রাত পোহালেই রাজ্যের দুই হাইভোল্টেজ কেন্দ্রের উপনির্বাচনের গণনা। দুপুরের মধ্যেই ফলাফল জানা যাবে।

আগামিকাল, শনিবার বালিগঞ্জ বিধানসভা এবং আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের ফলাফল। ডেভিড হেয়ার কলেজ ক্যাম্পাসে বালিগঞ্জ এবং আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সকাল ৮টা থেকে গণনা শুরু। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর প্রথমে পোস্টাল ব্যালট গণনা হবে, তারপর ইভিএম খোলা হবে।
গণনাকে কেন্দ্র করে কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এই দুই কেন্দ্রের কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে স্ট্রংরুম। ভোটের পর থেকে পাহাড়ায় রয়েছে এক প্ল্যাটুন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে তাঁরা মোট ৮জন করে পাহাড় দিচ্ছেন তিনটি শিফটে। কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। তিনটি স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরাতেও চলছে নজরদারি। গণনার আগেই কেন্দ্রের ২০০ মিটারের বাইরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

তিনটি স্তরে যে নিরাপত্তা রয়েছে তার মধ্যে প্রথম স্তরে কেন্দ্রীয় বাহিনী ওই ব্যক্তিকে সার্চ করবেন এবং তাঁর মোবাইল ফোন জমা রাখবেন। দ্বিতীয় স্তরে তাঁকে নিয়ে যাবেন দুজন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান এবং সবশেষে তিনি গিয়ে পৌঁছাতে পারবেন যেখানে রিটার্নিং অফিসার দরজার মধ্যে তালা দিয়ে সিল করে দিয়েছেন। সেখানে একটি খাতা থাকবে, সেই খাতায় ওই ব্যক্তিকে তাঁর মতামত অবশ্যই লিখতে হবে।

ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তার প্রথম বলয় গণনা কেন্দ্রের মূল ফটকের বাইরে। সেখানে রাজ্য পুলিশের কমব্যাট, কমাণ্ডো বাহিনী মোতায়েন থাকবে। দ্বিতীয় বলয়ে রাজ্য সরকারের তথ্য সংস্কৃতি দফতরের কর্মীরা থাকবেন, থাকবেন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা এবং রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় থাকবেন। এর পাশাপাশি যারা ভিতরে প্রবেশ করবেন তাঁদের কাছে কেবলমাত্র সাদা কাগজ ও পেন ছাড়া কিছুই রাখা যাবে না।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিয়েছে মুখে মাস্ক পড়েই ভিতরে প্রবেশ করতে হবে, থাকবে স্যানিটাইজারও। সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে অবসার্ভার ও রিটার্নিং অফিসার আটটার সময় স্ট্রংরুমে পৌঁছাবেন এবং সকলের উপস্থিতিতে স্ট্রংরুম খোলা হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনে।

অন্যদিকে, উপনির্বাচনের ফলাফলের আগে অনেকটাই অ্যাডভান্টেজ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সমীক্ষা অনুযায়ী, এই দুই কেন্দ্রেই এগিয়ে আছেন ঘাসফুল শিবিরের প্রার্থীরা। অর্থাৎ ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন এবং তার পরবর্তী যতগুলি নির্বাচন হয়েছে সেখানে যে ফলাফল প্রতিফলিত হয়েছে, আগামীকাল বালিগঞ্জ ও আসানসোল সেই ফলাফলই দেখা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বালিগঞ্জে বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সিপিআইএমের সায়রা শাহ হালিম এবং বিজেপির কেয়া ঘোষের থেকে অনেকটাই এগিয়ে আছেন বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে। একইসঙ্গে আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনেও এই প্রথমবার তৃণমূলের জয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিললেও শেষ পর্যন্ত বিজেপির অগ্নিমিত্রা পল এবং সিপিআইএমের পার্থ মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে বাজিমাৎ করতে পারেন তৃণমূলের শত্রুঘ্ন সিনহা। তবে শেষ পর্যন্ত এই দুই কেন্দ্রের ফলাফল কী হয়, তা জানার জন্য আগামিকাল দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।

আরও পড়ুন- Prosenjit- Ditipriya: প্রসেনজিৎ দিতিপ্রিয়ার সম্পর্কের ঝলক মিলল পয়লা বৈশাখেই
