“মিডিয়া নয়, আমি বিজেপি রাজ্য সভাপতি”, ড্যামেজ কন্ট্রোল বৈঠক থেকে কড়া বার্তা সুকান্তর

গোহারা হারের কারণ বিশ্লষণ ও দলের অন্দরে ক্রমশ বাড়তে থাকা ক্ষোভ-বিক্ষোভ নিয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপি দফতরে সাংগঠনিক বৈঠক করেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার

সদ্যসমাপ্ত রাজ্যের দুই উপনির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি অব্যাহত। খোদ কলকাতার বুকে বালিগঞ্জ বিধানসভায় দলীয় প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত। আর আসানসোলে রেকর্ড মার্জিনে হার। সবমিলিয়ে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে গোষ্ঠীকোন্দল চরমে। সৌমিত্র খাঁ, অনুপম হাজরা, গৌরী শংকর ঘোষ, জিতেন্দ্র তিওয়ারি থেকে তথাগত রায়, রাজ্য নেতৃত্বের অপদর্থতায় নিদর্শন তুলে ধরে তুলোধনা করছেন। দিলীপ ঘোষ আবার সরাসরি বিষোদগার না করলেও ইস্যুগুলিকে ট্রাকটিকালি উসকে দিচ্ছেন। অর্থাৎ, লাগাতার ব্যর্থতায় মুষল পর্ব অব্যাহত গেরুয়া শিবিরে।

এরই মধ্যে গোহারা হারের কারণ বিশ্লষণ ও দলের অন্দরে ক্রমশ বাড়তে থাকা ক্ষোভ-বিক্ষোভ নিয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপি দফতরে সাংগঠনিক বৈঠক করেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দক্ষিণবঙ্গের জেলা শীর্ষ নেতৃত্ব ও রাজ্যের পদাধিকারীরা যোগ দিয়েছিলেন সুকান্তর ডাকা বৈঠকে। যদিও তাৎপর্যপূর্ণভাবে ডাক পাননি রাজ্যের দুই মহিলা সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায় ও আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল।

এদিনের বৈঠকে থেকে রাজ্য সভাপতির সুকান্ত মজুমদার কড়া বার্তা দেন নেতাদের। তাঁর কথায়, “আমাকে ক্ষোভ-বিক্ষোভ বলার জন্য সবাইকে স্বাগত। যাঁদের যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ রয়েছে, তা আমাকে বলতে হবে। মিডিয়াকে না। মিডিয়া রাজ্য সভাপতি নয়। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকলে সর্বভারতীয় সভাপতিকে জানান। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন)-কে জানান। মিডিয়া এখনও সভাপতি হয়নি। হলে জানাবেন।”

একইসঙ্গে দলের ভঙ্গুর সংগঠনকে নতুন করে চাঙ্গা করতে মঙ্গলবারের বৈঠকে একগুচ্ছ লাগাতার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, আগামী ২ মে তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের ক্ষমতায় আসা তৃণমূলের বর্ষপূর্তি। ওই দিনেই বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে, দিনটা “কালা দিবস” হিসেবে পালন করবে রাজ্য বিজেপি। ৩ মে অরন্ধন অনশন, সত্যাগ্রহ পালন করা হবে। ৪ মে থেকে ৬ মে’র মধ্যে রাজ্যে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ৭ মে শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলি কর্মসূচি করবে বিজেপি। শহিদদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সাহায্য প্রদান করা হবে। ৮ মে এবং ৯ মে ব্লক স্তরে মিছিল করা হবে। ১০ মে শহিদ পরিবারদের নিয়ে কলকাতা সত্যাগ্রহ এবং রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ। ১১ মে বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে কর্মসূচি।

একনজরে বিজেপির কর্মসূচি

২ মে: ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা’ মহামিছিল

৩ মে: বিজেপির অনশন সত্যাগ্রহ। অংশ নেবেন বিজেপির সব জনপ্রতিনিধিরা। গান্ধী মূর্তির পাদদেশ বা অন্য কোথাও একবেলা অনশন চলবে। তারপর কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ভোট পরবর্তী অশান্তিতে মৃতদের জন্য জনগণের কাছে সাহায্য ভিক্ষা করবেন তাঁরা।

৪-৬ মে: অমিত শাহের উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গে আসার সম্ভাবনা।

৭ মে: ভোট পরবর্তী অশান্তিতে মৃত ‘শহিদ’দের শ্রদ্ধাঞ্জলি। জেলার জেলায় মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবে জেলা নেতৃত্ব। পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে পোশাক।

৮-৯ মে: ব্লক স্তরে মিছিল হবে।

১০ মে: কয়েকটি ‘শহিদ’ পরিবারের সদস্যরা কলকাতা আসবেন। সত্যাগ্রহ করবেন। তারপর তাঁদের নিয়ে রাজ্যপালের কাছে যাবে বিজেপি নেতৃত্ব।

১১ মে: প্রতি জেলাস্তরে মিছিল।

আরও পড়ুন- কোটি কোটি টাকা প্রতারণার, লালবাজারের তৎপরতায় নাসিক থেকে ধৃত কিংপিন লিজা