Monday, May 5, 2025

পূর্ব ইউক্রেনে যুদ্ধের মধ্যে বলকান অঞ্চলে সাবেক যুগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীন হওয়া কসোভো ও সার্বিয়ার মধ্যে উত্তেজনা  বেড়েই চলছে। গত সোমবার সার্বিয়া তার সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য ‘সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে’ রাখার ঘোষণা করে। কসোভোতে বসবাসকারী জাতিগত সার্বদের সঙ্গে প্রিস্টিনা সরকারের দ্বন্দ্বের জেরে তৈরি হওয়া উত্তেজনা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের দিকে  গড়ানোর প্রবল সম্বাবনা। সার্বিয়ার সাবেক প্রদেশ কসোভো ২০০৮ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করে।

বিশ্বের বেশ কিছু দেশ স্বীকৃতি দিলেও সার্বিয়া এখনো কসোভোকে স্বীকৃতি দেয়নি। দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা গত সোমবার থেকে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রূপ নিয়েছে। ওই দিন সার্বিয়ার সেনাবাহিনী কসোভো সীমান্ত থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে বড় ধরনের কামান ও ট্যাংক মোতায়েন করে। এর আগে সম্প্রতি কসোভোর উত্তরে সার্ব জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকায় পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর শান্তিরক্ষী বাহিনী কসোভো ফোর্স (কেএফওআর) বলেছিল, সার্বদের স্থাপন করা ব্যারিকেডের কাছে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তবে কারা, কী উদ্দেশে গুলি ছুড়েছে তা নিশ্চিত নয়।

ওয়াকিবহাল মহলের মত, রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর কসোভোর সঙ্গে সার্বিয়ার উত্তেজনা ইউরোপের বলকান অঞ্চলের ঐতিহাসিক বিবাদকে সম্প্রতি আবার চাঙ্গা করার আশঙ্কা জাগিয়ে তুলেছে। রাশিয়ার সঙ্গে সার্বিয়ার পুরনো মিত্রতার কারণে এ নিয়ে যুদ্ধের শঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার ভুসিচ বলকান অঞ্চলে ‘সার্ব বিশ্বের’ স্বপ্ন দেখেন। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কসোভোর প্রধানমন্ত্রী আলবিন কার্তিকে তুলনা করে ‘ছোট জেলেনস্কি’ আখ্যা দিয়েছেন ভুসিচ।

ঐতিহ্যগতভাবেই সার্বরা রাশিয়ার প্রতি ভ্রাতৃপ্রতিম। কারণ রুশদের সঙ্গে তারা নৃতাত্ত্বিকভাবে ঘনিষ্ঠ। ইউক্রেন আক্রমণের কারণে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের আরোপিত অবরোধে সার্বিয়া অংশ নেয়নি। তথ্য বলছে, সার্বিয়ার ৮০ শতাংশ মানুষই রাশিয়ার ওপর অবরোধের বিরোধী।

জাতিসংঘে কসোভোর সদস্য পদ ঠেকাতে রাশিয়াকে প্রয়োজন সার্বিয়ার। রাষ্ট্র হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জোটের ২২টি দেশসহ বিশ্বের ১০০ দেশের স্বীকৃতি পাওয়ার পর জাতিসংঘভুক্ত হতে চায় কসোভো। কিন্তু জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়া ‘ভেটো ক্ষমতা’ প্রয়োগ করে তা ঠেকিয়ে দিতে পারে।

কসোভোতে সার্ব পুলিশ কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের জেরে নতুন করে উত্তেজনা বেড়েছে। দুই দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মন্তব্যে তা স্পষ্ট। কেএফওআর কর্তৃপক্ষের কাছে সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার ভুসিচ আহ্বান জানিয়েছেন যাতে কসোভোর উত্তরাঞ্চলে সার্বিয়ার বাহিনীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। অন্যদিকে কসোভোর প্রধানমন্ত্রী আলবিন কার্তি কেএফওআরের কাছে দাবি করেছেন ওই এলাকার প্রবেশমুখে সার্বদের ব্যারিকেড তোলার ব্যবস্থা করতে। কসোভোর সার্বরা গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তির পাশাপাশি ওই এলাকা থেকে বিশেষ পুলিশ প্রত্যাহারের দাবি করেছে। কসোভোর মূল অংশের সঙ্গে যোগাযোগের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে তারা।

 

Related articles

Breakfast News: আজ মুর্শিদাবাদ যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী

১) মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ অশান্তির পরে সাধারণ মানুষের পাশে মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার রওনা দিচ্ছেন মুর্শিদাবাদ ২) সোমবার বহরমপুর পৌঁছবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা...

বিশ্বের বাঙালিদের পাশেই মুখ্যমন্ত্রী: লন্ডনে চর্চায় আপন বাংলা পোর্টাল

পরিবার-পরিজন থেকে মাতৃভূমির শিকড়ের টান। প্রবাসের সঙ্গে বাংলার যোগাযোগ রাখতে অনাবাসীদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) আপন...

ভালোবাসার অসাধারণ দৃষ্টান্ত হাওড়ায়! মৃত প্রেমিকাকে বিয়ে করে নজির গড়লেন সাগর

ভালোবাসার এমন পরিণতি খুব কমই দেখা যায়। প্রেমিকা প্রাণ ত্যাগ করেছেন আগেই, কিন্তু প্রেমিক তাঁর শেষ ইচ্ছেকে পূরণ...

নিরাপত্তা পরিস্থিতি ঘিরে উদ্বেগ! নাইজারে অপহৃত ছয় ভারতীয় পরিযায়ী শ্রমিক

পশ্চিম আফ্রিকার নাইজারের তিল্লাবেরি অঞ্চলে ছয়জন ভারতীয় পরিযায়ী শ্রমিককে অপহরণ করেছে সশস্ত্র জঙ্গিরা। গত ২৫ এপ্রিল ঘটে যাওয়া...
Exit mobile version