শুভেন্দু-সৌমেন্দুকে গ্রেফতারের দাবি, অন্যথায় কাঁথি থানার সামনে ধরনার হুঁশিয়ারি কুণালের

সারদা-নারদা কাণ্ডে শুভেন্দু সিবিআই-ইডির মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত থেকে বাঁচতে বিজেপির পায়ে পড়েছে। সেভাবে রাজ্য পুলিশের আওতাধীন মামলাগুলি থেকে বাঁচতে শুভেন্দু তলে তলে কোনও তৃণমূল নেতার পায়ে পড়লে অবাক হবেন না তিনি

২০১১ সাল থেকেই সারদার সঙ্গে যোগাযোগ শুভেন্দু অধিকারী ও তাঁর ছোট ভাই সৌমেন্দুর। নথিতে তুলে এবং তার ব্যাখ্যা দিয়ে শুভেন্দুর সঙ্গে সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের যোগাযোগ কার্যত প্রমান করে দিলেন কুণাল ঘোষ। একই সঙ্গে সিবিআই নিজেদের নিরপেক্ষ প্রমান করে যেন অবিলম্বে কাঁথির অধিকারী পরিবারের এই দুই সদস্যকে যেন হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করে তারও দাবি তুললেন কুণাল ঘোষ। শুভেন্দু ও সৌমেন্দু প্রভাবশালী, এদের বাইরে রেখে তদন্ত করা যাবে না, তাহলে তথ্য প্রমাণ লোপাট হবে। যেমনভাবে সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে নতুন করে নাড়াচাড়া শুরু হতে কাঁথি পুরসভা থেকেও উধাও হয়েছে এই সংক্রান্ত নথিপত্র ও ফাইল।

এখানেই শেষ নয়। কুণাল হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, শ্মশান থেকে শুরু করে বাতিস্তম্ভ দুর্নীতিতে যুক্ত শুভেন্দু ও সৌমেন্দুর বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশ অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তিনি কাঁথি থানার সামনে বিচার চেয়ে ধর্ণায় বসবেন। সারদা-নারদা কাণ্ডে শুভেন্দু সিবিআই-ইডির মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত থেকে বাঁচতে বিজেপির পায়ে পড়েছে। সেভাবে রাজ্য পুলিশের আওতাধীন মামলাগুলি থেকে বাঁচতে শুভেন্দু তলে তলে কোনও তৃণমূল নেতার পায়ে পড়লে অবাক হবেন না তিনি। তাই অবিলম্বে শুভেন্দু ও সৌমেন্দুকে গ্রেফতার না করলে কাঁথি থানার সামনে ধর্ণায় বসবেন কুণাল।

সারদা-শুভেন্দু যোগ নিয়ে এদিন ফেসবুক লাইভে এসে কুণাল বলেন, “সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন কোর্টে লেখা বয়ানে বলেছেন- কাঁথিতে বহুতল করে দেওয়ার নাম করে ও পরে ব্ল্যাকমেল করে শুভেন্দু ও সহযোগীরা তাঁর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়েছে। এর মধ্যে বাড়ির প্ল্যানের নাম করে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ড্রাফটে এবং বাকি বিপুল টাকা নগদে। এখানে আরও একটা বড় অভিযোগ আছে। কাঁথি পুরসভা চারতলার বেশি বাড়ির অনুমোদন দিতে পারে না। তার এক্তিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। তাহলে সৌমেন্দুরা ২২তলা বা ১৯ তলা বাড়ির অনুমোদন দিয়ে টাকা নিল কী করে? সেই প্রজেক্টই বা কোথায়? আমি এর তদন্ত চেয়েছিলাম। এতদিন শুভেন্দুরা এসব উড়িয়ে দিচ্ছিল। পুরসভা থেকে প্ল্যান্ট ফাইলও উধাও। এখন কিছু নথি থেকে দেখা যাচ্ছে, পুরসভার রেকর্ড অনুযায়ী সারদার কাছ থেকে প্ল্যানবাবদ প্রায় সেই টাকা নেওয়া হয়েছে। অনুমোদনে শুভেন্দুর ভাইয়ের সই। এর থেকে প্রমাণ হচ্ছে সুদীপ্ত সেনের কোর্টে লেখা বিবৃতি ঠিক। অবিলম্বে শুভেন্দু এবং সৌমেন্দুকে গ্রেফতার করে তদন্ত হোক। সিবিআই ও রাজ্য পুলিশ, দুপক্ষই গ্রেফতার করুক।”

কুণালের আরও দাবি, “শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এটা নতুন কোনও অভিযোগ নয়। ২০১৩ সালেই আমি এই বিষয়টি বলেছিলাম।
এজেন্সির কাছে আমার লিখিত বয়ান আছে। তখন কেউ কেউ মিলে আমাকে গ্রেফতার করিয়েছিল। পৈশাচিক আনন্দ নিয়েছিল। এখন কালের নিয়মে সত্য সামনে আসার পর্ব চলছে।”

এদিন শিশির অধিকারীকেও তোপ দাগেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “শিশিরবাবু কি অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র। বাড়ির দুর্যোধন, দুঃশাসনের কীর্তি তিনি জানতেন না? কেন নিজের চোর-ডাকাত ছেলেদের সামলালেন না?” তবে কাঁথির শান্তিকুঞ্জের অধিকারী পরিবারের বাকি সদস্যরা নির্দোষ বলেই মনে করেন কুণাল। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক কারণে ভাষণ দিতে গিয়ে হয়তো অনেক সময় অধিকারী পরিবার বলে কথা বলতে হয়। তবে ওই পরিবারের সবাই যে শুভেদু-সৌমেন্দুর কুকীর্তি জানতেন বলে মনে হয় না। তাই তাঁদের প্রতি কোনও অভিযোগ নেই। তাঁর যেন রাজনৈতিক মঞ্চে আমার কোনও বক্তব্যের জন্য যেন দুঃখ না পান।”


Previous articleসংসদে হিন্দিতে শপথ নিয়েও তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহার কন্ঠে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান
Next articleশ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার পুণ্যার্থীদের ঢল তারকেশ্বরে