আমন্ত্রণ পেয়েও দিল্লিতে ‘পালিয়েছেন’ বিজেপি নেতারা! মিথ্যাচার ফাঁস তৃণমূলের

রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর এই প্রথমবার দু’দিনের রাজ্য সফরে এসেছেন দ্রৌপদী মুর্মু (President Draupadi Murmu)। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রপতিকে নাগরিক সম্মান প্রদান করে রাজ্য সরকার। রাষ্ট্রপতিকে এই সম্মান প্রদর্শন নিয়ে রাজ্য (Mamata Banerjee) ও শাসকদল তৃণমূলকে নিয়ে স্বভাবসিদ্ধ মেজাজে মিথ্যাচার করেন বিরোধী দলনেতা তথা দলবদলু বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর দাবি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ (NDA) প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর বিরুদ্ধে যাঁরা ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরাই এখন সম্মান জানাতে উঠেপড়ে লেগেছেন। অথচ যে বিজেপি দ্রৌপদীকে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরাই অনুষ্ঠানে ব্রাত্য। আর শুভেন্দুর এই মিথ্যাচারের পাল্টা দিল তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার সন্ধেয় দলের তরফে সাংবাদিক সম্মেলন করে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় আসল সত্যি! এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যের দুই মন্ত্রী শশী পাঁজা (Sashi Panja) ও বীরবাহা হাঁসদা (Birbaha Hansda)।

এদিন মন্ত্রী শশী পাঁজার অভিযোগ, বিজেপি চাইছে রাষ্ট্রপতির দু’দিনের সফরে কীভাবে তাল কাটা যায়! আর সেকারণেই তাঁরা কিছু মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। আর সেই মিথ্যাচারই এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রকাশ্যে আনা হল গেরুয়া বাহিনীর মিথ্যাচারের আসল স্বরূপ। এদিন মন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, বাংলা থেকে নির্বাচিত ও মনোনীত সমস্ত প্রতিনিধিদেরই সোমবার নেতাজি ইন্ডোরের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল। তার সমস্ত প্রমাণ তুলে ধরে মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, কিন্তু এদিনই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দিল্লি থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ করছেন, রাজ্যপালের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নাকি কাউকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আর শুভেন্দুর পাশেই দাঁড়িয়েছেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। আর সেই ইস্যুতেই রাজ্যের বিরোধী দল তথা গেরুয়া শিবিরের সমস্ত অপপ্রচার ও মিথ্যাচার ফাঁস করে দেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। তিনি দলের সপক্ষে ‘বিজেপি কট লাইং’ (BJP Caught Lying) শিরোনামে একটি ভিডিও ফুটেজ সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। আর যে ভিডিও ফুটেজ থেকেই স্পষ্ট বিজেপির মিথ্যাচারের আসল চেহারা।

শশী পাঁজা অভিযোগ করেন, কোনও বিজেপি সাংসদ বলছেন তাঁরা কোনও চিঠি পাননি এবং অন্যরা বলছেন চিঠি পেয়েছেন, কিন্তু অনুষ্ঠানে যাবেন না। আর এর থেকেই পরিষ্কার হয়ে যায় কারা মিথ্যা বলছেন আর কারা সত্যি। দলের তরফে সকালেও টুইট করে জানান হয়েছিল, আবারও অ্যান্টি বেঙ্গল গ্যাং বাংলার বিরুদ্ধে কুৎসা ও অপপ্রচার চালাতে দিল্লি পৌঁছেছে। আর তাঁরাই রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে বড় বড় কথা বলছেন যারা আমন্ত্রণপত্র পাওয়া সত্ত্বেও অনুষ্ঠান মঞ্চে আসা তো দূর, রাজ্য ছেড়ে দিল্লিতে পালিয়ে গিয়েছেন। আর এর থেকেই পরিষ্কার রাষ্ট্রপতির প্রতি কতখানি শ্রদ্ধাশীল বিজেপি নেতারা। তবে এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে পাশে নিয়ে শশী মনে করিয়ে দেন বীরবাহা ও তাঁর জনজাতির উদ্দেশে বিরোধী দলনেতার করা নক্কারজনক মন্তব্য। তবে আজ অবধি সেই মন্তব্যের জন্য একটুকু ক্ষমাও চাননি শুভেন্দু। আর বীরবাহা নিজেই সেদিনের অপমান ও কুকথার কথা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। পাশাপাশি তৃণমূলের তরফে টুইট করে আমন্ত্রণ পত্র তুলে ধরা হয় সেখানে দেখা যাচ্ছে, রাজ্য বিজেপির সদর দফতরের অফিস অধিকর্তা বিজেপির নেতা ও মুখপাত্র প্রণয় রায় দু’দিন আগেই সেই সরকারী আমন্ত্রন পত্র সই করে জমা নিয়েছেন।

পাশাপাশি এদিন তিলজলার ঘটনাকে অত্যন্ত মর্মান্তিক ও নিন্দনীয় বলেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। তবে তিনি মনে করিয়ে দেন, কলকাতা পুলিশ অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনেছে। ইতিমধ্যে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ এবং খুব শীঘ্রই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে। তবে মন্ত্রী সাধারণ মানুষকে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, অপরাধীদেরর কোনও ছাড় নেই। সবাইকে যথোপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।

 

 

Previous articleরাহুল ইস্যুতে দূরত্ব ঘুচল! উত্তাল সংসদ, কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূল
Next articleMithun Chakraborty: ১৩ বছর পর ওপার বাংলার ছবিতে ফিরছেন ‘হিরো’ মিঠুন চক্রবর্তী