Monday, November 3, 2025

স্বামী ও দুই সন্তানের মৃত্যুশোক! রাজনীতিতে সাফল্যের সিড়ি বেয়ে রাষ্ট্রপতির লড়াইয়ে দ্রৌপদী

Date:

Share post:

এক যন্ত্রণাময় ব্যক্তিগত জীবন, স্বামী ও দুই সন্তানের মৃত্যুশোক বুকে চেপে দেশসেবার কাজ করে গিয়েছেন নিরলসভাবে। তারই পুরষ্কার স্বরূপ এবার রাইসিনা হিলসের লড়াইয়ে দ্রৌপদী মুর্মু(Droupadi Murmu)। মঙ্গলবার এনডিএ-র বৈঠকের পর ওড়িশার আদিবাসী মহিলা দ্রৌপদী মুর্মুর নাম রাষ্ট্রপতি প্রার্থী(Presidencial Candidate) হিসাবে ঘোষণা করেছেন বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা(JP Nadda)। তারপর থেকেই উঠে আসছে দ্রৌপদীর জীবনের নানা দিক।

কে দ্রৌপদী মুর্মু?

১৯৫৮ সালের ২০ জুন ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামের এক সাঁওতাল পরিবারে জন্ম দ্রৌপদীর। ছোটবেলা থেকে বেড়ে ওঠা ছিল আর পাঁচটা প্রান্তিক পরিবারের সাধারণ কন্যাসন্তানের মতোই। পড়াশুনা শেষ করার পর ওড়িশা সরকারের ক্লাস-৩ কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে পরে স্কুলের শিক্ষিকা হন। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ওড়িশা সরকারের জলসম্পদ ও শক্তি দফতরে জুনিয়র অ্যাসিসট্যান্ট হিসেবে কাজ করেছিলেন। ১৯৯৪ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত শ্রী অরবিন্দ ইন্টিগ্রাল এডুকেশন সেন্টারে সাম্মানিক শিক্ষক ছিলেন। এই সবকিছুর মাঝে শ্যামচরণ মুর্মুকে বিয়ে করেন দ্রৌপদী। তাঁদের ৩ সন্তান হয়। তবে যৌবনেই বিধবা হন দ্রৌপদী। হৃদরোগে মারা যান স্বামী শ্যামচরণ মুর্মু। শুরু হয় একা হাতে ৩ সন্তানকে মানুষ করার এক কঠিন লড়াই।

তবে শিক্ষক হিসেবে কিছু বছর কাজ করার পর রায়রংপুরের কাউন্সিলর হিসেবে শুরু হয় দ্রৌপদীর রাজনৈতিক জীবন। পরে রায়রংপুর উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন হয়েছিলেন তিনি। ২০০০ এবং ২০০৪ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে দু’বার বিধায়ক নির্বাচিত হন এই কেন্দ্র থেকেই। বিজেডি ও বিজেপির জোট সরকারে একাধিক দফতরের মন্ত্রিত্ব সামলান তিনি। এরপর বিজেপির তফসিলি উপজাতি মোর্চার ভাইস-প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান মুর্মু। ২০০৭ সালে সেরা বিধায়ক হিসেবে ‘নীলকণ্ঠ পুরস্কার’ পান দ্রৌপদী। কিন্তু রাজনীতিতে সাফল্য এলেও দ্রৌপদীর ব্যক্তিগত জীবনে শুরু হয় তুমুল বিপর্যয়। ২০০৯ সালে রহস্যজনক ভাবে মারা যায় দ্রৌপদীর এক ছেলে। সে শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতে ২০১২ সালে পথ দুর্ঘটনায় মারা যান আরেক ছেলেও। মেয়ে ইতিশ্রীকে নিয়ে একা হয়ে পড়েন দ্রৌপদী। একসময়ে মেয়ের বিয়ে দেন। তবে এই চরম আঘাতেও ভেঙে পড়েননি দ্রৌপদী। ২০১৫ সালে তিনি ঝাড়খণ্ডের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০২১ সাল পর্যন্ত সেই দায়িত্ব সাম্লেছেন তিনি। ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে উঠে এসেছিল তাঁর নাম। তবে সেবার না হলেও ২০২২-এর রাইসিনা হিলসের লড়ায়ে এনডিএ-র তরফে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষিত হল তাঁর নাম। বিরোধীদের প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে হারালে দ্রৌপদী হবেন দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি।


spot_img

Related articles

তিন জেলায় চলবে নজরদারি! এসআইআর পরিদর্শনে আসছে কমিশনের বিশেষ দল

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (এসআইআর) প্রক্রিয়া চলাকালীন রাজ্যে আসছে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পরিদর্শক দল। কমিশন সূত্রে জানা...

এসআইআর চলাকালীন এলাকায় থাকতে হবে মন্ত্রীদের, কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

রাজ্যজুড়ে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী প্রক্রিয়া (এসআইআর)। এই প্রক্রিয়ায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের...

বিশ্বকাপ জিতেই মোটা অঙ্কের আর্থিক পুরস্কার, আয়ে পলাশকে কতটা টেক্কা দিলেন স্মৃতি?

বিশ্বকাপ জিতেই বিয়ের পিঁড়িতে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্মৃতি মান্ধানা (Smriti Mandhana) । আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস...

ঝাড়গ্রামে শিল্পের প্রসারে বড় পদক্ষেপ, জমি ফ্রি-হোল্ডে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত রাজ্যের

শিল্পে বিনিয়োগের গতি বাড়াতে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত...