Friday, August 22, 2025

ক্ষমতা দখলে মরিয়া বিজেপির বিধায়ক চুরি কার্যত শিল্পের পর্যায়ে

Date:

মানুষের সমর্থন না পেলে বিধায়ক চুরি করে রাজ্য দখল। ক্ষময়তার স্বাদ নিতে কোটি কোটি টাকা জলের মতো ব্যয়। বিজেপির(BJP) দৌলতে দেশের গণতন্ত্রে(Democracy) এগুলি এখন অত্যন্ত সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অঙ্কে অপারেশন লোটাস চলেছিল কর্ণাটকে(Karnataka), তারপর জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধ্রিয়াকে টোপ দিয়ে একইসূত্রে অঙ্ক কষা হয় মধ্যপ্রদেশে(Madhya Pradesh)। এবার তালিকায় তৃতীয় রাজ্য হিসেবে সেই অঙ্কের সিড়ির ধাপ এগোচ্ছে মহারাষ্ট্রে(Maharastra)। মানুষের সমর্থনকে ফুঁৎকারে উড়িয়ে অর্থ ও ক্ষমতাবলে বিজেপির এই রাজ্যদখল দেশের রাজনীতির এক লজ্জাজনক অবস্থা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

২০১৯ সালে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। এরপর সেখানে সরকার গড়ে শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেসের মহাজোট। মুখ্যমন্ত্রী হন উদ্ধব ঠাকরে। আঙুর ফলের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হওয়ার পর থেকেই সেখানে বেপরোয়া হয়ে ওঠে বিজেপি। বিধায়ক ভাঙিয়ে একাধিকবার চলে সরকার ভাঙার চেষ্টা। এরমাঝে বিধায়ক ভাঙিয়ে একবার একদিনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়ে লজ্জার কালি মাখতে হয় বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবীশকে। তারপরও লজ্জা হয়নি। এবার অবশ্য শিবসেনা বিধায়ক একনাথ শিন্ডেকে টোপ দিয়ে ৪৬ বিধায়ককে মোদির রাজ্য গুজরাটে হোটেল বন্দি করা হয়। তারপর সেখান থেকে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় আর এক বিজেপি রাজ্য অসমে। ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর দুর্দশায় তাঁদের পাশে না দাঁড়িয়ে ক্ষমতা দখলের এই খেলায় নির্লজ্জভাবে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।

তবে লড়াই জারি রেখেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। বিক্ষুব্ধদের বার্তা দিয়ে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, “আমি আবার লড়তে প্রস্তুত। আপনারা ফিরে আসুন। আমাকে সামনা-সামনি বলুন আমাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হবে। আমি ছেড়ে দেব। কতজন আমার পক্ষে, কতজন আমার বিপক্ষে ভোট দিল, সেটা বিষয় নয়। একজনও যদি আমার বিরুদ্ধে মত দেয় তাহলে সেটা আমার হার। আমি ইস্তফা দিতে রাজি। মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে মাতোশ্রীতে চলে যাব।” পাশাপাশি বিক্ষুব্ধদের উদ্দেশ্যে শিবসেনা সুপ্রিমো বলেন, আপনারা কি আমাকে নিশ্চিত করে বলতে পারেন, যে পরের মুখ্যমন্ত্রী শিব সেনা থেকে হবে? কে মুখ্যমন্ত্রী হল, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। শিব সেনার কেউ হবে কি? আমার দলের একজন নেতা অসমে গিয়ে আমাকে বলছেন আমরা নাকি হিন্দুত্ব ভুলে গিয়েছি। তার উত্তর দিয়ে তিনি বলেন, শিব সেনা আর হিন্দুত্ব একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। শিব সেনা কখনও হিন্দুত্ব ছাড়বে না। আমি বালাসাহেব ঠাকরের আদর্শকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।” অর্থাৎ বলাই যায় এই কঠিন পরিস্থিতিতেও শিরদাঁড়া শক্ত করে মাটি কামড়ে রেখেছেন উদ্ধব। প্রসঙ্গত, বিজেপির এই খেলা শেষ পর্যন্ত কতদূর সফল হবে সেটা সময়ই বলবে। কিন্তু ঘোড়া কেনা-বেচা ও অর্থবলে ক্ষমতা দখলের বিজেপির এই নয়া নীতি ভারতীয় রাজনীতির যে এক লজ্জাজনক অধ্যায় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

আরও পড়ুন- অসাধু পাউরুটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামছে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর

 

 

Related articles

ইমান বেচলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী: শিখ সম্প্রদায়ের অপমানে নীরব রবনিতকে প্রশ্ন তৃণমূলের

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবনিত সিং বিট্টু  শিখ সম্প্রদায়ের মানুষের সম্মানকে বাংলার বিজেপি নেতাদের সামনে বিক্রি করে দিলেন। নরেন্দ্র মোদির...

আইনি জটিলতা কাটিয়ে স্নাতকের মেধাতালিকা প্রকাশ, শুরু হচ্ছে ভর্তি: জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

আইনি জটিলতা কাটিয়ে স্নাতকস্তরে প্রকাশিত হল অনলাইনে পোর্টালে ভর্তির ফলাফল। শুক্রবার ফল (Result) প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই ভর্তি প্রক্রিয়া...

কিছু হাই কোর্টের বিচারপতির কর্তব্যবোধ কম পড়ছে: মত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির

একাধিক হাই কোর্টের বিচারপতিদের স্বরূপ বাংলায় অনেক আগেই খুলে গিয়েছে, যখন হাই কোর্টের বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে...

মোদিজি আসুন বাংলার উন্নয়ন দেখে যান: কটাক্ষ চন্দ্রিমার

“ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে আবার আসতে শুরু করেছেন। এবার থেমে থাকুন দাদা।“ নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কড়া...
Exit mobile version