করোনা ভাইরাস কেড়ে নিয়েছিল বাবাকে । তাকে পৃথিবীতে সম্পূর্ণ একা অসহায় করে রেখে দিয়েছিল। কাকার কাছে বড় হচ্ছিল মেয়েটি। কিন্তু বিবাহযোগ্যা কন্যাকে কাকাই বা কতদিন ধরে রাখবেন? অথচ ভাইঝিকে মনের মত করে সাজিয়ে বিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। অগত্যা এগিয়ে এলেন প্রতিবেশী মুসলিম চাচা। ধূমধাম করে পিতৃহারা হিন্দু কন্যার বিয়ে দিয়ে পিতার কর্তব্য পালন করলেন চাচা। এই অভিনব ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। যোগী- রাজ্যে যেখানে ধর্মবিদ্বেষ, বর্ণবিদ্বেষ সাম্প্রদায়িক হানাহানি প্রতিনিয়ত লেগেই আছে সেখানে এই কাকা ভাইঝি যেন এক বিরল -স্বর্ণোজ্জ্বল উদাহরণ।

উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ের বাসিন্দা হিন্দু তরুণী পূজা। বাবাকে হারানোর পর কাকা রাজেশ চৌরাশিয়ার কাছেই থাকতেন পূজা। মেয়ের বিয়ের বয়স হয়ে গিয়েছে । কাকা ভাইঝির জন্য বিয়ের বন্দোবস্ত করেছেন। গত ২২ এপ্রিল বিয়ের দিন স্থির হয়েছিল। কিন্তু একটু জাকজমক করে, সুন্দরভাবে ভাইঝির বিয়ে দেওয়ার শখ সব কাকা পূরণ করতে পারছিলেন না। কারণ কাকার আর্থিক সঙ্গতি একেবারেই ছিল না । এই দুঃখে দিন -দিন কাকা মনমরা হয়ে পড়ছিলেন।

মুসলমান প্রতিবেশী পারভেজ চাচা ও তার স্ত্রী সব কথা শোনার পর নিজেরাই পূজার বিয়ের দায়িত্ব নেন । চাচার বাড়ির উঠোনে মণ্ডপ সাজানো হয়। পারভেজের স্ত্রী পূজাকে নিজের কাছে রেখে কনের সাজে সাজিয়ে বিয়ের সব ব্যবস্থা করেন । জামাই বরণ থেকে শুরু করে অতিথি আপ্যায়ন সবই অত্যন্ত সুন্দরভাবে করে পারভেজ ও তার স্ত্রী। শুধু তাই নয় বিয়েতে নবদম্পতিকে তারা সোনার অলঙ্কারও উপহার দিয়েছেন। দিয়েছেন দামি সুন্দর পোশাকও।

আর সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে এমন একটি মন ভালো করা ঘটনা যে ভাইরাল হবে না তা কী হয় ? তাই সুদূর উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ের ‘ছোট্ট ‘ একটি ঘটনা মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেশজুড়ে বিরাট আকার ধারণ করল। সকলেই ধন্য ধন্য করতে লাগলেন।
