Sunday, August 24, 2025

শহিদতর্পণ: কেন তৃণমূলকে জীবনযুদ্ধের অধিকার রক্ষার মঞ্চ বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

Date:

একুশ জুলাই শহিদতর্পণের সঙ্গে সঙ্গে জননেত্রীর বার্তা নিয়ে গোটা তৃণমূল পরিবার এগিয়ে চলবে। দলীয় মুখপত্র ‘জাগোবাংলা’য় কলম ধরলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

একুশে জুলাই বাংলার ক্যালেন্ডারে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৯৩-তে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপর বাম জমানার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, গণহত্যা, জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হত্যার চেষ্টা, তেরোজন নিরপরাধ রাজনৈতিক কর্মীকে সংগঠিতভাবে হত্যা, শতাধিক প্রতিবাদীকে জখম করা এক কলঙ্কিত দিন। তারপর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিকরা এবং বাংলার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সচেতন নাগরিক প্রতিবছর এই দিনটিকে পালন করেন।

এই দিনটি পালনের একাধিক তাৎপর্য রয়েছে।

প্রথমত, কী প্রবল অত্যাচার, অবিচারের ভয়ঙ্কর দিনগুলি পার করে বাংলায় নতুন সূর্যোদয় আনতে হয়েছে, তা মনে রাখা, মনে করানো এবং নতুন প্রজন্মকে জানানো।

দ্বিতীয়ত, শহিদতর্পণ এবং গণআন্দোলনের সব শহিদের পরিবারের প্রতি কর্তব্যপালনের দায়বদ্ধতা অব্যাহত রাখা।

তৃতীয়ত, রাজনীতির অভিমুখ নির্ধারণে নতুন শপথ এবং নেত্রীর বার্তা। একুশে জুলাই প্রতিবার এক-একটি প্রেক্ষাপটে রাজ্য রাজনীতির দিকনির্দেশিকা হয়ে উঠেছে। এবারও আমাদের শপথ হবে একদিকে বাংলার মানুষের সমর্থন ও আশীর্বাদকে সম্মান জানিয়ে বাংলার উন্নয়ন ও সুরক্ষা আরও সুনিশ্চিত এবং দৃঢ় করা। বঙ্গবিরোধী অশুভ শক্তির চক্রান্তের মোকাবিলা করা। আর সেই সঙ্গে দিল্লি থেকে জনবিরোধী শক্তির অবসান ঘটিয়ে জনমুখী, জনস্বার্থবাহী শক্তিকে প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে বাংলার।

আর এইবছর এই একুশে জুলাই যোগ হচ্ছে আরেকটি তাৎপর্য। সেটি হল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র ‘জাগোবাংলা’র দৈনিক সংস্করণের প্রথম বর্ষপূর্তি। আগে দীর্ঘদিন ধরে ‘জাগোবাংলা’ ছিল সাপ্তাহিক। গতবছর এই একুশে জুলাই থেকে দৈনিক সংস্করণ প্রকাশ শুরু হয়েছিল। ষোলো পাতার ট্যাবলয়েড। কলকাতায় মুদ্রিত, সারা বিশ্বে ই-পেপার। আমরা চেষ্টা করেছি ‘জাগোবাংলা’কে একটি সম্পূর্ণ দৈনিক হিসেবে গড়ে তুলতে। এতে শুধু তৃণমূল কংগ্রেসের খবরই থাকছে না, থাকছে সামগ্রিক রাজনীতি, গোটা রাজ্য, দেশ- বিদেশ, ঘটনা-দুর্ঘটনা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য, খেলা, সাহিত্য, শিল্প, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিভাগ। থাকছে খবর, বিশ্লেষণ, আকর্ষণীয় সুচিন্তিত প্রবন্ধ। থাকছে তৃণমূল পরিবারের বিভিন্ন কর্মসূচি। পার্টি কী বলছে, কোন ইস্যুতে পার্টির কী অবস্থান, উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ, আন্দোলনের কর্মসূচি, সব থাকছে দৈনিকে। অন্যান্য সংবাদমাধ্যম নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু আমাদের দলের, আমাদের নেত্রীর ভাবনা যথাযথভাবে তুলে ধরা হচ্ছে ‘জাগোবাংলা’তে। আমাদের দলের সহকর্মীরা বাস্তবটা বুঝতে পারছেন। আমরা কী বলব, কীভাবে বলব, বোঝা সহজ হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি আমাদের প্রতিপক্ষ যে চক্রান্ত করছে, কুৎসা করছে, বিকৃত অপপ্রচার করছে, তার জবাব দিতেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে ‘জাগোবাংলা।’ ক্রমশ বাড়ছে পাঠক-পাঠিকার সংখ্যা। সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট লেখক-লেখিকাদের লেখায় সমৃদ্ধ থাকছে আমাদের কাগজ। উৎসব সংখ্যাটিও সংগ্রহযোগ্য। একটা সময় অনেক স্বপ্ন নিয়ে পার্টির নিজস্ব কাগজ শুরু করেছিলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্পাদক পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাপ্তাহিক হিসেবে কাগজকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। নেত্রীর স্বপ্নকে আরও সময়োপযোগী ও দৃঢ় রূপ দিতে এখন এই দৈনিক সংস্করণের পথচলা। আপনারা আরও বেশি করে পড়ুন, ই-পেপার দেখুন, হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপ তৈরি করে নিত্যনতুন পাঠক-পাঠিকাকে যুক্ত করুন গোটা বাংলায়, গোটা দেশে এবং বিশ্বজুড়ে।

সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের অধিকার অর্জন এবং অধিকার রক্ষার দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বহু লড়াই, আত্মত্যাগ, চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যে দিয়ে দল এগিয়ে চলেছে। আগামিদিনে আরও নিবিড় জনসংযোগ, আত্মবিশ্লেষণ ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে নতুন চেহারার তৃণমূল ভবিষ্যৎকে আরও সুন্দর ও উন্নততর করার লক্ষ্যে এগোতে থাকবে। আর তার কণ্ঠ হয়ে মানুষের দরবারে রোজ সকালে উপস্থিত থাকবে ‘জাগোবাংলা’। পূর্ণাঙ্গ দৈনিকের পাশাপাশি তার ফেসবুক ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমগুলি প্রতি মুহূর্তের টাটকা ছবি, খবর, লাইভ নিয়ে দর্শকের সামনে থাকছে। অত্যাধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সামগ্রিক প্রয়োগ এবং সম্পাদকীয় বিভাগের সমন্বয় বাংলার সংবাদজগতে আলাদা পরিচয়ে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে ‘জাগোবাংলা’কে। এই অভিযান আরও উন্নত, ব্যাপ্ত এবং গতিশীল করতে হবে। আপনারাও এর প্রসারে শামিল হোন।

একুশে জুলাই শহিদতর্পণের সঙ্গে সঙ্গে জননেত্রীর বার্তা নিয়ে গোটা তৃণমূল পরিবার এগিয়ে চলবে। মানুষের সমর্থন আমাদের দায়িত্বও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তৃণমূল পরিবার এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে বদ্ধপরিকর।

Related articles

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...
Exit mobile version