Saturday, August 23, 2025

Abhishek Chatterjee : অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলার চলচ্চিত্র জগৎ

Date:

প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। মাত্র ৫৭ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল তাঁর। একটি রিয়েলিটি শোয়ের শুটিং চলাকালীন সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। অভিষেকের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলার চলচ্চিত্র জগৎ।

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় : মৃত্যু তো অনিবার্য। সকলের জীবনেই একটা সময়ে তার আগমণ ঘটবে। কিন্তু একটা বয়স আছে তো? মিঠু, মাত্র  সাতান্ন হয়েছিল তোর।  এটা কি পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার সময়? তোর বিয়েতে বরকর্তা হয়ে গিয়েছিলাম আমি। সেই দিনটার কথাই  আজ বড্ড মনে পড়ছে। তোর সঙ্গে যা কিছু ভাল স্মৃতি সেটাই রেখে দিতে চাই। এই মুহূর্তে এর বেশি  আমি আর কিছু বলতে পারছি না। আমি কথা হারিয়ে ফেলেছি।

 

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত : মিঠু নেই। খুব সকালেই খবরটা পেয়েছি। কিন্তু এমন সংবাদ পাওয়ার চেয়ে বোধহয় না পাওয়াই ভাল।  সেই কবে থেকে আমাদের সম্পর্ক। সেই মিঠু কী করে এ ভাবে চলে যেতে পারে? প্রসেনজিতের পরে সবচেয়ে বেশি ওর সঙ্গে কাজ করেছি। আমাদের জুটি ছিল সুপার ডুপার হিট। মিঠু তখন অসম্ভব সুপুরুষ ছিল। ইদানীং টেলিভিশনে ওর কাজ দেখে বুঝতাম ও শরীরের যত্ন নিচ্ছে না। ঘুম-খাওয়া-শরীরচর্চা কিছুই ঠিক সময়ে করছে না। বরাবরের জেদি স্বাভাবের। নিজে যা ভাল বুঝত তাই করত। ওর মনে হয়তো অনেক ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। অনেক না পাওয়ার ক্ষোভ। আর তো কথা হবে না মিঠুর সঙ্গে! আমাদের ভুল বোঝাটা কী রয়ে গেল মিঠু? ও যে সত্যিটা আর বুঝল না। জানলও না।

দেবশ্রী রায় : মিঠু নেই।  খবরটা শোনার পর থেকেই মনটা খারাপ হয়ে আছে।  বুকের ভিতরটা  চাপ ধরে আছে। মাত্র ৫৭! মিঠু! এটা কী তোর চলে যাওয়ার বয়স? কেন চলে গেলি? প্রথমে তাপস, তারপর তুই। একে একে সবাই আমায় ছেড়ে চলে যাচ্ছিস। কেন রে? মিঠু দেখতে তো খুব সুন্দর ছিল। যখন ও প্রথম ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিল মেয়েরা পাগল হয়ে যেত। মিঠু কোথাও গেলেই মেয়েরা ওকে একবার ছুয়ে দেখার জন্য পাগল হয়ে যেত। আর আমরা যখনই সুযোগ পেতাম এসব নিয়ে মিঠুর পিছনে লাগতাম। এখন আর কী হবে এসব বলে! মিঠু নেই। এটাই সবচেয়ে বড় সত্যি।

 

প্রভাত রায় :মনটা খুব খারাপ হয়ে আছে। কিছু ভাবতেই পারছি না। ভাল লাগছে না কিছু। কী যে বলব। যাকে বলে জাত অভিনেতা, তেমনটাই ছিল অভিষেক। অসম্ভব প্রাণবন্ত,  স্বতঃস্ফূর্ত । কিন্তু ওর উপযুক্ত চরিত্র পেল কোথায়? আগাগোড়াই নিজের কাজ নিয়ে খুব খুশি বা সন্তুষ্ট ছিল না ও। কিন্তু মুখ ফুটে কাজ চাইতে পারেনি কোনোদিন। সেইজন্যই বোধহয় অনেকেই ওর কথা ভাবারও ফুরসত পাননি।

 

