শেষের পথে সাঁতরাগাছি ব্রিজের মেরামতির কাজ, এবার হাত বিদ্যাসাগর সেতুতে

বিদ্যাসাগর সেতুর পুরনো ১৮টি কেবল পরিবর্তন করা হবে। সেই কাজ শেষ হতে খুব কম করেও ৩ মাস সময় লাগবে। এই ৯০ দিন সেতুর ওপর মাত্র ১টি লেন দিয়ে দুদিকের যানবাহন চালানো হবে। যার অর্থ সেতুর দুই দিকেই প্রবল যানজটের আশঙ্কা।

শেষের পথে সাঁতরাগাছি সেতু (Santragachi Bridge) মেরামতির কাজ। বড়দিনের আগেই সব ধরনের যানবাহনের জন্য সেতু খুলে দেওয়া হবে। তবে, এখনই ওই এলাকায় যানজটের যন্ত্রণার অবসান হচ্ছে না। কারণ এবার হাত দেওয়া হবে বিদ্যাসাগর সেতুতে (Vidyasagar Bridge)। ইংরেজি বছরের প্রথম ৩ মাস বিদ্যাসাগর সেতু দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে চলেছে রাজ্য সরকার।

বিদ্যাসাগর সেতুর পুরনো ১৮টি কেবল পরিবর্তন করা হবে। সেই কাজ শেষ হতে খুব কম করেও ৩ মাস সময় লাগবে। এই ৯০ দিন সেতুর ওপর মাত্র ১টি লেন দিয়ে দুদিকের যানবাহন চালানো হবে। যার অর্থ সেতুর দুই দিকেই প্রবল যানজটের আশঙ্কা। যদিও এই যান নিয়ন্ত্রণ ঠিক কবে থেকে শুরু হতে চলেছে তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি। তবে, জানুয়ারি মাসেই সেই কাজ শুরু হয়ে যাবে যা মার্চ মাস পর্যন্ত চলতে পারে বলে পূর্ত দফতর সূত্রে খবর।

দ্বিতীয় হুগলি সেতু বা বিদ্যাসাগর সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়েছিল ১৯৯২ সালে। ৮২৩ মিটার দীর্ঘ সেতুটি ভারতের দীর্ঘতম কেবল স্টেইড সেতু। দিনে কয়েক হাজারের বেশি ছোট-বড় গাড়ি যাতায়াত করে সেখান দিয়ে। কলকাতার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গ কিংবা ভিন রাজ্যের যোগাযোগের অন্যতম যোগসূত্র এটি। ফলে যানবাহনের অত্যধিক চাপের জন্য সেতুর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ রয়েছেই। এ জন্য বছর তিনেক আগে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট তৈরি করানো হয়েছিল। সেতুর দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যের কথা ভেবে সেখানে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। সেই প্রস্তাব মতো গত বছরের শেষ দিক থেকেই সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু করে দেয় সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ‘হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স’ বা এইচআরবিসি। সেই সূত্রেই সেতুর ওপরকার দুটি দিকেরই জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের কাজ শেষ হয়েছে চলতি বছরেই। তারপর আরও একদফা সেতুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সেই সময় একদিন ৬ ঘন্টা সেতুর ওপর সম্পূর্ণ ভাবে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। সেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরেই বিশেষজ্ঞরা সেতুর ১৮টি কেবল বদলের সুপারিশ করেন। সেই প্রস্তাব মেনেই আগামী বছরের শুরুর দিকেই সেই কাজ সেরে ফেলতে চায় নবান্ন।

সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ওই সময় সেতুর উপর যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে। যাত্রীবাহী বাস, ছোট গাড়ি, দুই চাকার যান ছাড়া আর কোনও গাড়ি ওই সময় সেতুর ওপর দিয়ে চালানো হবে না। বিশেষ করে ভারী ও বড় পণ্যবাহী গাড়ির চলাচল ওই সময় সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ থাকবে। পণ্যবাহী গাড়ি কলকাতায় ঢোকার ক্ষেত্রে বা শহর থেকে বাইরে বেড়িয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে রবীন্দ্র সেতু ও নিবেদিতা সেতু ব্যবহার করবে। কিন্তু তারপরেও দিনের ব্যস্ত সময়ে সেতুর দুদিকেই তীব্র যানজট হবে বলে আশঙ্কা। আর তার জেরে টানা ৩ মাস অশেষ দুর্ভোগের মুখে পড়তে চলেছেন এই সেতু দিয়ে নিত্যদিন যাতায়াত করা কয়েক হাজার মানুষ। সাঁতরাগাছি সেতু দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে গেলেই বিদ্যাসাগর সেতুর ওপর যান নিয়ন্ত্রণের দিনক্ষণ ঠিক করা হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। ওই সময় বিদ্যাসাগর সেতুর দুই দিকেই যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য সব পক্ষের সাহায্য দরকার বলেই কলকাতা পুলিশ ও হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন। খুব শীঘ্রই এই কারণে নবান্নে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক বসতে চলেছে। সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, পরিবহনমন্ত্রী, পূর্তমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন কলকাতা ও হাওড়া পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের আধিকারিকেরা, পোর্ট ট্রাস্টের আধিকারিকেরা এবং এইচআরবিসি’র আধিকারিকেরা। সেখানেই সেতুর যান নিয়ন্ত্রণ ও তার দিনক্ষণ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেই জানা গিয়েছে।

 

 

Previous articleআগ্নে*য়াস্ত্র-সহ গ্রেফতার বিজেপি কর্মী, দূরত্ব বাড়াতে ব্যস্ত পদ্ম শিবির
Next articleআসানসোলে গিয়ে নাকখত দাও, শুভেন্দুকে তোপ কুণালের