Sunday, May 4, 2025

কেন্দ্রের উদাসীনতায় অবশেষে নিলামে উঠছে দেশের প্রথম টায়ার কারখানা ডানলপ

Date:

Share post:

অবশেষে আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে। ‘হিমঘরে’ যাওয়া ঐতিহ্যবাহী ডানলপ কারখানার নিলাম হতে চলেছে। অসমর্থিত সূত্রের খবর, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী সপ্তাহেই অনলাইনে নিলামে উঠবে হুগলির সাহাগঞ্জ এবং তামিলনাড়ুর অম্বাত্তুরে ডানলপ কারখানার দুটি শাখা। এবং সেইসঙ্গেই দেশের প্রথম টায়ার কারখানা ডানলপ চিরতরে ইতিহাসে চলে যাবে। ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কারখানার ‘ভ্যালুয়েশন’-এর কাজ শেষ হয়েছে। জানা গিয়েছে, ডানলপের সাহাগঞ্জ শাখার থেকে যাওয়া স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকা। আর অম্বাত্তুর শাখায় প্রায় চারশো কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি রয়েছে। দু’টি কারখানার ‘প্লান্ট-মেশিনারি’ অর্থাৎ কারখানার যন্ত্র, আচ্ছাদন বা শেড ইত্যাদি এই দফায় নিলামে উঠবে। সাহাগঞ্জ শাখায় এই সম্পত্তির মূল্য প্রায় ১৩ কোটি এবং অম্বাত্তুরের তা প্রায় ২ কোটি টাকা। এই অর্থমূল্য থেকেই নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হবে।

কোম্পানি, ঋণদাতা, শ্রমিক-স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ২০১২ সালেই ডানলপকে লিকুইডেশনের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়ার পরে শেষ পর্যন্ত ২০১৭ সালে আদালতের সেই লিকুইডেটরের নোটিশ ঝোলানো হয় কারখানার গেটে। অর্থাৎ, লিকুইডেটর কারখানার সম্পত্তি বিক্রি করে পাওনাদারদের টাকা মেটাবে।

কোম্পানি বিশেষজ্ঞদের একটা অংশ জানিয়েছে, ডানলপের এমন পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকারের সরাসরি কিছু করার ছিল না। যদিও রাজ্য এই ঐতিহ্যবাহী কারখানাটিকে অধিগ্রহণ করার চেষ্টা করেছিল। আইন মেনে সেই প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে পাঠাতে হয়। আবেদন খতিয়ে দেখে তাতে রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে তবে রাজ্য সরকার তা সরকারিভাবে অধিগ্রহণ করতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের কাছে সমস্ত প্রস্তাব ও আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদন না মেলায় তা সম্ভব হয়নি। এবং তারই ফল স্বরূপ অন্তিমযাত্রায় যেতে চলেছে ডানলপ কারখানা।

প্রসঙ্গত, বাম জমানায় যখন একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়েছে, ঠিক তখনই ডানলপ নিয়েও জটিলতা শুরু হয়। তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কারখানা সচল করা নিয়ে আন্দোলনও করেছিলেন। পরে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকদের ১০ হাজার টাকা করে ভাতাও দেওয়াও চালু করেছিল তাঁর সরকার। এখনও কারখানার শতাধিক কর্মীকে মাসে ১০ হাজার টাকা করে ভাতা দেয় রাজ্য। ২০১৬ সালে ডানলপকে অধিগ্রহণ করার জন্য বিধানসভায় বিল পাশ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল, বিধানসভায় বিল পাশ করানোর পাশাপাশি কারখানাকে অধিগ্রহণ করতে চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠিও দিয়েছিল রাজ্য। কিন্তু কেন্দ্র নিজেও কারখানা চালুর উদ্যোগ নেয়নি এবং রাজ্যকেও তা করতে দেয়নি।

আরও পড়ুন:Russia-eucraine -Nato : ইউক্রেনের আকাশসীমা বন্ধের দাবি জেলেনস্কির, আপত্তি ন্যাটোর

 

spot_img
spot_img

Related articles

পাক রেঞ্জারের বদলে পূর্ণম কুমার! কতটা আশার আলো দেখছেন স্ত্রী

পাকিস্তানের সেনার হাতে বন্দি রিষড়ার বিএসএফ (BSF) জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ। স্বামীকে ফিরিয়ে আনতে ফিরোজপুর সীমান্ত পর্যন্ত গিয়েছিলেন...

অবতরনের আগেই হামলা ইজরায়েলের বিমান বন্দরে! ঘোরানো হল এয়ার ইন্ডিয়ার মুখ

ইজরায়েলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রবিবার হাউথি বিদ্রোহীদের মিসাইল হামলার জেরে বড়সড় বিপত্তির মুখে পড়ল এয়ার ইন্ডিয়ার একটি...

অন্যায়ভাবে বরখাস্ত! প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন CRPF মুনিরের

সিআরপিএফ জওয়ানকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে যে তথ্য সিআরপিএফ কর্তৃপক্ষ দিয়েছেন, তা সবই মিথ্যা। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি সামনে...

শেষ বলে রুদ্ধশ্বাস জয় নাইটদের, লিগ টেবিলে উঠে এল ছয় নম্বরে

রুদ্ধ্বশ্বাস ম্যাচ। বড় রান করেও সহজ জয় পেল না কলকাতা নাইট রাইডার্স(KKR)। খেলা গড়াল শেষ ওভার পর্যন্ত। সেখানেই...