Monday, August 25, 2025

তৃণমূলী টিউটর রেখে জাগোবাংলা পড়ুন, বিজেপি নেতাদের কেন এমন পরামর্শ কুণালের?

Date:

এবার বঙ্গ বিজেপি নেতাদের রাজনৈতিক শিক্ষা নেওয়ার জন্য শাসক দলের মুখপত্র জাগোবাংলা পড়ার পরামর্শ দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। একই সঙ্গে দিলীপ-সুকান্ত-শুভেন্দুদের তৃণমূল করা কোনও ব্যক্তিকে টিউটর রাখার উপদেশ দিলেন!

কিন্তু কেন?

ব্যাখ্যা দিয়েছেন কুণাল। রাজ্য বিজেপির মুষল পর্বের মধ্যে দু’দিনের বঙ্গ সফরে এসে নিউটাউনের হোটেলে গতকাল, শুক্রবার অমিত শাহ একটি সাংগঠনিক বৈঠকে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন। সেখানে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ৩৫৫ বা ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে বাংলায় ক্ষমতায় আসার চিন্তা অমূলক। বিপুল জনাদেশ একটি সরকার ক্ষমতায় আসার পর তার বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। সিবিআই বা ইডি দিয়েও ক্ষমতা দখল করা সম্ভব নয়। গণতান্ত্রিক উপায়ে রাজনৈতিকভাবেই ক্ষমতায় আসতে হবে। এর পরই তৃণমূল নেত্রী উদাহরণ দিয়ে দলীয় নেতৃত্বকে শাহের সাজেশন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে শিখতে হবে লড়াই কাকে বলে। সিপিএমের কাছে মার খেয়েও রাজনীতির ময়দান ছেড়ে পালাননি। তাই আজ তাঁর দল ক্ষমতায়, আর তিনি মুখ্যমন্ত্রী।

সেই প্রসঙ্গ টেনেই এদিন কুণাল বলেন, “অমিত শাহ নিজেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে শেখার চেষ্টা করুন। দলীয় কর্মীর মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করে সকালে কুমিরের কান্না, দুপুর ও রাতে মহাভোজ। তাঁর নাটক, মিথ্যাচার, কুৎসা, অপপ্রচার বাংলার মানুষ ধরে ফেলেছে। তদন্তের আগে কুমিরের কান্না। তারপর পাঁচতারা হোটেল এলাহী খাওয়া-দাওয়া। রাতে আবার ভুরিভোজ, পিছন পিছন আরও নেতৃত্ব। মমতাকে দেখে আগে অমিত শাহ শিখুন।”

এরপরই কুণালের সংযোজন, “আসলে অমিত শাহ ভালো করে জানেন বাংলা ভালো আছে। আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তো আগেই সোজাসুজি বলেছেন, ক্ষমতা থাকলে ৩৫৫-৩৫৬ করতে।চ্যালেঞ্জ, ২৫০ আসনে জিতে আসবে তৃণমূল। উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে শিখতে বলেছেন। তাই অমিত শাহের কথাতেই বলতে হয়, এবার বঙ্গ বিজেপি নেতারা রাজনৈতিক শিক্ষা নেওয়ার জন্য শাসক দলের মুখপত্র জাগোবাংলা পড়ুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বুঝতে জানতে প্রয়োজনে তৃণমূলের কোনও ব্যক্তিকে টিউটর রাখুন।”

অন্যদিকে, বাংলার দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ তকমা দিয়েছে UNESCO. যা নিয়ে কেন্দ্রের তরফে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল “সেলিব্রেশন” অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে প্রধান অতিথি হয়ে এসে এমন কৃতিত্বের পুরোটাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়েও কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। তৃণমূল নেতার কথায়, “ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠানে অমিত শাহের ভূমিকা অত্যন্ত নিন্দনীয়। গতবছর ভোটের প্রচারে এসে কুৎসা,মিথ্যাচার করে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন, বাংলায় দুর্গাপুজো করতে দেওয়া হয় না। আর আজ যখন UNESCO স্বীকৃতি দিয়েছে, তখন তিনি হাততালি কুড়োতে চলে এসেছেন। আগে ওনার ক্ষমা চাওয়া উচিত। ওনার বলা উচিত ছিল, একবছর আগে যা বলছিলাম, তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলায় দুর্গাপুজোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর রাজ্য সরকার যা করেছে, গোটা বাংলার মানুষ সেই অবদান মনে রাখবেন। করোনার সময় আর্থিক অনুদান দিয়েছেন পুজো কমিটিগুলিকে। তখন টাকা দেওয়ায় এই অমিত শাহের দল আপত্তি করেছিল। যাতে পূজগুলি বন্ধ হয়ে যায় সেই চেষ্টা করেছিল বিজেপি। কিন্তু রাজ্য সরকার ছোট, মাঝারি, বড় সমস্ত পুজোর পাশে ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তারও আগে কার্নিভাল করে ইতিহাস রচনা করেছেন। পুজো মানে শুধু পুজো নয়। বিরাট কর্মকাণ্ড। অনেক কর্মসংস্থান হয়। বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও শিল্প ভাবনা ফুটে ওঠে এই দুর্গাপুজোর মধ্যে দিয়ে। সেটাই করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর কুৎসা করেছে বিজেপি। এখন ফোরাম ফর দুর্গোৎসবও কেন্দ্র ও বিজেপির এমন ভূমিকার নিন্দা করছে।”

আরও পড়ুন- পার্টি অফিস, কাশীপুরের বাড়ির হয়ে নিমতলায় শেষকৃত্যের পথে অর্জুনের দেহ

Related articles

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...

শান্তিপুরে মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ভোটে গোহারা বিজেপি! ২৬-৪-এ জয়ী তৃণমূল 

এসআইআর ইস্যু নিয়ে রাজ্যে বিজেপির মাতামাতির মধ্যে নদিয়ার শান্তিপুরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্লাস্টার কমিটির নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল...
Exit mobile version