ক্ষমতায় আসতেই ত্রিপুরায় ভোলবদল বিজেপি সরকারের,আমরণ অনশনে চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা

কথামত শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মিটিয়ে দেওয়ার পথে যখন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বঙ্গের তৃণমূল সরকার, তখনই প্রতিবেশি রাজ্য ত্রিপুরায় কথা রাখল না বিজেপি সরকার। অনশন-আন্দোলনে রাস্তায় বসেছেন প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা। চাকরির দাবিতে রাস্তাতেই রাত কাটছে তাঁদের। কিন্তু সব জেনেও মুখে কুলুপ এঁটেছে ত্রিপুরার বিজেপি সরকার। শিক্ষকদের দুর্দশা এতটাই চরমে উঠেছে যে পরিবারের দিকে তাকিয়ে দিনমজুরের পথ বেঁছে নিয়েছেন তাঁদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, বাংলায় ক্ষমতায় আসার প্রলোভনে যেভাবে আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের ‘মিথ্যা’ প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাশে দাঁড়াচ্ছেন বিজেপি নেতারা, ঠিক এমনভাবেই ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসার আগে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছিলেন বিজেপি নেতারা।ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চিনতেও পারেন না গেরুয়া শিবিরের নেতারা ।

আরও পড়ুন:ত্রিপুরায় আক্রান্ত চাকুরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকারা, পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ দাবি

ত্রিপুরায় চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে পথে নেমেছেন  ১০ হাজারেরও বেশি চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকা। দীর্ঘদিন আন্দোলনেও সুরাহা হয়নি। তাই রাস্তাতেই শুয়ে আমরণ অনশন চালাচ্ছেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। ইতিমধ্যেই তাঁদের মধ্যে ১৪২ জন শিক্ষক মারা গেছেন। অনেকেই চাকরি না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। অনশন চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পরেছেন অন্তত ১৩ জন। কিন্তু তাতেও কোনও হেলদোল নেই ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিশ্রুতি দিয়েও  চাকরি দেয়নি বিজেপি সরকার। তাই পথে নামতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি তাঁরা এও জানান, বঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষকদের পাশে যে বিজেপি নেতারা দাঁড়াচ্ছেন, একদিন সেই দলের নেতারাই ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসার আগে আন্দোলনরত শিক্ষকদের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রেখেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের চিনতেও পারেন না পদ্মশিবিরের নেতারা। আর তাই ক্ষোভে, পেটের জ্বালায় রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

আন্দোলনকারী এক শিক্ষক জানান, ‘ত্রিপুরায় সিপিএম সরকারের ভুলে আদালতে আমাদের চাকরি গিয়েছে। আদালতের রায় অনুযায়ী ৪৬২ জনের বেশি চাকরি যাওয়ার কথা নয়। তারপরেও তৎকালীন সরকারের ভুলে ১০,৩২৩ জন শিক্ষক আজ চাকরি খুইয়ে পথে।’ প্রাক্তন সেনাকর্মীর কোটায় চাকরি পেয়েও তা হারিয়েছেন অরবিন্দ শর্মা। তাঁর বক্তব্য, ‘আমাদের সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে। সরকার বদলের আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, বিজেপিকে সমর্থন করলে চাকরি থাকবে। এখন আর বিজেপি বা সরকারের কেউ আমাদের চিনতে পারেন না।’ ফ্লাইটে দিল্লি নিয়ে গিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের কথা বলানো হয়। এমনকী, বিজেপির ভিশন ডকুমেন্টেও চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কথা রাখা হয়নি।আন্দোলনকারী চাকরীপ্রার্থীদের একাংশ বাংলার আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন,” কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিশ্রুতিতে পা দেবেন না। আমরা ভুক্তভোগী।”

Previous articleস্কুলের নোটিশ বোর্ডে রাখতে হবে শিক্ষকদের বায়োডাটা, নির্দেশিকা শিক্ষা দফতরের
Next articleমানিকের জামিনের আবেদন খারিজ, হেফাজতে রেখেই বিচার প্রক্রিয়া চালাতে চায় ইডি