Friday, November 14, 2025

২০২৪ এর ১৫ অগস্ট হাওয়াই চপ্পল-তাঁতের শাড়ি পড়া এক মহিলা লালকেল্লা থেকে ভাষণ দেবেন, রানাঘাটে ইঙ্গিত কুণালের

Date:

আমরা ১৫ অগস্ট লালকেল্লা থেকে অনেক প্রধানমন্ত্রীকে ভাষণ দিতে দেখেছি। অনেক ফিটফাট ধুতি-পাঞ্জাবি, জ্যাকেট পড়ে ভাষণ দিতে দেখেছি। কিন্তু ২০২৪ এর ১৫ অগস্ট হাওয়াই চপ্পল পড়া তাঁতের শাড়ি পড়া এক মহিলাকে লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে দেখা যাবে, তার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার রানাঘাটে ‘২১শে জুলাই ধর্মতলা চলো’ কর্মসূচির প্রস্তুতি সভায় এভাবেই আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।

তিনি বলেন, এর আগে দুবার সুযোগ এসেছে। কিন্তু সেই সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে পারেনি। এ প্রসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন ১৯৯৬ সালের কথা। সে বছর নরসিমা রাওয়ের সরকার পড়ে গেছিল। অবিজেপি শক্তি চেয়েছিল প্রধানমন্ত্রী পদে বসুন জ্যোতি বসু। কিন্তু সিপিএম রাজি হয়নি। আসলে সিপিএম ইরাককে কী করতে হবে সে বিষয়ে জানে, অন্য দেশ কী করবে সে বিষয়ে জানে। কিন্তু নিজেদের কাজটা করার সময় বলে আমরা করবো না, এটাই সিপিএম। ২০০৪ সালে সোনিয়া গান্ধী সরকার গড়ার সময় বললেন আমি প্রধানমন্ত্রী হব না। আমরা ভাবলাম প্রণব মুখোপাধ্যায় হবেন। কিন্তু কী দেখলাম, মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী হলেন।

এখন একটা সময় এসেছে অ-বিজেপি শক্তিগুলোকে একজোট হওয়ার। আর সেই শক্তিকে যিনি একত্রিত করতে পারেন তিনি একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মনে করিয়ে দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাতবারের এমপি, চার বারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তার মধ্যে দুবারের রেলমন্ত্রী, তিন তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী। তার মতো অভিজ্ঞ, যোগ্য বিকল্প মুখ সারাদেশে আর একটিও নেই।

নরেন্দ্র মোদি সরকারের পতন ঘটিয়ে একমাত্র তিনিই পারেন কেন্দ্রীয় সরকার বদল করতে। কুণাল এদিন স্পষ্ট জানান, যারা মনে করেন পেট্রোল, ডিজেল, গ্যাসের দাম বাড়ানো ঠিক হয়েছে তারা বিজেপিকে ভোট দিন। কিন্তু যারা মনে করেন এটা ঠিক নয়, তারা বিজেপিকে একটি ভোটও দেবেন না। একুশে জুলাই আসুন সবাই মিলে একটা বার্তা পৌঁছেদি সারাদেশে। বাংলার সেই বার্তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক, বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও। আর এর সামনের সারিতে থেকে যিনি নেতৃত্ব দেবেন তিনি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, থাকবেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন তিনি শুভেন্দুর উদ্দেশ্যে বলেন, কি পায়নি ওই পরিবার। মন্ত্রী,সাংসদ, পুরসভার পদ সব। ওর এক ভাই পুরসভার চেয়ারম্যান। এখন জানা যাচ্ছে সে কাঁথি পুরসভার শ্মশানের জমিও বেচে দিয়েছে। সৌমেন অধিকারী, তার সঙ্গে রাত ৯ টার পর নাকি কথা বলা যাবে না। ওর বাবা কখনও ভাবেনি যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হবে। তৃণমূল থেকে সব নিয়ে, পিছন থেকে ছুরি মারার ধান্দায় এখন বাঁচতে বিজেপির ছাতার তলায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।

কুণাল বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন হাওয়া নিয়ে এসে তৃণমূল কংগ্রেসের শিকড়কে আরও ৫০ বছরের জন্য যে গভীরে নিয়ে যাচ্ছেন, তাতে আমাদের সামিল হতে হবে। আগামী দিনগুলো কঠিন লড়াই। কিন্তু তৃণমূল পরিবার অনেক কঠিন লড়াই দেখেছে। তিনি মনে করিয়ে দেন, এক সময় লোডশেডিং ছিল নিত্যসঙ্গী। ইংরেজি তুলে দিয়েছিল সিপিএম, কম্পিউটার ঢুকতে দেবে না বলে আন্দোলন করেছিল সিপিএম। বাংলাকে পিছিয়ে দিয়ে গেছে সিপিএম।তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, মনে করিয়ে দিন সিপিএমের সন্ত্রাসের কথা। একের পর এক গণহত্যার কথা। যাদের অল্প বয়স তাদের সেই ইতিহাসের কথা বলতে হবে। এবারের লড়াই দেশে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার প্রতিষ্ঠার লড়াই।

আগামী ২১ জুলাই ধর্মতলায় শহীদ স্মরণের মঞ্চে নেত্রী বার্তা দেবেন। কী বার্তা দেবেন? পঞ্চায়েত নির্বাচনের বার্তা। লোকসভা নির্বাচনের বার্তা, আগামী দিনগুলোতে আমরা কিভাবে এগোবো সেই বার্তা। তৃণমূল কংগ্রেস মানে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে এক বৃহত্তর লড়াই। মমতাদি আমাদের মুখ। মমতাদি আমাদের প্রতিষ্ঠাতা মমতাদি আমাদের শক্তি।আসুন ২১ জুলাই নেত্রীর বার্তা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে তৃণমূল পরিবার।

 

 

Related articles

বিহারের ফলাফলে বাংলা নিয়ে মোদির স্বপ্ন ‘সেগুড়ে বালি’: ধুইয়ে দিল তৃণমূল

একদিকে যখন বিহারে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে, তখন বাংলার বিজেপি নেতারা হঠাৎই আবির খেলা, মিষ্টিমুখে মেতে উঠেছেন। ফলাফল...

SIR আতঙ্কে মৃত্যু: পরিবারের পাশে তৃণমূল নেতৃত্ব

SIR–এর আতঙ্কে প্রায় এক সপ্তাহ আগে আত্মঘাতী হন মুর্শিদাবাদের কান্দি পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাগডাঙা এলাকার বাসিন্দা মোহন...

দিল্লি বিস্ফোরণের জের: রাজ্যের বিশেষ বিশেষ স্থানে ঢেলে সাজছে নিরাপত্তা

রাজধানীতে গোয়েন্দা ব্যর্থতা স্পষ্ট। সেই সঙ্গে অমিত শাহর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দিল্লি পুলিশও। দিনভর ঘাতক গাড়ি ঘুরে বেড়ালো, অথচ...

নেতৃত্ব দিতে অপারগ! রাঘোপুর ধরে রাখলেও অনুকরণ রাজনীতি নিয়ে ডুবলেন তেজস্বী

বিধানসভা নির্বাচনে প্রায় এক তৃতীয়াংশ আসন হারালো লালু প্রসাদের আরজেডি। নির্বাচনের ফলাফল আরজেডির মনোবল ভেঙে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।...
Exit mobile version