Sunday, November 9, 2025

অন্ধকারে কাটিয়ে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর গ্রামে অবশেষে এলো বিদ্যুতের খুঁটি

Date:

Share post:

কাউন্সিলর থেকে বিধায়ক, রাজ্যের মন্ত্রী, রাজ্যপাল অবশেষে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী। এহেন দ্রৌপদী মুর্মুর(Droupadi murmu) নিজের গ্রামে এতদিন ছিল না বিদ্যুৎ পরিষেবা। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এটাই বাস্তব। এনডিএ-র তরফে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের জন্য তাঁর নাম ঘোষণার পর অবশেষে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার কুসুম ব্লকের উপরবেড়া গ্রামে অবশেষে শুরু হল বিদ্যুতের কাজ(Electricity)। যদিও এ গ্রামে এখন আর থাকেন না দ্রৌপদী। তিনি চলে গিয়েছেন এখান থেকে ২০ কিমি দূরে পুরসভা এলাকা রায়রংপুরে। তবে দেশের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর জন্ম ভিটেয় স্বাধীনতার পর সাত দশকেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও বিদ্যুৎ আসেনি? যেখানে খোদ দ্রৌপদী দেবী নিজে এতদিন রাজ্যের মন্ত্রী পদে ছিলেন। শুনেই আশ্চর্য দেশবাসী।

আধুনিক জীবনের স্বাচ্ছন্দ্য থেকে শত যোজন দূরে থাকা দ্রৌপদীর গ্রাম উপরবেড়ায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার বাসিন্দার বাস। রয়েছে দু’টি তালুক বড়াশাহি ও ডুঙ্গুরিশাহি। একটির থেকে অন্যটির দূরত্ব এক কিমি। বড়াশাহি পাড়াটিতে বিদ্যুৎ থাকলেও ডুঙ্গুরিশাহিতে আনুমানিক ২০টি বাড়ি এখনও অন্ধকারে ডুবে। এর মধ্যেই রয়েছে দ্রৌপদীর ভাইপোর বাড়িও। দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাড়িতে থাকেন তিনি। এখানকার বাসিন্দাদের সন্ধ্যার পর ভরসা বলতে কেরোসিনের লণ্ঠন বা প্রদীপের আলো। মোবাইল চার্জ দিতে যেতে হয় অন্য পাড়ায়।

বাসিন্দাদের অভিযোগ বিদ্যুতের জন্য এর আগে তাঁরা বহুবার আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু কাজ হয়নি। দ্রৌপদীর ভাইপোর স্ত্রীর অভিযোগ, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় অতি কষ্টে দিন কাটে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে একাধিকবার জানানো হয়েছে। বিধায়ক, সাংসদ সবাই জানেন।’ কিন্তু দ্রৌপদী নিজে মন্ত্রী পদে থাকলেও কেন কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি? তাঁর কোনও জবাব মেলেনি। অবশ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, এখানকার জমি বনদপ্তরের। তাদের কাছ থেকে ছাড়পত্র না মেলায় এতদিন সেখানে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। যদিও দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হতেই রাতারাতি কেটে গিয়েছে যাবতীয় জটিলতা। টাটা পাওয়ার নর্থ ওড়িশা ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের কর্তারা পৌঁছে গিয়েছেন উপরবেড়া গ্রামে। ইতিমধ্যেই ওই গ্রামে পৌঁছে গিয়েছে ট্রান্সফর্মার, বিদ্যুতের ৩০টি খুঁটি ও তার। খুঁটি পোঁতার জন্য যন্ত্র দিয়ে মাটি খোঁড়ার কাজ শেষ। বিদ্যুৎ বিভাগের এক সিনিয়র আধিকারিক জানিয়েছেন, দ্রুত বিদ্যুদয়নের কাজ শেষ করার জন্য ময়ূরভঞ্জ সেকশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০০ সালে দ্রৌপদী বিধায়ক হওয়ার পর তাঁর গ্রামে প্রথম বিদ্যুৎ ঢোকে। কিন্তু সব বাড়িতে আলো পৌঁছয়নি। সাঁওতাল অধ্যুষিত এই গ্রামের অনেক বাড়িই ডুবে থাকে অন্ধকারে। যা আজও ঘোচেনি। এদিকে, ২০০৪ সালে দ্রৌপদীর শ্বশুরবাড়ি পাহাড়পুরে বিদ্যুৎ আসে। মুর্মু তখন রায়রংপুরের বিধায়ক। ওড়িশার মন্ত্রী। বিদ্যুৎ এলেও কিছুদিন পর চুরি হয়ে যায় খুঁটি। কেটে যায় সংযোগ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ফের বিদ্যুৎ আসে ২০১৫ সালের পর দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রাম জ্যোতি যোজনায়।


spot_img

Related articles

কাশ্মীরে সরকারি হাসপাতালে জঙ্গি যোগ! চিকিৎসকের লকার থেকে উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র

মুখে যতই বড় বড় কথা বলুন না কেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ভূস্বর্গে যে জঙ্গিদের কার্যকলাপ বেড়েই চলেছে তার আরও এক...

টানা দুদিন তাপমাত্রা কুড়ির নীচে, রবির সকালে দক্ষিণবঙ্গে ভরপুর শীতের আমেজ 

উইকেন্ডে পারদ পতন অব্যাহত, আগামী সপ্তাহের মাঝে মাঝে পর্যন্ত শীতের আমেজ (Winter in Weekend) পুরোপুরি উপভোগ করতে পারবে...

KIFF: রবিবাসরীয় ফিল্মোৎসবে হলিউড ক্লাসিক ‘ব্লু ভেলভেট’ দেখার সুযোগ, দুপুরে ফেলুদার নস্টালজিয়া!

দেখতে দেখতে তিন দিন পার, উদ্বোধনের দিনটাকে হিসেবের মধ্যে ধরলে আজ ৩১ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (31st...

বেঁচে থাকলে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলকে অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দিত! পুরুলিয়ার সভা থেকে বিজেপিকে আক্রমণ দেবাংশুর

ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথ, নজরুল বেঁচে নেই। নইলে বিজেপি রবীন্দ্রনাথকে রোহিঙ্গা ও নজরুলকে অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দিত। শনিবার পুরুলিয়া শহরের...