পার্থর বাড়ি, অর্পিতার ফ্ল্যাটেই নিয়োগ দুর্নীতির ব্লু-প্রিন্ট তৈরি হতো, আসতেন মানিক

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, অযোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া মোটা টাকা অর্পিতার ফ্ল্যাটে রেখে যেতেন মানিকের দেহরক্ষী।

প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী (Former Education Minister)  বর্তমানে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) নাকতলার বাড়ি এবং তাঁর বিশেষ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) হরিদেবপুরের ফ্ল্যাট থেকেই থেকে নিয়োগ দুর্নীতির যাবতীয় ব্লু-প্রিন্ট (Blue Print) তৈরি হতো।

এই দুই বাড়িতেই পার্থর সঙ্গে একাধিকবার গোপন বৈঠক করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। এবং মানিক নিজে হাতেই অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগের তালিকা তৈরি করেছেন। তাদের তদন্তে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি করল ইডি (ED) ।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, অযোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া মোটা টাকা অর্পিতার ফ্ল্যাটে রেখে যেতেন মানিকের দেহরক্ষী। নিয়োগ দুর্নীতির চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, মানিক ভট্টাচার্যর বিরুদ্ধে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছিল। সেই চিঠি পার্থ আবার মানিককেই পাঠিয়ে দেন। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁকেই সেই চিঠি কেন পাঠালেন পার্থবাবু? তাহলে কি মানিককে সতর্ক করার জন্য সেই চিঠি পাঠিয়ে দিতেন? আরও যাতে সন্তর্পণে নিয়োগ দুর্নীতি হয়!

বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ঘেঁটে তদন্তকারীরা জেনেছেন, নাকতলার বাড়িতে যাওয়ার আগে পার্থকে মেসেজ পাঠাতেন মানিক। সেই চ্যাটেই অর্পিতার ফ্ল্যাটে যাওয়ার কথাও রয়েছে বলে দাবি ইডির। সিসিটিভি ফুটেজের প্রমাণও হাতে রেখেছে ইডি। এছাড়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অর্পিতাই দিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে।

তিনিই তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, নাকতলার বাড়িতে পার্থ-মানিকের বৈঠকের সময় তিনিও উপস্থিত থাকতেন। তৎকালীন পর্ষদ সভাপতি ফাঁকা ওএমআর শিট ও ফাঁকা মাস্টার শিট নিয়ে আসতেন। সঙ্গে থাকত নামের তালিকা। পার্থর কাছে থাকা নামের তালিকার সঙ্গে নিজের আনা তালিকা মিলিয়ে নিতেন মানিক। পার্থর পরামর্শক্রমে ওএমআর শিটে নম্বর বসানো হতো। মাস্টার শিটের ফাঁকা কলামগুলি ভর্তি করতেন মানিক নিজেই। এরপর চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হতো। তাতে সই করতেন দু’জনে। সেই নথিও ইডি আধিকারিকদের হাতে এসেছে।