নিউটনের মাধ্যকর্ষণ(gravity force) তত্ত্বের আবিষ্কার পুরোপুরি ভুয়ো। একই রকম ভাবে পিথাগোরাসের উপপাদ্যও ভাওতা। ফলে এই সমস্ত ভুয়ো খবর নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলতে পারবে কর্নাটকের পড়ুয়ারা। মোদি সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতিতে(national education policy) রূপায়নের জন্য এমনই সুপারিশ করেছে কর্নাটকের বিজেপি সরকার নিয়োজিত কমিটি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কর্নাটক বিজেপি সরকারের(Karnataka Government) বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন শিক্ষাবিদেরা।
সূত্রের খবর, নয়া শিক্ষা নীতিতে ত্রিভাষা শিক্ষায় ইংরেজি এবং স্থানীয় ভাষার পাশাপাশি সংস্কৃতকে তৃতীয় ভাষা করার সুপারিশ যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে চূড়ান্ত বিতর্কিত মনুস্মৃতিকে শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবও। একই ভাবে অর্থনীতিতে কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র, মহাভারতের শান্তিপর্ব এবং প্রাচীন ভারতের হিসাব পরীক্ষা পদ্ধতি, জীববিজ্ঞানে ত্রিদোষ তত্ত্ব, ভূগোলে পৌরাণিক আমলের ভূগোল পড়ানোর মতো সুপারিশও করা হয়েছে কর্নাটক সরকারের তরফ থেকে। এ প্রসঙ্গে জাতীয় শিক্ষা নীতি সংক্রান্ত সুপারিশে কর্নাটকের টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান মদন গোপালের বলেন, মাধ্যাকর্ষণ এবং পাইথাগোরাসের উপপাদ্যের শিকড় রয়েছে বৈদিক অঙ্কে! এ নিয়ে গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিনেও অনেক তথ্য আছে। একই সঙ্গে তিনি এটাও জানান, তাই বলে এমন নয় যে সব মানতেই হবে।
কর্নাটক সরকারের এই প্রস্তাবেই রীতিমতো আশঙ্কা প্রকাশ করছেন দেশের শিক্ষাবিদরা। অভিযোগ উঠেছে নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতায় আসার পর শুধুমাত্র স্বাধীন ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানগুলিকে নষ্ট করার চেষ্টা চলছে তাই নয়, শিক্ষা সহ সমস্ত ক্ষেত্রে চলছে চূড়ান্ত গৈরিকীকরণের পরিকল্পনা। আর সেই পথে হেঁটেই জাতীয় শিক্ষানীতিতে সিলেবাসে ব্যাপক রদবদলের প্রস্তাব উঠেছে। শিক্ষাবিদদের অভিযোগ, মোদি সরকার চাইছে সংঘ পরিবারের আদর্শে চির বিতর্কিত মনুনীতিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করতে। যেখানে পুরুষতান্ত্রিক ও ব্রাহ্মণ্যবাদী ভাবধারার বাড়বাড়ন্ত। তাঁর ফলেই কর্নাটকেই স্কুল পাঠ্যে গান্ধী, অম্বেডকর, নেহরুর লেখা সরিয়ে ঠাঁই পায় আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতা হেডগেওয়ার, হিন্দুত্ববাদী নেতা বিনায়ক সাভারকরের লেখা। তবে যে যাই বলুক না কেন সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই কর্নাটকের বিজেপি সরকারের।
