সময় যত গড়াচ্ছে শ্রীলঙ্কার(Srilanka) সঙ্কট বেড়ে চলেছে ততই। রাষ্ট্রপতির(President) ইস্তফার দাবিতে শনিবার স্বতস্ফূর্ত মানুষের ক্ষোভ আছড়ে পড়ে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতিভবনে। এরইমাঝে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন রনিল বিক্রমাসিংহে(Ranil Wickremesinghe)। সবমিলিয়ে এই দ্বীপরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সংকট চরম আকার ধারণ করতে শুরু করেছে।

এর আগে স্পিকার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত শ্রীলঙ্কার শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের বৈঠকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। স্পিকারের বাড়িতে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পরে, সাংসদ হার্শা ডি সিলভা টুইট করেছেন যে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সর্বদলীয় সরকার নিয়োগ এবং দ্রুত নির্বাচনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এরপরই একটি টুইট করেন বিক্রমাসিংহে। যেখানে তিনি জানান, “বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে এবং দেশবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে আমি দলীয় নেতৃত্বের প্রস্তাবে সম্মতি জানাচ্ছি। যাতে দ্রুত সর্বদলীয় সরকার গঠিত হয়। এবং এই সরকার গঠনের পর আমি প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেব।”
উল্লেখ্য, ভয়াবহ আর্থিক সঙ্কটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। শনিবার রাষ্ট্রপতি ভবন ঘেরাও ও তা দখল করতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। বিক্ষোভ চলাকালীন শ্রীলঙ্কার পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ১০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী জখম হয়েছেন। আহতদের কলম্বোর ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শুক্রবার শ্রীলঙ্কায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছিল। সেনাবাহিনীকেও হাই অ্যালার্টে রাখা হয়। কিন্তু প্রশাসনের বাধা মানেনি উন্মত্ত জনতা। রেল কর্তৃপক্ষকে ট্রেন চালাতে বাধ্য করা হয় যাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তারা শনিবার রাজধানী কলম্বোর প্রতিবাদ মিছিলে পৌঁছে যেতে পারে। রাত বাড়তেই প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘিরে ফেলে বিক্ষুব্ধ জনতা। বিক্ষোভ বাড়তেই নিরাপত্তারক্ষীরা প্রেসিডেন্টকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায়। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে শূন্যে গুলি ছোঁড়ে তারা। তবে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে কোথায় সরানো হয়েছে, তা এখনও অজানা। এই পরিস্থিতিতে নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপরই ইস্তফার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।
