Saturday, August 23, 2025

মহারাজ, জুতো কার ! কালনা আদালতে জুতো চুরির মামলায় জেরবার বিচারক

Date:

Share post:

সাধের ৩২৫ টাকার কালো জুতো, কবিতাপাঠের আসরে পৌঁছানোর আগে পর্যন্ত কবি মনোরঞ্জন সাহার (Manoranjan Saha) পায়ে ছিল সেই জুতো (Shoe)। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে ফিরতি পথে বেমালুম উধাও তাঁর সদ্য কেন কালো জুতো। সময়কাল ২০১৫ সালের ২৩ অগস্ট, কবিতাপাঠের আসর বসে ছিল পূর্ব বর্ধমানের কালনার (Kalna, East Bardhaman) গোপালবাড়িতে । সেই আসরে উপস্থিত ছিলেন কবি থেকে নেতা প্রত্যেকে। ছিলেন পুরসভার প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান সিদ্ধেশ্বর আচার্যও (Siddheswar Acharya)। কিন্তু রবি ঠাকুরের গবুচন্দ্র না থাকায় জুতোর সমস্যা কবি মনোরঞ্জন সমাধান করতে পারেন নি। ফলে খালি পায়ে বাড়ি ফিরে ছিলেন।পরিচিতদের কাছে আক্ষেপ করেন, আগের দিনই ৩২৫ টাকা দিয়ে জুতোটি কিনেছিলেন। কিন্তু এ কী! দিন চারেক পর হঠাৎ পুরসভার প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান সিদ্ধেশ্বর আচার্যর পায়ে সাধের সেই জুতো দেখতে পেয়ে নিজেকে আর সামলাতে পারেন নি কবি (Poet)। কালনা পুরনো বাসস্ট্যান্ডে তাঁর সঙ্গে এক প্রস্থ তীব্র বাদানুবাদ হয় সিদ্ধেশ্বরের। মনোরঞ্জন অভিযোগ করেন, তাঁর হারিয়ে যাওয়া জুতো দেখেছেন সিদ্ধেশ্বরের পায়ে। কিন্তু সিদ্ধেশ্বর মানতে নারাজ। অতএব কেস গেল কোর্টে (Kalna Court)।

৩২৫ টাকার সাধের কালো জুতো প্রাক্তন পুরপ্রধানের পায়ে দেখার পর সমাজ মাধ্যমের সরব হয়েছিলেন কবি মনোরঞ্জন। লিখেছিলেন, ‘কবির জুতো করল চুরি/হাজার ছুতো দিচ্ছে চোর/পথে ঘাটে চর্চা জোর’। অন্যদিকে অশীতিপর সিদ্ধেশ্বর আচার্যর অভিযোগ, কবিতাপাঠের আসর থেকে ফেরার সময়ে নিজের চটি না পেয়ে, অন্য এক জোড়া জুতো পরে বাড়ি ফিরেছিলেন। এর পরে কালনা থানায় গিয়ে ঘটনার দু’দিন পরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে তাঁকে জুতো চোর অপবাদ দিয়ে গালিগালাজ করেন মনোরঞ্জন। দুজনেই নিজেদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রমাণ দিচ্ছেন। তাই বিপাকে বিচারক। পুলিশ বলছে, সিদ্ধেশ্বরের অভিযোগের ভিত্তিতে যে মামলা হয়েছিল, তার সওয়াল-জবাব শুরু হয়েছে। তাঁর আইনজীবী গৌতম মালিক জানান, জুতো নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হলেও, মামলাটি হয়েছে মানহানির। এই মামলায় দোষী প্রমাণ হলে জরিমানা বা কারাদণ্ড অথবা দু’টিই হতে পারে। অন্যদিকে পিছিয়ে নেই কবির আইনজীবী পিনাকী রায়। জুতো নিয়ে এমন মামলা লড়ার অভিজ্ঞতা তাঁর প্রথম। তবে কেস জিতলে তার কবি মক্কেল যে ক্ষতিপূরণের মামলা করতে পারেন সেই হুশিয়ার দিচ্ছেন তিনি। প্রাক্তন পুরপ্রধানের জামাই-এর আবার একটা জুতোর দোকান আছে। তাই ঠিক কোন সূত্র ধরে এগোনো যাবে তাই নিয়ে রীতিমতো ধোঁয়াশায় গোটা আদালত চত্বর।

spot_img

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...