Wednesday, November 12, 2025

গেরুয়া সন্ত্রাসে গণনার দিনেও রক্তাক্ত ত্রিপুরা: তেইশে বিকল্প সরকার হবেই, দাবি তৃণমূলের

Date:

উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হতেই ফের গেরুয়া সন্ত্রাসে রক্তাক্ত ত্রিপুরা। সন্ত্রাসে অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি ত্রিপুরার চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনকে কার্যত প্রহসনে পরিণত করেছিল বিজেপি। পুলিশ কর্মী থেকে সাংবাদিক, সাধারণ মহিলা থেকে প্রবীণ নাগরিক কেউই জঙ্গলরাজ ত্রিপুরায় নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের সুযোগ পায়নি। ভোটলুঠ থেকে ছাপ্পা, রিগিং, বাইক বাহিনীর দাপাদাপি বাদ ছিল না।

আজ, রবিবার গণনার দিনও সেই সন্ত্রাসের ছবি নতুন করে প্রতিফলিত হল। গণনার আগের রাত থেকেই বিরোধী তৃণমূলের কাউন্টিং এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয় দেখানো হয়। গণনা কেন্দ্রে এলে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়। পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। গণনা কেন্দ্রের বাইরে বিজেপির বহিরাগত গুন্ডারা ব্যাপক জমায়েত করে। ফলে উপিনির্বাচনের ফলাফল যা হওয়ার তাই হয়েছে।

বিজেপির রেকর্ড সন্ত্রাস শুরু হয় গণনার পরেও। বিরোধীদের উপর লাগামছাড়া সন্ত্রাস শুরু হয়। নতুন করে রক্তাক্ত হয় ত্রিপুরা। কিন্তু প্রহসনের এই ভোট ও ফলাফলের পর একেবারেই দমে যাচ্ছে না তৃণমূল। গেরুয়া সন্ত্রাসের সামনে কোনওমতেই আত্ম সমর্পণ নয়, বরং তেইশের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই আরও জোরদার লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে ঘাসফুল শিবির। ত্রিপুরার মানুষকে ভোরের সূর্য দেখাতে এবং গণতন্ত্ররক্ষার লড়াইয়ে একইঞ্চি জমি ছাড়া হবে না বলেই জানিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।

 

যেখানে বাম-কংগ্রেস ও স্থানীয় দলগুলি বিজেপির কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আত্মসমর্পণ করে অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে,

সেখানে বিজেপি বিরোধী প্রধান বিকল্প শক্তি হয়ে উঠতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল। তাই স্বাধীনতার প্রশ্নে, উন্নয়নের প্রশ্নে ত্রিপুরাবাসীর সঙ্গে তৃণমূল ছিল, আছে, থাকবেও। প্রহসনের উপনির্বাচনের ফলাফল নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।

 

তাঁর কথায়, ”যেভাবে সন্ত্রাসের বাতাবরণে ভোট হয়েছিল, তাতে তৃণমূল এই ফলাফলে মোটেও হতাশ নয়। এই ফলাফলে মানুষের রায়ের প্রতিফলন ঘটেনি। যেখানে মানুষ ভোটই দিতে পারেনি, সেখানে এই ফলাফল কিছুই প্রমাণ করে না। যদিও সাংগঠনিক স্তরে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। বিজেপি অবাধে ছাপ্পা ভোট, সন্ত্রাস চালিয়েছে। তৃণমূলের জনপ্রিয়তায় সবাই উদ্বিগ্ন। সিপিএম, বিজেপি সবাই মিলে তৃণমূলকে আটকানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু তেইশে যে বিকল্প সরকার তৈরি হবে ত্রিপুরায়, তাতে নেতৃত্ব দেবে তৃণমূলই।” ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুবল ভৌমিক বলেন, ”ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে সেটা ফলাফলের স্পষ্ট। তাই আমরা চিন্তিত নই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে আগামিদিনে ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তন হবেই।”

 

আগরতলা, টাউন বড়দোয়ালি, যুবরাজনগর, সুরমা – এই চার কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়েছে রবিবার। আগরতলা কেন্দ্রে খুব অল্প মার্জিনে জয়ী হয়েছেন সুদীপ রায়বর্মন। টাউন বড়দোয়ালি কেন্দ্র নিজের দখলে রাখতে পারেননি আশিস সাহা। জিতেছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক  সাহা। ফলে বাংলার মতোই ত্রিপুরাতেও কার্যত সাইন বোর্ড কংগ্রেস। যুবরাজনগরে নিজেদের আসন ধরে রাখতে ব্যর্থ সিপিএম। বাংলার মতোই ত্রিপুরাতেও নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে বামেরা। আর সুরমা তাদের শক্তঘাঁটি বলে দাবি করা ত্রিপরামোথা গোহারা হেরেছে।

 

 

Related articles

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কে স্বচ্ছতা আনতে চালু অনলাইন অডিট ব্যবস্থা

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। এ বার থেকে সমস্ত সমবায় সমিতি...

সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা বাড়াতে চালু হচ্ছে জিও ট্যাগিং ব্যবস্থা! নির্দেশিকা জারি নবান্নের 

সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও তদারকিতে আরও স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। নবান্নের নির্দেশে এবার থেকে রাজ্যের...

মুখ্যমন্ত্রীকে কটূক্তি! ‘নারীবিদ্বেষী’ শান্তনু ঠাকুরের ইস্তফার দাবি তৃণমূলের

বিজেপি বাংলাকে সম্মান করে না। এই বিজেপি মহিলাদেরও সম্মান করে না, করতে জানেও না। সেটা আরও একবার প্রমাণ...

মৃত ভোটারের নামে ফর্ম জমা পড়লে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ কমিশনের

মৃত ভোটারের নামে এনুমারেশন ফর্ম জমা পড়লে এবার সরাসরি আইনি ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী,...
Exit mobile version