নিরাপত্তায় মডেল বাংলা: কেন্দ্রের রিপোর্ট তুলে বিজেপিকে তোপ তৃণমূলের

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (NCRB) তথ্য বলছে ভারতের, ১৯টি বড় শহর বা মেট্রোপলিটন শহরের মধ্যে কলকাতাই মহিলাদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ। এই শহরে ধর্ষণের রিপোর্টের পরিমাণ সবচেয়ে কম। খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ,প্রতিনিয়ত কলকাতাকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে।অথচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময় বলেছেন নারী সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

মহিলা সুরক্ষায় অন্যতম নিরাপদ শহর কলকাতা। সুরক্ষিত শহরের তালিকা বলছে, ভারতের ১৯টি বড় শহর বা মেট্রোপলিটন শহরের মধ্যে কলকাতাই মহিলাদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ। এই শহরে ধর্ষণের রিপোর্টের পরিমাণ সবচেয়ে কম। এমনই বলছে National Crime Records Bureau (NCRB)-র সাম্প্রতিকতম সমীক্ষা।এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (NCRB) তথ্য বলছে ভারতের, ১৯টি বড় শহর বা মেট্রোপলিটন শহরের মধ্যে কলকাতাই মহিলাদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ। এই শহরে ধর্ষণের রিপোর্টের পরিমাণ সবচেয়ে কম। খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ,প্রতিনিয়ত কলকাতাকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে।অথচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময় বলেছেন নারী সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, NCRB যখন এমন একটা তথ্য দেয় তখন একটা জিনিস প্রমাণিত হয় যে এটা যেহেতু কেন্দ্রের সারা দেশ জুড়ে দেওয়া তথ্য, রাজ্য এটা তৈরি করেনি। তাই এটাকে অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। কিন্তু বিরোধীরা তথ্য পাওয়ার পর যেটা তাদের পছন্দ হয় না তখন সেটা তারা অস্বীকার করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কপালে ভাঁজ পড়া উচিত। কারণ, দিল্লি হয়ে যাচ্ছে সবচেয়ে অসুরক্ষিত রাজ্য।NCRB বলে দিয়েছে, রাজধানী দিল্লি মহিলাদের জন্য নিরাপদ নয়।

মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ চিন্তিত কারণ, মহিলাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রেরও।অথচ তারা সব বিষয় নিয়ে রাজনীতি করেন। কিন্তু রিপোর্ট বলছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে নারীদের ওপর অপরাধ সব থেকে বেশি। আসাম, গোয়া, গুজরাট, হিমাচল প্রদেশে একই ছবি দেখা যাচ্ছে।
কিছুদিন আগে আমি, কুণাল ঘোষ, কাকলি ঘোষ দস্তিদার সহ তৃণমূলের প্রতিনিধি দল গিয়েছিলাম উত্তর ২৪ পরগনা কাশিপুরের থেকে কিছু দূরে বাগদায়। আমরা একেবারে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে পৌঁছেছিলাম। সেখানে বিএসএফ জওয়ানের হাতে নির্যাতিতা হয়েছিলেন এক মহিলা। আমরা সরেজমিনে দেখে এলাম ঘটনাটা কোথায় ঘটলো এবং সেই গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বললাম।গ্রামবাসী এবং মহিলারা সেখানে কতটা আতঙ্কিত সেই ছবি আমরা দেখে এসেছি। তাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রতিনিয়ত বিএসএফের সঙ্গে আপোষ করতে হচ্ছে, এটা অত্যন্ত ভয়ানক পরিস্থিতি। এই ঘটনার পরে আমাদের তরফ থেকে দাবি থাকা সত্ত্বেও বিএসএফ এর এই কীর্তি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কোনও বিবৃতি আমরা দেখিনি।বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন তাদের হাতেই যদি মহিলারা নির্যাতিত হন তাহলে সুরক্ষাটা দেবে কে ? এই প্রশ্নও তোলা হয়েছে তৃণমূলের তরফ থেকে।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, মহিলাদের নিরাপত্তা, সুরক্ষা, শিক্ষা কিভাবে দিতে হয়, কীভাবে উন্নয়ন ঘটাতে হয় তার শিক্ষা ভারতবর্ষের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে তারা নিন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে শিক্ষা নিন কীভাবে আইন-শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে হয়। পরিসংখ্যান তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, কলকাতায় খুনের সংখ্যা যেখানে ৪৫ দিল্লিতে সেখানে সংখ্যাটা ৪৫৪। ধর্ষণের অভিযোগ কলকাতায় ১১ দিল্লিতে ১২২৬। নারী নির্যাতন কলকাতায় ১২৭ দিল্লিতে ১০২৩। ডাকাতি কলকাতায় মাত্র ৩ দিল্লিতে ২৫। এই পরিসংখ্যান তুলনা করলে একটা জিনিস স্পষ্ট যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাদের নিজেদের জায়গা সামলাতে পারছেন না অথচ বাংলার পিছনে লাগছেন।

