পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayet Election) আগে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। নতুন বছরের শুরুতেই “দিদির সুরক্ষা কবচ” কর্মসূচি এবং তার রূপরেখা ঘোষণা করেছেন দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ২ জানুয়ারি নজরুল মঞ্চের সভা থেকে “দিদির সুরক্ষা কবচ” রূপায়ণে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) । আগামী সোমবার থেকে রাজ্যজুড়ে সেই কর্মসূচির শুরু করবেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী-জন প্রতিনিধিরা।
দলীয় কর্মীদের সঙ্গে রাত্রিবাস এবং জনসংযোগের নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁদের খাওয়াদাওয়া দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গেই করার কথা। সোমবার থেকে সেই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা। তবে তার আগেই শুক্রবার “দিদির দূত” হয়ে তেমনই একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
দল কুণালকে পূর্ব মেদিনীপুরের বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছে। সেইমতো জেলায় রোজই কোনও না কোনও কর্মসূচি করছেন কুণাল। গতকাল, শুক্রবার দিনভর জনসংযোগ কর্মসূচির শেষে তিনি রাত কাটিয়েছেন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের পার্টি অফিসে। সেখানে সারারাত দলীয় কার্যালয়ে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে খাওয়া থাকা। নন্দীগ্রামে সন্ধ্যায় বিভিন্ন জনসংযোগ কর্মসূচিতে যোগ দেন কুণাল। চায়ের দোকান থেকে টিউটোরিয়ালে চলে আড্ডা। শেষে রাতে রুটি, আলুরদম আর নতুন গুড়ের মিষ্টি দিয়ে হয় নৈশভোজ।
এরপর হাড়হিম করা ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করে দিনের আলো ফোটার আগে শনিবারের কুয়াশা মাখা কাকভোরে শহিদ বেদীতে মাল্যদান করতে চলে আসেন। আজ, শনিবার নন্দীগ্রামে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি পালন করবে তৃণমূল। জমি আন্দোলন করতে গিয়ে ২০০৭ সালের আজকের দিনে অর্থাৎ এই ৭ জানুয়ারি ৩ তৃণমূল কর্মীর নিহত হয়েছিল নন্দীগ্রামে। এতোদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও এখন নিখোঁজ বহু মানুষ। মনে করা হয়, সিপিএম হার্মাদের হাতে তাঁরাও নিহত হয়েছেন। তাই “ভুলতে পারি নিজের নাম, ভুলবো নাগো নন্দীগ্রাম”! আজ ঐতিহাসিক ৭ই জানুয়ারি, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ দিন, সেইদিন হার্মাদ বাহিনীর দ্বারা শহীদ হতে হয়েছিলো তৎকালীন আন্দোলনকারীদের মধ্যে ভরত মন্ডল, বিশ্বজিত মাইতি, সেখ সেলিম।
শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতেই এদিন ভোরে শহিদ বেদীতে মাল্যদান করেন কুণাল-সহ স্থানীয় নেতারা। ছিলেন মন্ত্রী অখিল গিরি, আবু সুফিয়ান, বাপ্পাদিত্য গর্গ সহ নেতৃত্ব। শহিদদের স্মৃতিতর্পণ-এ গান গাইলেন মধুসূদন মণ্ডল ওরফে নারায়ণ। ভোর থেকেই শহিদ শ্রদ্ধায় মানুষের ঢল নামে নন্দীগ্রামে।