হাতের কাটা যাওয়া তিনটি আঙুল জুড়ে সনৎ পালকে নতুন জীবন দিলেন কলকাতার চিকিৎসকরা

কাটা আঙুল যে ফের আগের মতোই জুড়ে যাবে সেটা ভাবতেও পারেননি তিনি। নদিয়ার বাসিন্দা সনৎকুমার পালকে নতুন জীবন ফিরিয়ে দিয়েছেন কলকাতার  চিকিৎসকরা।

প্রতিদিনের মতো সেদিনও কাজ করছিলেন। কিন্তু বিধি বাম। অসাবধানে হাতটা যন্ত্রে ঢুকে গেছিল। বেশ স্পিডেই চলছিল কাগজ কাটার মেশিন।ফলে এক কোপে কেটে গিয়েছিল হাতের তিনটি আঙুল। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল কাজের জায়গা।প্রচণ্ড যন্ত্রণায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর যা ঘটল সেজন্য প্রস্তুত ছিলেন না তিনি।কাটা আঙুল যে ফের আগের মতোই জুড়ে যাবে সেটা ভাবতেও পারেননি তিনি। নদিয়ার বাসিন্দা সনৎকুমার পালকে নতুন জীবন ফিরিয়ে দিয়েছেন কলকাতার  চিকিৎসকরা।

জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রামের কাছে একটি কাগজের কারখানায় কাজ করেন সনৎবাবু। গত ১০ জানুয়ারি কারখানার যন্ত্রে কাগজ কাটতে গিয়ে অসাবধানে ডান হাতের তিনটি আঙুল কাটা যায় তাঁর।শুধুমাত্র তাই নয়, ওই হাতের বাকি আঙুলগুলিও গুরুতর জখম হয়। দেরি না করে তাঁর সহকর্মীরা হাত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে থাকা তিনটি আঙুল নিয়ে সনৎকুমারবাবুকে প্রথমে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে কলকাতার  সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এরপর ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।

টানা ৬ ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে তিনটি আঙুলই নিখুঁতভাবে চিকিৎসকরা জুড়ে দেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আঙুল যেখান থেকে কেটে গিয়েছিল সেখানে ধমনী, শিরা রয়েছে। ধমনীর সঙ্গে ধমনী, শিরার সঙ্গে শিরা জোড়ার পাশাপাশি স্নায়ু এবং হাতের জোড়ও নিখুঁত হওয়া প্রয়োজন। সেই সঙ্গে হাড়ও জুড়তে হয়েছে।এই অস্ত্রোপচার যথেষ্টই জটিল।তারা জানিয়েছেন,হাতের কাটা অংশটি প্রথমে সংরক্ষণ করে রাখা হয়।তারপর সেটি ৬-৮ ঘণ্টার মধ্যেই জোড়া লাগাতে হয়। এর বেশি দেরি হলে আর সেই কাটা অংশ জোড়া লাগানো সম্ভব হয় না। অস্ত্রোপচারের পরেও খেয়াল রাখতে হয় জুড়ে যাওয়া অংশে ঠিকমতো রক্ত সঞ্চালন হচ্ছে কিনা, অক্সিজেন সরবরাহ হচ্ছে কিনা। জোড়া লাগানো অংশ নাড়াচাড়া করা যাচ্ছে কিনা, তাতে স্নায়ু ঠিকমতো কাজ করছে কিনা সেটা পর্যবেক্ষণ করাও বড় ব্যাপার। সনৎবাবু এখন অনেকটাই ভাল আছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তার জোড়া দেওয়া আঙুলগুলি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছে।