Monday, November 10, 2025

রাজধানী জুড়ে শুধুই এখন উচ্ছেদ পর্ব, রেহাই পেলেন না শিল্পীরাও

Date:

জাহাঙ্গিরপুরী (Jahangirpuri)  থেকে ঘটনার জল গড়াতে গড়াতে আজ এতদূর। থামছে না উচ্ছেদ পর্ব। এ যেন রামায়নের ঘটনা সামনে এসে ধরা দিচ্ছে আবারও। ৯১ বছর বয়সী ওড়িশি নৃত্য শিল্পী গুরু মায়াধর রাউত (Mayadhar Raut) , তাঁর পদ্মশ্রী সার্টিফিকেট(Padmashree),অন্য সব আসবাবপত্রের সঙ্গে শোভা পাচ্ছে দক্ষিণ দিল্লির (South Delhi) এশিয়াড ভিলেজের একটি রাস্তার ধারে। কেন? কারণ সরকারি নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান চলছিল সেখানে। গুরু মায়াধর রাউত (Mayadhar Raut) ওড়িশি নৃত্যকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মর্যাদা দেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার কারণে ২০১০ সালে পদ্মশ্রী (Padmashree) পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। সেই শিল্পী আজ বাস্তুহারা।

১৯৭০-এর দশকে কেন্দ্রীয় সরকার দক্ষিণ দিল্লির এশিয়াড ভিলেজে শিল্পীদের জন্য ভাড়া দেওয়া সরকারি বাংলোগুলি খালি করতে শুরু করেছে। এর মধ্যে রয়েছে অনেক পদ্ম ও সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম। গুরু মায়াধর রাউতের মেয়ে এবং ওড়িশি নৃত্যশিল্পী মধুমিতা রাউত বলেন, “আমরা লাঞ্চ করছিলাম যখন সমস্ত আধিকারিকরা বাড়িতে এসেছিলেন। আজ আমার খুব মন খারাপ। এই একজন নৃত্যশিল্পী যিনি সোনাল মানসিংহ এবং রাধা রেড্ডির মতো দেশের সবচেয়ে বিখ্যাত নৃত্যের ধরনগুলিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন এবং আপনি তাদের সাথে এই নির্মম আচরণ করছেন। তিনি প্রায় ৫০ বছর ধরে দিল্লিতে বসবাস করছেন এবং দেশের কোনো কোণে তার এক টুকরো জমিও নেই। তাকে এভাবে অপমান করে তাড়িয়ে দেওয়া উচিত হয়নি।”

মোহিনিত্তম ব্যাখ্যাকারী এবং পদ্মশ্রী পুরষ্কারপ্রাপ্ত ভারতী শিবাজি, বয়স ৭৪। তিনি তাঁর ৯৮ বছর বয়সী মায়ের সাথে থাকেন। উচ্ছেদের নোটিশ পেয়েছেন তিনিও।তাঁর মতে, গুরু মায়াধরের সাথে ঘটনাটি খুব বেদনাদায়ক ছিল, তাই তিনি তার জিনিসপত্র প্যাক করে পাঠিয়েছেন দিল্লিতে একটি স্টোরেজ সুবিধায়। একটি সাশ্রয়ী মূল্যের অ্যাপার্টমেন্টের সন্ধান করছেন । শিবাজি বলেন, “আমি এখানে একজন পারফর্মার হিসাবে শুরু করেছি, এই জায়গা থেকে তিনটি বই লিখেছি, এখানে ছাত্রদের পড়িয়েছি এবং এখন আমাকে এখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিল্পীরা অবসর নেন না, তাদের ভূমিকা পরিবর্তন হয়। সরকারকে শিল্পীদের সম্মান দিতে হবে।”

১৯৭০-এর দশকে, ৪০থেকে ৭০ বছর বয়সী শিল্পীদের সরকার খুব কম ভাড়ায় ৩ বছরের জন্য চুক্তির ভিত্তিতে বাড়ি বরাদ্দ করেছিল। এরপর থেকে প্রতি ৩ বছর পর পর এসব চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছিল। ২০১৪ সালের পর সব শিল্পীর চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়নি, এরপর থেকে শিল্পীদের ওপর বাড়ি খালি করার চাপ বাড়তে থাকে। ২০২০ সালে, আবাসন ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রক সমস্ত বাড়ি খালি করার জন্য নোটিশ জারি করেছিল। আবাসন ও নগরবিষয়ক মন্ত্রকের অধীনস্থ রাজ্য পরিচালকের আধিকারিকদের তরফে জানানো হয়েছে, সরকারি বাংলো খালি করার প্রক্রিয়া চলছে। কেন্দ্রীয় সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে, ঐ স্থানে বসবাসকারী শিল্পীরা আর সরকারি বাংলোর জন্য যোগ্য নন। দিল্লি হাইকোর্টের একটি নির্দেশ অনুসারে, সমস্ত লোককে ২৫ এপ্রিল, ২০২২ পর্যন্ত মানবিক কারণে বাড়ি খালি করার জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল।

Related articles

ধর্মীয় বই কিনতে গিয়ে ২ কোটি টাকার প্রতারণার ফাঁদে কলকাতা ইসকন! গ্রেফতার ১ 

ধর্মীয় বই কেনার অর্ডার দিতে গিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার প্রতারণার শিকার হল কলকাতা ইসকন। অভিযোগ, অর্ডার অনুযায়ী...

বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের সৌজন্যে হারানো পুলিশের চাকরি ফিরে পাচ্ছেন বাবা

কয়েকদিন আগেই আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ(ICC World Cup)  জিতেছে ভারতীয়  মহিলা দল। মেয়েদের সাফল্যে গর্বিত মা-বাবারা। তবে বিশ্বকাপজয়ী মেয়ের...

গ্যাস-সমস্যায় নিঃশ্বাসের পরীক্ষা: যুগান্তকারী আবিষ্কারে বিশ্বে স্বীকৃতি বাঁকুড়ার চিকিৎসকের

একটি সাধারণ সমস্যা, যাতে জর্জরিত বর্তমান যুবসমাজ থেকে শিশুরা পর্যন্ত। গ্যাস বা গ্যাসট্রাইটিসের মতো সমস্যা নির্ধারণ করার জন্য...

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে বাড়তে পারে আসন সংখ্যা, জানালো এসএসসি 

রাজ্যের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ফলাফল ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী,...
Exit mobile version