আরও পড়ুন- বাসন্তী ও মালদহ বিস্ফোরণ মামলায় NIA তদন্তের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের উপর ছাড়ল আদালত
তাদের উচিত ভারতবর্ষের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিহিংসার রাজনীতি না করে, কীভাবে সুশাসন করা যায় তার কাছ থেকে সেই শিক্ষা নেওয়া হোক। এমনকি, অন্যান্য রাজ্যের সরকারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে শিক্ষা নিন। কারণ, কলকাতা দেশের মধ্যে নিরাপদতম শহর বলে চিহ্নিত হয়েছে। এমনকি মানুষের বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়া নিয়েও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যাপক প্রশংসা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।অথচ, নরেন্দ্র মোদি সরকার আসার পর দেখা যাচ্ছে নারী নির্যাতনের হার বেড়ে গিয়েছে। NCRB রিপোর্ট বলছে, দিল্লি এখন নারী নির্যাতনে এক নম্বর। পশ্চিমবঙ্গে সামান্যতম কোনও ঘটনা ঘটলেও পুলিশ প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে।

আরও পড়ুন-কলকাতায় কবে চালু হচ্ছে জিও-র 5G পরিষেবা? দিন ঘোষণা মুকেশ আম্বানির
এদিন কুণাল তোপ দেগে বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্ভেদ্য দুর্গ। রাজনৈতিকভাবে তাঁর মোকাবিলা করতে না পেরে কেন্দ্রীয় এজেন্সি পাঠাচ্ছে বিজেপি।তাঁর দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপি ভয় পায়, তাই বারবার তাঁকে আক্রমণ করা হচ্ছে। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, “২০২১ নির্বাচনের সময় দিল্লি থেকে যতজন এসেছেন তারা আক্রমণ করতেন অভিষেককে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর অভিষেক তাদের টার্গেট।” কুণালের দাবি, রাজনীতিতে না পেরে অভিষেককে নিশানা করছে বিজেপি। কারণ অভিষেককে ওঁরা ভয় পায়। অভিষেক বিজেপির গলার কাঁটা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কুৎসা আর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মানসিক চাপ তৈরির কাজ চলছে। এটা করে অভিষেককে দমন করা যাবে না। একটা সামাজিক নেতিবাচক প্রচার এজেন্সিকে সামনে রেখে করা হচ্ছে। আইনি পথেই ইডির এই সমনের মোকাবিলা করবেন অভিষেক। জানিয়েছেন কুণাল। তাঁর দাবি, অভিষেক একাই একশো, নিজের মতো করেই ইস্পাত কঠিন স্নায়ু নিয়ে মোকাবিলা করছেন। আগেও দিল্লি গিয়েছেন। বেরিয়ে এসে আবার বিজেপি বিরোধী অবস্থান পরিষ্কার রেখেছেন।

Previous articleহাসপাতালের বিল বকেয়া, আটকে রাখার অভিযোগ পাকিস্তানের প্রাক্তন অলিম্পিয়ান মনজুর হুসেনের দেহ
Next article২০১১ থেকে প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব শিক্ষা পর্ষদের