হাওড়ায় পাঁচলায় জাতীয় সড়কে ধৃত ঝাড়খণ্ডের ৩ কংগ্রেস বিধায়কের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৪৯ লক্ষ টাকার নেপথ্যে যে হাওলার যোগ যে রয়েছে তা এখন আরও পরিষ্কার। এই ঘটনার তদন্তে নেমে দিল্লিতে সিদ্ধার্থ মজুমদার নামক এক কংগ্রেস নেতার বাড়িতে অভিযান চালাতে যান রাজ্যের সিআইডি আধিকারিকরা। আদালতের তল্লাশি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও অবশ্য দিল্লি পুলিশ কোনওভাবে সিআইডিকে সহযোগিতা করছে না। উল্টে তাঁদের সকলকেই কার্যত আটক করে রেখেছে দিল্লি পুলিশ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক জন ইনস্পেক্টর, দু’জন এসআই এবং এক জন এএসআই। এই চার সিআইডি আধিকারিককে সাউথ ক্যাম্পাস পুলিশ স্টেশনে আটক করে বসিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এমতাবস্থায় জট ছাড়াতে দিল্লি যাচ্ছেন রাজ্য পুলিশের তিন উচ্চপদস্থ আধিকারিক।
আরও পড়ুন:আজই মন্ত্রিসভার রদবদল-শপথগ্রহণ: কারা আসছেন, কাদের সরানো হবে? অপেক্ষা কয়েক ঘণ্টার

এ প্রসঙ্গে দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়, সার্চ ওয়ারেন্টে যে আধিকারিকের নাম রয়েছে, তিনি আসেননি বলে তদন্তে বাধা দেওয়া হয়েছে। যদিও সিআইডির তরফে জানানো হয়েছে, আধিকারিকদের কাছে সার্চ ওয়ারেন্ট থাকা সত্ত্বেও তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি। সিআইডির তরফে দাবি, সিদ্ধার্থ মজুমদারের বাড়িতে তল্লাশির জন্য তাদের কাছে সার্চ ওয়ারেন্ট ছিল। এবং সমস্ত প্রোটোকল মেনে সেই মতো সাউথ ক্যাম্পাস থানাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বুধবার সিআইডির দলটি সিদ্ধার্থ মজুমদারের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গেলে সাউথ ক্যাম্পাস থানার পুলিশ তাদের বাধা দেয় বলে অভিযোগ। এর পরই সিআইডির ওই চার আধিকারিককে সাউথ ক্যাম্পাস থানায় নিয়ে গিয়ে বসিয়ে রাখা হয়।
In course of investigation of PanchlaPS Case No 276/22 a team of CID which had gone to Delhi to execute search warrant issued by Ld Court has been stopped from doing their lawful duty on the direction of @dcp_southwest. Personal intervention of @CPDelhi is requested.@DelhiPolice pic.twitter.com/xEiKFa575p
— CID West Bengal (@CIDWestBengal) August 3, 2022
The case involves seizure of huge cash from 3 MLAs of Jharkhand. Detaining & preventing the CID WB team to conduct lawful search will lead to disappearance of crucial evidence by the suspects responsibility of which will lie on the DP officers who prevented the search. @CPDelhi
— CID West Bengal (@CIDWestBengal) August 3, 2022
রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, সিআইডি এবং দিল্লি পুলিশের মধ্যে এই জট কাটাতে বুধবারই দিল্লি যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তিন শীর্ষ কর্তা। এডিজি পদমর্যাদার এক আধিকারিক এবং দু’জন আইজি পদমর্যাদার আধিকারিক থাকতে পারেন এই দলে।

এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সভাপতি কুণাল ঘোষ বলেন , দিল্লিবাহিনী বাংলায় যখন যা খুশি করবে, অথচ বাংলার তদন্তকারীরা যদি দিল্লিতে তদন্ত করতে যান, তাহলে তাদের বাধা দেওয়া হবে। দিল্লি পুলিশ তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার একটা অপচেষ্টা চালাচ্ছে।


এর আগে গতকাল কলকাতায় লালবাজারে বিকানের বিল্ডিংয়ে এক ব্যবসায়ীর দফতরে তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। মহেন্দ্র আগরওয়াল নামে ওই ব্যবসায়ী বিধাননগরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পর থেকে ফেরার তিনি। জানা গিয়েছে, তল্লাশি চালিয়ে বিপুল টাকা, রূপোর কয়েনসহ বিভিন্ন জিনিস উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। দিনভর তল্লাশি চালিয়ে ওই দফতর থেকে পাওয়া গিয়েছে ৩ লক্ষ ৭১ হাজার ৭০০ টাকা, ২৫০টি রুপোর কয়েন ও বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কের পাশবই। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী অভিযুক্ত ব্যবসায়ী শেয়ার ট্রেডিংয়ের কারবার করেন বলে জানা গিয়েছে। তবে গোয়েন্দাদের দাবি, মহেন্দ্র আগরওয়াল হাওয়ালার কারবারি। সিআইডির দাবি, ঝাড়খণ্ডের ৩ বিধায়ককে ৪৯ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন তিনিই। সন্ধ্যায় তল্লাশি শেষ করে অফিসটি সিল করে দেন গোয়েন্দারা। আজ এই ব্যবসায়ীকে আটক করেছে CID।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার বিকেলে কলকাতা থেকে ঝাড়খণ্ডগামী একটি গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে নগদ টাকা উদ্ধার হয়। পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে তিন কংগ্রেস বিধায়ক রাজেশ কাশ্যপ, নমন দীক্ষিত এবং ইরফান আনসারির কাছ থেকে উদ্ধার করে ৪৯ লক্ষ টাকা।
