Pin Code: ১৫ অগাস্ট শুধু স্বাধীনতার দিন নয়, আজ পিন কোডের জন্মদিন

আধুনিক যুগে চিঠি ব্যবহার প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু পিন কোডের গুরুত্ব এতটুকু কমেনি। কারণ ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যুগে অনলাইনে কোথাও কিছু পৌঁছে দিতে হলে বা কিনতে হলে সেই পিনকোডের শরণাপন্নই হতে হবে আপনাকে।

কোন জাদু বলে ঠিকানা খুঁজে দেয় পিন কোড (Pin Code)? বলতে পারেন! মানুষের জীবনে ঠিকানার গুরুত্ব অপরিসীম। কোনও কোনও মানুষের সারা জীবন লেগে যায় একটা স্থায়ী আর সঠিক ঠিকানা তৈরি করতে। আর সেই ঠিকানা (Address) কয়েক মুহূর্তে চিনিয়ে দেয় কয়েকটা সংখ্যা যার পোশাকি নাম পিন কোড (Pin Code)। আজ তার জন্মদিন।

পিন কোড মানে শুধু কয়েকটা সংখ্যা নয় যেন গন্তব্যের পৌঁছে যাওয়ার চাবিকাঠি। চিঠিপত্র হোক কিংবা পার্সেল – নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছাতে গেলে পিন কোড অবশ্যই দরকার। অফলাইন (Off line) হোক বা অনলাইন (Online) জামা কাপড় হোক বা খাবার দাবারের অর্ডার, পিন কোড ছাড়া সবটাই অচল। ১৯৭২ সালের ১৫ অগাস্ট থেকেই পিন কোড বা পোস্টাল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (Postal identification Number) – এর যাত্রা শুরু হয়। পোস্ট অফিসে (Post Office) প্রতিদিন হাজার হাজার চিঠি জমা পড়ে। সেগুলো সঠিক স্থান পৌঁছে দেওয়াই ডাককর্মীদের(Peon) কাজ। তবে একই নামের অনেক ব্যক্তি থাকলে সঠিক লোকের হাতে তা পৌঁছবে কী ভাবে? সেই কাজটিই করে পিন কোড।

পিন কোডে সাধারণত ৬টি নম্বর থাকে। আর প্রতিটি নম্বরের মধ্যেই ঠিকানার ইঙ্গিত লুকিয়ে থাকে। পোস্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, পিন কোডের প্রথম সংখ্যাটির মাধ্যমে বোঝা যায়, চিঠি বা পার্সেল ডাকঘরের কোন অঞ্চলের জন্য এসেছে বা সেটি কোন রাজ্যে পাঠাতে হবে। পিন কো়ডের দ্বিতীয় সংখ্যাটি সাব-জোনের (Sub -Zone) জন্য বরাদ্দ । তৃতীয় ডিজিট থেকে সাব-জোনের মধ্যে থাকা বাছাই করা জেলার বিষয়ে জানা যায়। পিন কোডের বাকি তিনটি সংখ্যা থেকে সেই এলাকার পোস্ট অফিসের নাম জানা যায়। এই বিষয়ে বলে রাখা দরকার যে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর এই সংখ্যাগুলো ভারতে পিন কোড হিসেবে পরিচিত হলেও আমেরিকায় তা ‘জিপ’ (Zone Improvement Plan) কোড নামে পরিচিত। ১৯৬৩ সালের ১ জুলাই সে দেশে ডাকবিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় যা শুরু হয়েছিল। মূলত চিঠিপত্র দ্রুত পৌঁছে দেওয়াই ছিল এর লক্ষ্য। ভারতে পিন কোডের বাস্তবায়নে কবি শ্রীরাম ভিকাজি বেলণকরের কৃতিত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই। সাহিত্যকর্মের পাশাপাশি তিনি যোগাযোগ মন্ত্রকের (Ministry of Communications) অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করতেন। পাশাপাশি ডাক এবং তার বিভাগের বোর্ডের সদস্যও ছিলেন। আপাতদৃষ্টিতে পিন কোডের বিষয়টি জটিল মনে হলেও ডাককর্মীদের দক্ষতায় গোটা প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ-সরল হয়ে উঠেছে।

আধুনিক যুগে চিঠি ব্যবহার প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু পিন কোডের গুরুত্ব এতটুকু কমেনি। কারণ ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যুগে অনলাইনে কোথাও কিছু পৌঁছে দিতে হলে বা কিনতে হলে সেই পিনকোডের শরণাপন্নই হতে হবে আপনাকে।