দুর্গাপুরে সরকারি কাজে এসে শিল্পাঞ্চলের কয়লা মাফিয়া জয়দেব খাঁ-এর সঙ্গে এক ফ্রেমে ধরা দিলেন কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি। টুইট করে সেই ছবি ফাঁস করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়লাপাচার নিয়ে যখন তৃণমূল নেতাদের নামে মিথ্যাচার করছে বিজেপি, ঠিক তখনই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কয়লা মাফিয়ার ছবি প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়।

টুইটের অভিষেকের প্রশ্ন, তিনি আশ্চর্য এই ভেবে যে মন্ত্রী খোদ কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি লঙ্কিত কয়লা মাফিয়া জয়দেব খাঁ-এর সঙ্গে কী করছেন! এরপরই অভিষেকের কটাক্ষ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কী বিজেপির পকেট ভরাট করার উপায় নিয়ে আলোচনা করছেন নাকি জাতীয় সম্পদ চুরির জন্য তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন?

I wonder what Minister @JoshiPralhad is doing with tainted coal mafia, Joydeb Khan!
Is he discussing ways of filling @BJP4India’s pockets or congratulating him on siphoning the Nation’s resources ?
The @dir_ed and the CBI have conveniently ignored this MAFIA-MINISTER NEXUS. pic.twitter.com/BhaqNH9IHy
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) November 25, 2022
এদিকে আরও একটি বিষয় নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়চেম ফের প্রকাশ্যে বিজেপির দ্বিচারিতা। কয়লাপাচার কাণ্ড নিয়ে যখন একের পর এক কুৎসা, অপপ্রচার, মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন এ রাজ্যের বিজেপি নেতারা, ঠিক তখনই বাংলায় এসে সটান এক কয়লা মাফিয়ার হোটেলে উঠলেন কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। শুধু ওঠাই নয়, সেই হোটেলে রাত্রিবাস, এমনকী ইসিএলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকও করেছেন তিনি।

গত, বুধবার দু’দিনের সরকারি সফরে দুর্গাপুর আসেন কেন্দ্রীয় কয়লা ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি। সেখানে তিনি অবৈধ কয়লা কারবারের বেতাজ বাদশা বলে পরিচিত রাজু ঝাঁয়ের বিলাসবহুল হোটেলে ওঠেন। বুধবার সন্ধ্যায় ইসিএলের শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে রাজুর হোটেলেই গুরুত্বপূর্ণ রিভিউ মিটিং করেন। সেই মিটিংয়ে নেওয়া হয় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। ওই হোটেলেই রাত্রিবাস করেন মন্ত্রী।

দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে শিল্পাঞ্চলের অবৈধ কয়লা কারবারের বেতাজ বাদশা রাজু ঝাঁ। বাম আমল থেকে এখনও পর্যন্ত রাজু একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। তার নামে অসংখ্য মামলা ঝুলছে। রাজু ঝাঁয়ের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতা গত বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই। গত বিধানসভা ভোটে একাধিকবার বিজেপির প্রচারে তাকে দেখা গিয়েছিল। যা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল বিজেপি। শিল্পাঞ্চলে ইসিএল ও সেইলের একাধিক বিলাসবহুল অতিথি নিবাস থাকতেও কেন সেই কুখ্যাত মাফিয়ার হোটেলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উঠলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বেগতিক বুঝে বিজেপি দায় চাপিয়েছে ইসিএলের ঘাড়ে।

হোটেলটি রাজু ঝাঁয়ের নামে আর নেই, এই বলে বিতর্কে জল ঢালার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু গত বছর দুর্গাপুর পুরসভা থেকে ইস্যু করা হোটেলের ট্রেড লাইসেন্সে রাজুর নাম রয়েছে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, কয়লা মন্ত্রীরা সরকারি অতিথি নিবাসেই থাকেন। কেন ওই বিশেষ হোটেলে বর্তমান কয়লা মন্ত্রীকে থাকতে হল?