Monday, August 25, 2025

বঙ্গে রাম-বামের ঘোঁট স্পষ্ট: পঞ্চায়েতের আগে নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ারি সূর্যকান্তর

Date:

তৃণমূল(TMC) বিরোধিতায় আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে রামের নৌকায় পা দিয়েছে বাম। জায়গায় জায়গায় বিজেপির(BJP) মিছিলে দেখা গিয়েছে সিপিএমের(CPIM) পতাকা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর(Shuvendu Adhikari) মুখেও শোনা গিয়েছে বাম-প্রীতি। বহু জায়গায় তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন বাম এবং বিজেপি শিবিরের যৌথ সমর্থনপুষ্ট প্রার্থীরা। সবমিলিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে রাম-বামের ঘোঁট যখন জনসমক্ষে একেবারে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, ঠিক তখন সেখানে পর্দা চাপানোর চেষ্টা করলেন সিপিএমের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র(Suryakanta Mishra)।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাম-বাম জোট প্রকাশ্যে চলে আসতেই রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে সিপিএম। এই অবস্থায় পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘায় একটি সমাবেশ উপস্থিত হয়ে দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনি বলেন, “যদি কেউ মনে করেন যে, বিজেপিকে দিয়ে তৃণমূলকে হটানো যাবে বা উল্টো দিকেও কিছু আছেন তৃণমূলকে দিয়ে বিজেপিকে রুখতে হবে— এই রকম কেউ থাকলে লাল ঝান্ডার পার্টিতে তাঁর জায়গা নেই। জায়গা থাকবে না। এটা বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে সব জায়গায়।” একইসঙ্গে বিজেপির প্রশংসাও শোনা গিয়েছে সূর্যকান্তের গলায়। ওই সভায় তিনি বলেন, “বিজেপির সব নেতা দাঙ্গাবাজ নয়।” যদিও সূর্যের এহেন বার্তা পর বিজেপি নেতারা অবশ্য জানাচ্ছেন, সূর্যকান্ত যা বলেছেন তাতে কোনও প্রভাব পড়বে না ভোটারদের উপর। শুধু তাই নয়, পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক সমবায় নির্বাচনে বামেদের বিজেপির হাত ধরার যে ছবি দেখা গিয়েছে তা পঞ্চায়েত ভোটেও সেই প্রবণতা দেখা যাবে বলে আশঙ্কা আলিমুদ্দিনের নেতাদের একাংশের।

এদিকে সূর্যকান্তের এহেন বার্তার পর তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন রীতিমতো কটাক্ষ করে বলেন, “লাল ঝান্ডার পার্টির বাংলাতেই কোনও জায়গা নেই। বাংলার মানুষ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাঁদের শূন্য করে দিয়েছে। তাঁদের একটি মুখ, আর একটি মুখোশ। মুখ দিয়ে তাঁরা এক কথা বলেন। আর মুখোশের আড়ালে অন্য কথা বেরোয়। শূন্যের সঙ্গে কোনও কিছু গুণ করলে সেটা শূন্যই হয়।”

পাশাপাশি এপ্রসঙ্গে সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “সূর্যকান্ত বাবু যে কথা বলছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে ওনার দলের উপর নিয়ন্ত্রণ নেই। অথবা ওদের নীতিই দুমুখো নীতি। অর্থাৎ মুখে এক কথা বলব, আর কাজে অন্য কিছু করব। এই সূর্যবাবুরা একসময় কংগ্রেসের বিরোধী ছিলেন আবার তৃণমূলকে ঠেকাতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধেছেন। এরাই ১৯৮৮ সালে রাজীব গান্ধীর বিরোধিতা করতে গিয়ে অটলবিহারি বাজপেয়ির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। বামেরা বিজেপিকে ভোট দিচ্ছে বলেই বিজেপির ভোট বেড়েছে। ফলে যে বিজেপি বিরোধিতার কথা ওনারা বলছেন সেটা মুখের কথা। আসলে বিজেপি বাম কংগ্রেস মিলে গিয়েছে।”

“বিজেপির সবাই দাঙ্গাবাজ নয়”, সূর্যকান্তর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কুণাল বলেন, “এর অর্থ বিজেপির একটা অংশকে ওদের ভালো লাগতে শুরু করেছে। এটা হল নীতির বিষয়। বিজেপি ধর্মীয় আধারের ভিত্তিতে রাজনীতি করে। তাহলে উনি বলছেন বিজেপির একাংশ ধর্মনিরপেক্ষ। এটা হয় নাকি কখনও। এটা সোনার পাথর বাটি। বিজেপির আদর্শে যে রাজনীতি করে সে কি করে ধর্ম নিরপেক্ষ, প্রগতিশিল? সূর্যবাবু নিজের মন্তব্যেই প্রমাণ করে দিচ্ছেন তাঁদের এখন বিজেপির শরণাপন্ন হওয়াটা বিশেষভাবে প্রয়োজন।”

Related articles

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...

শান্তিপুরে মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ভোটে গোহারা বিজেপি! ২৬-৪-এ জয়ী তৃণমূল 

এসআইআর ইস্যু নিয়ে রাজ্যে বিজেপির মাতামাতির মধ্যে নদিয়ার শান্তিপুরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্লাস্টার কমিটির নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল...
Exit mobile version