কাঁথির জনসভা থেকে শুভেন্দুর দুর্নীতির পর্দাফাঁস অভিষেকের

নাম না করে শুভেন্দুকে হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিষেক বলেন, ১৫ দিন সময় দিলাম। এই কলেজের মাঠেই ফের সভা হবে। তোমার খাতা তুমি নিয়ে আসবে, আমি আমার খাতা নিয়ে আসব। সবার সামনে উলঙ্গ করে দেব তোমায়। পাশাপাশি অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, অনীশ ঘোষ, সরকারি কর্মচারী তাঁর কী করে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি থাকতে পারে?

কাঁথির (Contai) জনসভা (Public Meeting) থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) টেন্ডার দুর্নীতি (Tender Corruption) নিয়ে কার্যত বোমা ফাটালেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এদিন অভিষেক বলেন, ২০১৫ সালে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার টেন্ডার বেরিয়েছিল। এই প্রভাত কুমার কলেজরই গার্লস হস্টেলের (Girls Hostel) টেন্ডার হয়েছিল। ৮৫ লাখ টাকার বেশি পেমেন্টও হয়েছিল। কিন্তু তরুণিতা এন্টারপ্রাইজকে টেন্ডার ছাড়াই অর্ডার দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। একটা কনট্রাক্টর ও ইঞ্জিনিয়াকে দিয়ে নেক্সাস চালানো হয়েছে। একটা কন্ট্রাক্টরই সব জায়গায় কাজ পেয়েছে।

এরপরই নাম না করে শুভেন্দুকে হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিষেক বলেন, ১৫ দিন সময় দিলাম। এই কলেজের মাঠেই ফের সভা হবে। তোমার খাতা তুমি নিয়ে আসবে, আমি আমার খাতা নিয়ে আসব। সবার সামনে উলঙ্গ করে দেব তোমায়। পাশাপাশি অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, অনীশ ঘোষ, সরকারি কর্মচারী তাঁর কী করে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি থাকতে পারে? তবে এখানেই শেষ নয়। এদিন ফের বিনয় মিশ্রর সঙ্গে শুভেন্দুর কথোপকথনের অডিও ফাঁসের হুঁশিয়ারি দেন অভিষেক। তোপ দেগে তৃণমূল সাংসদ বলেন, এই অক্টোপাসের মাথা হচ্ছে শান্তিকুঞ্জ। হলদিয়ায় টাকা তোলা বন্ধ করে দিয়েছি। এখন সিবিআই, ইডি, এনআইএ-এর নাম করে বেল করিয়ে দেবে বলে টাকা তুলছে।

পাশাপাশি শনিবারের সভা মঞ্চ থেকে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই রাজ্যের সবচেয়ে বড় তোলাবাজ, ঘুষখোরের নাম কী? টিভির পর্দায় কাকে ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছে? সুদীপ্ত সেন কার নামে চিঠি দিয়েছে? এই কলেজের গার্লস হস্টেল হচ্ছিল ২০১৫ সালে। গার্লস কলেজের পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান কে ছিলেন? তাঁরাও এই সভা শুনছেন। কেউ মোবাইলে, কেউ মাইকে শুনছেন। ২০০ মিটার দূরে তো বাড়ি। এদের কাছে সততার পাঠ তৃণমূল শিখবে না। অভিষেক আরও বলেন, ও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছে বলে ওই দলের শনি, রাহুর সঙ্গে কেতুর দশাও শুরু হয়েছে। আমাকে ৪ বছর জেলে রাখলে ওর ৪০ বছর জেল হওয়া উচিত। ইডি, সিবিআই এবং বিচার ব্যবস্থার অনৈতিক নিরাপত্তা না থাকলে মানুষ এদের ধরে পেটাত। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চোখবন্ধ করে সবকিছু ছেড়ে দিয়েছিলেন। আর অধিকারী পরিবার এখানে যা খুশি তাই করেছে। তারপর পিঠে ছুরি মেরেছে।

অভিষেকের অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুরের সব জায়গা থেকে টাকা তুলত অধিকারী পরিবার। হলদিয়া থেকেও মোটা টাকা তুলেছে। কিন্তু এখন সবকিছু বন্ধ। তাই ইডি-সিবিআই কেসে বেল পাইয়ে দেব বলে টাকা তুলছে গদ্দার। আমার কাছে সব কাগজ রয়েছে, প্রয়োজনে আদালতে জমা দেব। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, ২০১১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় একজন ঠিকাদার ছাড়া কেউ কাজ পায়নি। একজনই ১৮০ কোটি টাকার কাজ পেয়েছে। একজন ইঞ্জিনিয়ারও এখান থেকে ট্রান্সফার হয়নি৷ এরপরই ঠিকাদার সুনীল মণ্ডল, এন সি গিরির সঙ্গে গদ্দারের কী সম্পর্ক তা জানতে চান অভিষেক।

Previous articleক্ষমতা থাকলে ইস্তফা দিন, উপনির্বাচনে লড়ে জিতে দেখান, অভিষেকের নিশানায় শিশির-দিব্যেন্দু
Next articleলোডশেডিং করে জিতেছিল, নন্দীগ্রামে ফের ভোট হবে, শুভেন্দুর পাড়ায় দাবি অভিষেকের