পল্লবী চট্টোপাধ্যায়  : মিঠু নেই। নেই মানে কোথাওই আর নেই। মিঠুর মতো প্রাণবন্ত, হুল্লোড়ে, অড্ডাবাজ,  বন্ধুবৎসল খুব একটা হয় না। এমন একটা মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব হবে না  তাও আবার হয় নাকী? পর্দার বাইরের এই গভীর বন্ধুত্বের ছায়া পড়েছিল কাজেও। আমাদের দুজনকে জুটি করে অনেক ছবি হয়েছে। আমাদের বন্ধুত্ব এতটাই গভীর ছিল যে দর্শক মনে করেছিলেন আমরা স্বামী-স্ত্রী। কতবার যে আমাদের বিয়ে হয়েছে কী বলব।

 

মধুমিতা সরকার  : ‘কুসুমদোলা’ ধারাবাহিকে আমি অভিষেকদার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমি তখন একদম নতুন। কিন্তু অভিষেকদা এক মুহূর্তের জন্যেও বুঝতে দেননি যে আমি নতুন। আমার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা তো দূর, সারাক্ষণ সেটে  আড্ডা-গল্প করে জমিয়ে রাখতেন। আর আমাকেও বলতেন এখানে এসে বস।  কীভাবে শটগুলো সুন্দর হবে, প্রাণবন্ত হবে তা নিয়ে সারাক্ষণ টিপস দিতেন। খুব সাহায্য করেছেন আমায়। অর আজ সেই তিনিই নেই। ভাবতেও পারছি না।

শতাব্দী রায় : ভাবতে পারছি না। কিছু বলার মতো অবস্থায় নেই আমি। অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিল মিঠু। কিন্তু হাসপাতালে গেল না কেন? সবসময় জেদ ওর। এত জেদ কীসের? জেদ করে জীবনে কী পেল? আর কিছু ভাল লাগছে না।

 

ইন্দ্রাণী হালদার : মিঠু আমার দুঃখের সাথী ছিল। ও বলত, সুখের দিনে দেখবি সবাই পাশেপাশে ঘুরবে। দুঃখের দিনে তাদের কাউকেই খুঁজে পাবি না।  সত্যিই তাই। মিঠু যে আমার জীবনে কী ছিল তা আমি বলে বোঝাতে পারব না। একদম শরীরচর্চা করত না। নিজের যত্ন করত না। বড্ড বেহিসাবি জীবন কাটাতে শুরু করেছিল। বারণ করলেও শুনত না।

 

 

Related articles

বৃষ্টি ভিজবে ডুরান্ড ফাইনাল, কলকাতায় হলুদ সতর্কতা!

পুজো কেনাকাটার উৎসাহ থেকে ডুরান্ড ফাইনালের (Durand Cup Final) আবেগকে দিব্যি ড্রিবল করে দিনভর গোল করতে তৈরি বৃষ্টি।...

নিউ গড়িয়ায় বৃদ্ধা-খুনে নয়া মোড়, গ্রেফতার আয়া ও তার পুরুষ সঙ্গী

রাতের বেলায় পুরুষ সঙ্গীকে নিয়ে আয়া এসেছিলেন নিউ গড়িয়ায়(New Garia) খুন হওয়া বৃদ্ধার বাড়িতে। কেন? ওই আয়া ঢুকেছিলেন...

উত্তরাখণ্ডে ফের মেঘ ভাঙা বৃষ্টি: বিধ্বস্ত থারালিতে নিখোঁজ অন্তত ৩

ফের বড়সড় বিপর্যয়ের মুখে উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) চামোলি জেলা। মধ্যরাতে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে থারালি এলাকায় হড়পা বানে (flash...

ডুরান্ড ফাইনালে ডায়মন্ডহারবারকে নিয়ে চড়তে পারদ

ডুরান্ড কাপের ফাইনালে মুখোমুখি ডায়মন্ডহারবার এফসি(DHFC) ও নর্থইস্ট ইউনাইটেড(North East United)। আর মাত্র কিছুক্ষণের অপেক্ষা। এরপরই যুবভারতী স্টেডিয়ামে...
Exit mobile version