রাজ্যের বন্যাপ্রবণ এলাকার মানুষকে প্লাবনের হাত থেকে রক্ষা করতে রাজ্য সরকার আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছে। রাজ্যের সেচ দফতর দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার ২৬টি জায়গায় নদীর জলস্তর এবং বৃষ্টির পরিমাণ মাপার জন্য যন্ত্র বসিয়েছে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান, হাওড়া ও উত্তর ২৪ পরগনায় গঙ্গা ছাড়াও দামোদর, রূপনারায়ণ সহ বিভিন্ন নদীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এগুলি বসানো হয়েছে।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের ৪৩ শতাংশ এলাকাই বন্যাপ্রবণ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। তাই উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মোট ১০২টি জায়গা চিহ্নিত করে এই ধরনের অত্যাধুনিক যন্ত্র বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই যন্ত্রগুলি বসানোর ফলে, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে এই নদীর জলস্তর সংক্রান্ত সমস্ত খবর পৌঁছে যাবে। জলসম্পদ ভবনে অবস্থিত সেচদফতরের কন্ট্রোল রুমে। আর সশরীরে হাজির হয়ে জলস্তর মাপার প্রয়োজন থাকছে না। এর ফলে জলস্তর সংক্রান্ত ‘রিয়েল টাইম’ তথ্য পৌঁছবে সেচদফতরের কন্ট্রোল রুমে। যার ফলে হাতে সময় থাকতে থাকতেই বন্যা জনিত ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া
দ্রুত বাকি জায়গাগুলিতেও এই যন্ত্র বসানোর কাজ করা হবে।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ ও জলপথ বিভাগের বহুদিনের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে বন্যা প্রতিরোধে নির্ধারিত এলাকায় শক্তপোক্ত পাঁচিল তৈরি, বেশ কিছু জায়গায় নদীর বাঁধ নির্মাণ, মুন্ডেশ্বরী নদী এবং সংলগ্ন ৪১টি অন্যান্য খাল নিষ্কাশন করার মতো ব্যাপারগুলি। যদিও প্রকল্পটির বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাঙ্ক এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক আর্থিকভাবে সাহায্য করবে। তবে এই প্রকল্পের জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার মোট ব্যয়ের ৩০ শতাংশ বহন করবে। প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুলাই মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য লারসেন অ্যান্ড টুব্রো সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। এর উদ্দেশ্য হল, পশ্চিমবঙ্গের সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সহযোগিতা করা। নিম্ন দামোদরের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামোর উন্নয়ন এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। যাতে প্রতি বছর প্লাবনের সময় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যতটা সম্ভব কম করা যায়!
