সাতসকালেই হলদিয়ার বিদ্যুৎহীন দুই গ্রাম পরিদর্শনে বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকরা!

রবিবার ছুটিরদিন সকালে হলদিয়া টাউনশিপের উপর মাখনবাবুর বাজারে একটি দোকানে চা খেতে ঢোকেন কুণাল। তখনই কিছু স্থানীয় কিছু যুবকের সঙ্গে তাঁর আলাপচারিতা হয়। চায়ের আড্ডাতেই তাঁরা কুণালকে দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অভিযোগ করেন

গতকালই বিষয়টি তাঁর গোচরে এনেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। হলদিয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যুৎহীন দুটি গ্রামে রবিবারই বিদ্যুৎ দফতরের প্রতিনিধিরা গ্রাম দেখে আসেন। আজ, সোমবার সাতসকালে সেখানে গিয়েছেন বিভাগের পদস্থ আধিকারিকের নেতৃত্বে টিম। বন্দরের জমি সংক্রান্ত আইনি জটিলতা আছে কিনা দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃএখনও বিদ্যুৎ ঢোকেনি হলদিয়ার দুই গ্রামে! কুণালের ফোন অরূপের সাড়া

বন্দর থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে হলদিয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম বিষ্ণুরামচক এবং সৌতনপুর। স্বাধীনতার পর থেকে এখনও যাদের বিদ্যুৎ আসেনি। দীর্ঘ বামজমানা এবং পরবর্তীকালে অধিকারীরাজ, বারবার আবেদন ছিল নিষ্ফলা। এবার অন্তত পদক্ষেপ শুরু হল।

প্রসঙ্গত, গতকাল রবিবার সকালে হলদিয়ায় চায়ের আড্ডা থেকে স্থানীয় যুবকদের কাছে বঞ্চনার কথা শুনে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ছুটে গিয়েছিলেন ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে। বন্দর থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বের এই ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম বিষ্ণুরামচক এবং সৌতনপুরে বিদ্যুতের খুঁটি ঢোকেনি। স্বাধীনতার এতবছর পরেও অন্ধকারে ডুবে গ্রামবাসীরা। দেখে অবাকই হলেন কুণাল। গ্রামে দাঁড়িয়েই কুণাল বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন। ব্যাস, ম্যাজিকের মতো কাজ। রবিবার ছুটির দিনেও কুণালের অনুরোধে অরূপ বিশ্বাস তৎপরতার সঙ্গে পদক্ষেপ নেন। কয়েক ঘন্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে গ্রামবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। গ্রামে এসেও কথা বলে যান সংশ্লিষ্ট দফতরের দুই আধিকারিক। শুধু তাই নয়, ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রামে ইন্সপেকশনও করা হবে বলেও জানান ওই দুই আধিকারিক। তাঁদের রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেইমতো এদিন সকাল সকাল ইন্সপেকশন করতে গ্রামে আসেন বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকরা।

কুণালের কাছে স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল, হলদিয়া শিল্পতালুক হলেও পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ এখনও বিদ্যুতের আলো দেখেননি। স্বাধীনতার এতো বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও বন্দর থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে কোথাও মাটির কাঁচা রাস্তা, কোথাও আবার আবার অবহেলায় পড়ে রয়েছে অর্ধনির্মিত কংক্রিটের রাস্তা। ভোট আসলেই রাজনৈতিক নেতাদের শুধু প্রতিশ্রুতির বন্যা। এমন অনুন্নয়ন বঞ্চনা এবং অবহেলার জন্য স্থানীয় মানুষজন সরাসরি শুভেন্দু অধিকারীকে দায়ী করেছেন। একইসঙ্গে পুরসভার এই ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের অনুন্নয়নের জন্য পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ শ্যামল আদকের দিকেও আঙুল তুলেছেন তাঁরা।

এমন অভিযোগ পাওয়ার পরই নিজের ব্যস্ত কর্মসূচির মধ্যেই ওই যুবকদের সঙ্গে হলদিয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বিষ্ণুরামচক এবং সৌতনপুর গ্রামে যান কুণাল। এই গ্রামের প্রান্তেই হলদিয়া বন্দর। সাতসকালে কুণালকে হাতের কাছে পেয়ে গ্রামবাসীরা বলতে থাকেন, “দাদা এবার কিছু একটু করুন, আমরা খুব কষ্টে আছি। শুধু ভোটের সময় নেতারা আসে, প্রতিশ্রুতি দেয়। আর ভোট চলে গেলে কেউ ফিরেও তাকায় না।”

কুণাল গ্রামের ভিতর হাঁটতে হাঁটতে সেই দুর্দশার ছবি দেখেন। এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে দাঁড়িয়েই বিদ্যুতের জন্য সংশ্লিষ্ট শীর্ষ বিভাগের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। বিষয়টি অবিলম্বে দেখার অনুরোধ জানান। এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য বলেন।

Previous articleদুর্ঘটনার কবলে কনেযাত্রীবোঝাই বাস! গুরুতর আহত ১০
Next articleজলপাইগুড়িতে ভিন রাজ্যের গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ টাকার হদিশ, গ্রেফতার ৫