আনিস : আমতা থানার সামনে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা, এলাকায় উত্তেজনা

আনিস খান মৃত্যু নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আমতা থানার সামনে তুলকালাম পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বাম ও কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন। আমতা থানার ওসিকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে এই দাবিতে এদিন দিনভর বিক্ষোভ ও অবস্থান চলে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে ।  দুই পুলিশ কর্মীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার আদালতে পেশ করা হয়েছে । অর্থাৎ আইনি পথেই আনিস খান মৃত্যুর বিচার হচ্ছে। তা সত্ত্বেও বাম এবং কংগ্রেসের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভের ফলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা । শুধু তাই নয় সিটের তদন্ত প্রক্রিয়াও এই লাগাতার অশান্তি সৃষ্টির জেরে বারবার ব্যাহত হচ্ছে ।

এদিকে এদিনই আমতায় আনিসের বাড়ির সামনে থেকে একটি শোক মিছিল বের হয়। মিছিলে ছিলেন আনিসের বাবা- দাদা সহ এলাকার বহু মানুষ । এই মিছিল এসে শেষ হয় আমতা থানার সামনে। থানার সামনে এই মিছিল এসে পৌঁছতেই বাম – কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা আমতা থানার উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে। থানা আক্রমণের চেষ্টা করে। ব্যারিকেড ভেঙ্গে গোটা এলাকায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। শান্তি মিছিল -এর তরফে ৬ জন প্রতিনিধিকে থানার ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। আমতা থানার পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাইরে বেরিয়ে এসে আনিস খানের বাবা সালেম খান বলেন , তাঁদের দাবি অবিলম্বে আমতা থানার ওসিকে গ্রেফতার করতে হবে । প্রয়োজনে তিনি উচ্চতর আদালতে যাওয়ার কথাও জানিয়েছেন।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার পার্কসার্কাস  থেকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা একটি মিছিল বের করে। গন্তব্য ছিল ডন বসকো স্কুল পর্যন্ত । কিন্তু পার্ক সার্কাস থেকে একটু এগোতেই মিছিল আটকে দেয় পুলিশ।

 

বৃহস্পতিবার দিনভর বাম ও কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ অবস্থান কর্মসূচির জেরে প্রবল বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় আমতা থানা সংলগ্ন এলাকায়। সংলগ্ন বহু রাস্তাই  অবরুদ্ধ হয়ে যায়। দফায় দফায় ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। আর বাম এবং কংগ্রেসের এই বিক্ষোভ কর্মসূচির জেরে যারপরনাই ব্যাহত হচ্ছে সিটের তদন্তের কাজ।  ফলে মুখ্যমন্ত্রী এই তদন্তের রিপোর্ট পেশ করার জন্য সিটকে যে ১৫ দিনের সময়সীমা দিয়েছিলেন সেই নির্দেশিকা মেনে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে অফিসারদের । অথচ রাজ্য প্রশাসন এবং রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে বার বার তদন্ত দ্রুত শেষ করার জন্য আনিসের পরিবারের সাহায্য ও সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে। বুধবার রাজ্য পুলিশের ডিজি নিজেই সাংবাদিক সম্মেলন করে নিজের পরিবারের কাছে সহযোগিতা দাবি করেছিলেন । বৃহস্পতিবার সকালেও রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে টুইট করে তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন করতে চেয়ে নিহত ছাত্র নেতার পরিবারের কাছে সহযোগিতার আবেদন জানানো হয়েছে।

তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বৃহস্পতিবার বলেন আনিস খানের মৃত্যু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক । এই হত্যার পেছনে যে বা যারা জড়িত তাদের উপযুক্ত শাস্তি হোক। কঠিন শাস্তি হোক। আইন পুরোপুরি আইনের পথেই চলুক। কিন্তু বিজেপি – সিপিএমের এই মৃত্যু নিয়ে ঘৃণ্য রাজনীতি বন্ধ হোক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করে দিয়েছে সিট। বিচার পুরোপুরি আইনি পথেই এগোচ্ছে। তারপরেও এই সস্তা রাজনীতির কোনো যুক্তি হয় না । অকারণ উত্তেজনা সৃষ্টি করে পরিস্থিতি জটিল করে তোলার কোনও মানে হয়না।

 

 

Previous articleসিটেই আস্থা: জেলা জজের পর্যবেক্ষণে আনিসের দেহ ফের ময়নাতদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
Next articleইউক্রেন – রাশিয়ার যুদ্ধে মৃত ৫০ রুশ সেনা সহ ৪০ ইউক্রেন সেনা