ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে টানা সাড়ে ৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে কার্যত বিস্ফোরণ ঘটালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যে কয়লা পাচারকাণ্ডে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, সেই ইস্যুতেই সরাসরি শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে তিনি জানিয়ে দিলেন, তদন্তকারীদের খাতায় পলাতক এক অভিযুক্তের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুধু তাই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে চলা মামলা সামলে নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন শুভেন্দু। অভিষেকের এহেন গুরুতর অভিযোগের পর রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল শুরু হয়েছে। অভিষেকের অভিযোগের আঙুল যে কয়লা কাণ্ডে অভিযুক্ত পলাতক বিনয় মিশ্রের দিকে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

শুক্রবার সিজিও কমপ্লেক্সে জিজ্ঞাসাবাদের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন অভিষেক। স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়ে দেন, “৩ বার আমাকে ডাকা হয়েছে আমার স্ত্রীকেও ৩ বার ডাকা হয়েছে। ৩ বার কেন ৩০ বার ডাকা হলে প্রতিবার আমি আসব। তদন্তে আমার তরফে যা সহযোগিতা করা যায় করব।” এরপরই সিবিআইয়ের পক্ষপাত নিয়ে সরব হন অভিষেক। জানান, যাকে ক্যামেরায় টাকা নিতে দেখা গেল, সুদীপ্ত সেন আদালতকে জানালেন তাঁর কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে তাঁর বাড়ির পথ সিবিআই কি ভুলে গেছে? একইসঙ্গে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে অভিষেক জানান, “পাচারকাণ্ডে ফেরার অভিযুক্তের সঙ্গে ৮ মাস আগে কথা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। দ্বীপরাষ্ট্রে রয়েছে সেই ফেরার অভিযুক্ত। শুভেন্দু তাকে তোমার কেস আমি দেখে নেব। এক সাংবাদিকের কাছে রয়েছে সেই অডিও ক্লিপ, সময় মতো তা প্রকাশ্যে আনব।” শুধু তাই নয় অভিষেক আরও জানান, সেই অডিও ক্লিপের ফরেন্সিক তদন্ত হোক। আদালতকে সেই অডিও ক্লিপ জমা দিতেও তিনি রাজি বলে জানান অভিষেক।

এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বিজেপি কথায় ওঠবোস করছে এমন অভিযোগ তুলে অভিষেক বলেন, “২৯ অগাস্ট আমার সভার পর আমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হল। আসলে রাজনৈতিকভাবে এরা লড়াই করতে পারছে না, তাই কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে হাতিয়ার করে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আসলে বিজেপির পথের একমাত্র কাঁটা তৃণমূল। তাই যেভাবেই হোক তাদের আটকাতে হবে।” গরুপাচার, কয়লাপাচার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে অভিষেক বলেন, “কয়লা খনি নিরাপত্তায় সিআইএসএফ, সীমান্তে দায়িত্বে বিএসএফ। তাহলে পাচার হয় কীভাবে? আসলে এই পাচারের টাকা সরাসরি অমিত শাহের কাছে গেছে। এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কেলেঙ্কারি। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একটাই কাজ ঘোড়া কেনাবেচা ও সরকার ফেলা।” নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে আত্মবিশ্বাসী অভিষেক আরও বলেন, “যদি প্রমাণ করতে পারেন আমি ৫ পয়সা নিয়েছি, তাহলে একটা ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করবেন আমি সেখানে গিয়ে ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুবরণ করব।”
