Friday, May 9, 2025

বাংলার দুর্গাপুজো নিয়ে গবেষণা, রেড রোডের মঞ্চে সম্বর্ধনা তপতীকে  

Date:

Share post:

বাংলার মুকুটে এক নতুন পালক যুক্ত হয়েছে। ইউনেস্কো বাংলার দুর্গাপুজোকে “হেরিটেজ” তকমা দিয়েছে। ২০২১ সালে ডিসেম্বর মাসে ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি হিসেবে দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জানেন কী বাংলার দুর্গাপুজোর এই খেতাব সহজে মেলেনি!দুর্গাপুজোকে আন্তর্জাতিক দরবারে তুলে ধরার জন্য রয়েছে এক বাঙালি নারীর নিরলস গবেষণা।

তিনি তপতী গুহ ঠাকুরতা। তার নিরলস গবেষণা বিশ্ব আঙিনায় দুর্গাপুজোকে “হেরিটেজ” হিসাবে তুলে ধরেছে। ২০০৩ সাল থেকে শুরু হয় তার কর্মযজ্ঞ।২০১৮-১৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য সংস্কৃতি মন্ত্রক থেকে  তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি থেকে সামান্য গ্রান্ট নিয়ে তিনি এই গবেষণা শুরু করেন। এরপর তিনি ইউনেস্কোর একটি ফর্ম ফিলাপ করেন। ২০টি ছবি ও ১টি ভিডিও দিয়ে তিনি ইউনেস্কোর ফর্ম ফিলাপ করেছিলেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে স্বীকৃতি পায় তার গবেষণা পত্র। তারপরেই, আবহমান অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিভাগে স্বীকৃতি পায় বাংলার দুর্গাপুজো।

বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে তপতীকে সম্বর্ধনা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতি সম্পর্কে খোদ গবেষক জানান,  সোশ্যাল মিডিয়ায় যা প্রচারিত হয়েছে তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। কারণ, তার এই গবেষণার সঙ্গে আরও অনেকে যুক্ত আছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি শিল্পী থেকে শুরু করে যারা মন্ডপ তৈরি করেন, যারা থিম নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন, তাদের প্রত্যেকের কথা উল্লেখ করেন। তপতী বলেন, এই স্বীকৃতি   মুখ্যমন্ত্রী চুরি করেছেন বলে যা প্রচার হচ্ছে সেটাও ঠিক নয়। উনি আমাদের গবেষণার কথা জানার পর যোগোযোগ করোন।  আমরা আমাদের কাজ করেছি মুখ্যমন্ত্রী ও তার সরকার পুরো বিষয়টিকে প্রশাসনিক স্তরে একটা অন্য রূপ দিয়েছেন। এমনকি তিনি জানান যে কোনওদিনই তিনি প্রেসিডেন্সিতে অধ্যাপনা করেননি।

মূলত ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করতে পছন্দ করেন তপতী।তিনি অতীতের দুর্গাপুজোর সঙ্গে বর্তমান দুর্গাপুজোর সংস্কৃতির বিশ্লেষণ করে একটি বইও লেখেন। তার লেখা “নেম অফ দ্য গডেস: দুর্গাপুজাস অফ কনটেম্পোরারি কলকাতা” বইটি প্রকাশিত হয় ২০১৫ সালে। এই বইটিতে তিনি আলোচনা করেছেন কিভাবে অতীতের সাথে বর্তমানে দুর্গাপুজোর ধারা ও সংস্কৃতি পরিবর্তিত হয়েছে।

তপতী গুহ ঠাকুরতার মতে গত দুই দশকে কলকাতার দূর্গাপুজোর ভাবনা চিন্তায় অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে। আগের থেকে বর্তমানে শিল্পীদের জন্য বরাদ্দ বেড়েছে অনেকটাই। শিল্পীর শিল্প সত্তাকে প্রদর্শন করার একটা মাধ্যম হয়ে উঠেছে দুর্গাপুজো। এছাড়াও নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা এখন ফুটে উঠছে দুর্গাপুজোর থিমের মাধ্যমে। দুর্গাপুজো শুধু কোনও ধর্মীয় রীতি নয়, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অর্থনৈতিক ও সামাজিক কিছু দিকও।

 

spot_img

Related articles

অপারেশন ‘সিন্দুর’- এর সেনাদের সম্মান জানাতে কর্ণাটকে মসজিদ-মন্দিরে একযোগে প্রার্থনা

পেহেলগাম হামলার পাল্টা জবাবে ভারতের চালানো 'অপারেশন সিন্দুর' সারা দেশ জুড়ে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। ভারতীয় সেনাদের সাহসিকতায় দেশবাসীর...

মার্কিন সাংবাদিক ড্যানিয়েল হত্যার প্রতিশোধ ভারতই নিয়েছে: ব্যাখ্যা বিক্রমের

পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের (JeM) হাতে নৃশংসভাবে খুন হন মার্কিন সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্ল। ২০০২ সালের সেই ঘটনায়...

আইপিএল স্থগিত, ভারতীয় ও বিদেশি ক্রিকেটারদের ফেরানোর ব্যবস্থা বোর্ডের

এক সপ্তাহের জন্য আইপিএল(IPL) স্থগিত হয়ে গিয়েছে। ঝুঁকি নিচ্ছে না বিসিসিআই(BCCI)। দেশিয়দের সঙ্গে বিদেশি ক্রিকেটারদেরও(Foreign Cricketers) দেশে ফেরানোর...

সুন্দরবনের প্রান্তিক মানুষদের নিয়ে ‘বেহুলা এখন’: থিয়েটার জগতে নতুন চ্যালেঞ্জ নির্দেশক সৌমিত্র মিত্রর 

নকিব উদ্দিন গাজীকেউ নদীতে মাছ ধরেন, কেউ সুন্দরবনে গহীনে মধু সংগ্রহ করেন, কেউবা জঙ্গলের মধ্যে কাঁকড়া খোঁজেন। এটাই...