একাই “ফরাসি বিপ্লব” ঘটাতে পারতেন, কাতারে ইতিহাসের পথে হেঁটেও ট্র্যাজিক নায়ক এমবাপে

ফরাসিদের রক্তে লেখা রয়েছে বহু লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস। তাই ১৯৮৬ সালে মারাদোনার পর যখন মেসির হাতে স্বপ্নের ট্রফি দেখতে যাঁরা বুঁদ হয়ে পড়েছিলেন, ঠিক তখনই মুঠোয় থাকা ম্যাচ প্রায় ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপে

এটাই বিশ্বফুটবলের বরপুত্র লিওনেল মেসির শেষ বিশ্বকাপ। ক্লাব হোক কিংবা দেশের জার্সিতে বিশ্বফুটবলকে অনেক কিছু দিয়েছেন মেসি। তাঁর শৈল্পিক ফুটবল গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে অকৃত্রিম আনন্দ জাগিয়েছে। তাই

কাতার বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে থেকেই, একটা কথাই বারবার সকলে বলছিলেন, লিওনেল মেসির হাতে কাপ না উঠলে সম্ভবত ”পোয়েটিক জাস্টিস” হবে না। আর ফুটবল বিধাতা সেটাই করলেন। মেক্সিকোর পর কাতার। মেসির মাথায় রাজমুকুট পরিয়ে দিয়েগো মারাদোনার আর্জেন্টিনাকে ৩৬ বছর পর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করলেন। স্কোরলাইন বলছে রবিবাসরীয় লুসেল স্টেডিয়ামে রুদ্ধশ্বাস ফাইনালের ফয়সলা হয়েছে পেনাল্টি শ্যুটআউটে টাইব্রেক করে। সেখানে আর্জেন্টিনা ৪-২ গোলে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়ে শেষ হাসি হাসে। আর এই ম্যাচে সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েও ট্র্যাজিক নায়ক হয়ে থেকে গেলেন কিলিয়ান এমবাপে। অথচ, বছর তেইশ এমবাপে একাই ঘটাতে পারতেন ফরাসি বিপ্লব। শেষপর্যন্ত ফরাসি বিপ্লব না হলেও ফুটবলের তাবড় বিশেষজ্ঞ ও পরিসংখ্যানবিদরা মনে করতে পারছেন না, এমন বিশ্বকাপের ফাইনাল এর আগে ঠিক কবে হয়েছিল, আদৌ হয়েছিল কি-না!

ফরাসিদের রক্তে লেখা রয়েছে বহু লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস। তাই ১৯৮৬ সালে মারাদোনার পর যখন মেসির হাতে স্বপ্নের ট্রফি দেখতে যাঁরা বুঁদ হয়ে পড়েছিলেন, ঠিক তখনই মুঠোয় থাকা ম্যাচ প্রায় ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপে। গতবার বিশ্বকাপের ফাইনালে করছিলেন একটি গোল। দেশ জিতেছিল বিশ্বকাপ। এ বারের ফাইনালে হ্যাটট্রিক করলেন তিনি। ১৯৬৬ সালের ইংল্যান্ডের জিওফ হার্স্টের পরে দ্বিতীয় বার কোনও ফুটবলার ফাইনালে এই কীর্তি করলেন। দ্বিতীয়ার্ধে দুরন্ত ফুটবল খেললেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হেরে মাঠ ছাড়তে হল এমবাপেকে। খেলার জন্য নায়কের মর্যাদা পেলেও বিশ্বকাপ জেতা হল না। এ বারের বিশ্বকাপে ৮ গোল করে সোনার বুট এমবাপের দখলে। কিন্তু তার পরেও চোখের জলে মাঠ ছাড়লেন তিনি। তবে যাওয়ার আগে বুঝিয়ে দিলেন, আগামিদিনে বিশ্ব ফুটবলের মঞ্চে একাই দাপিয়ে বেড়াবেন এই ফরাসি স্ট্রাইকার।