Wednesday, August 27, 2025

ভারত-৭৫এ আমরা রাজনৈতিক স্বাধীনতাও সেভাবে পেয়েছি কি না, সন্দীহান গোপালকৃষ্ণ গান্ধী

Date:

চিদানন্দ দাশগুপ্ত মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এর অনুষ্ঠানে ‘ভারত-৭৫’ শীর্ষক বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী বলেন, দেশপ্রেম ও স্বাধীনতা দিবস নিয়ে বাড়তি আবেগ তো থাকবেই। এটা তো গর্বের বিষয় যে, আজ ৭৫ বছর কোনও বিদেশি শক্তি আমাদের শাসন করতে পারেনি। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হল, দেশের মধ্যেই কিছু শক্তি রয়েছে যারা জনসাধারণের মতামতকে তোয়াক্কা করে না।

তার মতে, মুলত স্বাধীন ভারত গঠিত হওয়ার সময় যে বিশ্বাসগুলি ছিল, যে সাধারণ বিষয়সূচি ও বোঝাপড়া নিয়ে গড়ে উঠেছিল দেশ, সেগুলিতে এখন বিশ্বাস রাখা হয় না। এমনকী, তারা বেশ গর্ব করেই এই সব অবিশ্বাসের কথাগুলি জাহির করে এবং বাস্তবে অনুশীলনও করে। এরকম কেউ কেউ কিন্তু জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে দেশ শাসনও করছেন। সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে, আমরা রাজনৈতিক স্বাধীনতাও সেভাবে পেয়েছি কি না, সে প্রশ্ন উঠে যায়। তবু বলব,কিছুটা হলেও যা পেয়েছি তা কম নয়। আমাদের প্রতিবেশী অনেক দেশে সেটুকুও নেই। আমাদের অন্তত নিজেদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করার স্বাধীনতা রয়েছে।

কিন্তু সামাজিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে আমরা অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছি। আসলে দেশ স্বাধীন হওয়ার প্রথম ২০ বছর আমাদের একদিকে নজর ছিল, কিন্তু তারপর থেকে ওটা অন্য বিষয়ের দিকে সরে যায়। ধর্ম-বর্ণ-জাতির মতো বিষয়গুলি তখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এরই ভিত্তিতে আমরা শ্রেণি বিন্যাসে নেমে পড়েছি। বলা যায়, এরপর থেকেই সামাজিক আর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিয়ে আমরা আর মাথা ঘামাই না। নয়া উদারনীতির চলনে আমরা অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। তারপর থেকে এই বিষয়গুলি নিয়েই রাজনীতি হয়ে চলেছে।

আমাদের প্রাথমিক যে চাহিদাগুলি খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের সঙ্গে শিক্ষা-স্বাস্থ্য, একটু সামাজিক নিরাপত্তা, এগুলির দিক থেকে আমাদের নজরটা পুরোপুরি সরে গিয়েছে। পাশাপাশি, বিদেশি কোম্পানির ওপর দিনদিন নির্ভরতা বাড়ছে, যার ফলে আমাদেরই পুঁজি খাটিয়ে তারা লভ্যাংশ নিজের দেশে নিয়ে যাচ্ছে।

স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও কত শিশু পেটের জ্বালা বুকে চেপে ফুটপাথে ঘুমোতে রায়। বেকারত্বের জ্বালা বুকে নিয়ে কত যুবকের স্বপ্ন ফানুসের মতো শূন্যে বিলীন হয়ে যায়। এরপরও ইসরো মহাকাশে রকেট পাঠায়।

চড়া মূল্যবৃদ্ধির আবহে কাজের বাজার নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। দলিতদের পরিস্থিতি আজও বদলায়নি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আজও দলিতরা অবহেলিত।

চিদানন্দ দাশগুপ্ত মেমোরিয়াল ট্রাস্টের তরফে রবিবার অভিনন্দন ব্যানার্জির হাতে সেরা ডেবিউ ছবির পুরস্কার তুলে দেন হর্ষ নেওটিয়া।শ্রীকান্ত শ্রীনিবাসন সেরা স্ক্রিপ্ট রাইটারের পুরস্কার পান। সুপ্রিয়া দাশগুপ্ত সেরা কস্টিউম ডিজাইনারের পুরস্কার পান রাখি সরকার। প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীকে সম্বর্ধনা দেন অপর্না সেন। সবমিলিয়ে এদিনের অনুষ্ঠান ছিল জমজমাট।

আরও পড়ুন- নন্দীগ্রামে তৃণমূলের ‘চাটাই বৈঠকে’ ব্যাপক সাড়া, চোখে পড়ার মতো উপস্থিতি মহিলাদের

Related articles

বিরক্ত মিঠুন? এড়াচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির একাধিক কর্মসূচি

বারবার রং বদল করে আপাতত গেরুয়াতে ঠেকেছেন ডিস্কো ড্যান্সার মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। ভোটের আগে বা বিজেপির. (BJP)...

আরজি কর কাণ্ডে ভুয়ো প্রচারের অভিযোগ! নোটিশ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীকে

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়া অভয়ার মৃত্যুকে ঘিরে ভুয়ো প্রচার মামলায় নোটিশ ধরাল কলকাতা পুলিশ। পুলিশের...

দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যে ডেঙ্গি-উদ্বেগ! টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে আশঙ্কা 

দুর্গোৎসবের মুখে একদিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে ডেঙ্গি সংক্রমণ রাজ্যবাসীর কপালে ভাঁজ বাড়াচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে...

মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী! কিনলেন শাড়ি 

বর্ধমানে প্রশাসনিক সভায় এসে হঠাৎ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হাজির মুখ্যমন্ত্রী। শুধু মহিলাদের হাতের কাজই ঘুরে দেখলেন না, কেনাকাটাও...
Exit mobile version