধরনের বিক্ষোভ কার্যত অর্থহীন মনে করা হচ্ছে।

 

Previous articleএকমাত্র সন্তানকে চিরতরে হারিয়েছেন,  আত্মঘাতী হতাশাগ্রস্ত দম্পতি
Next articleসংসদে ভালো পারফরম্যান্সের জন্য ‘সাংসদ রত্ন’ সম্মান পাচ্ছেন সৌগত রায়