সম্প্রতি রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় বাম জমানায় স্বজনপোষণ ও নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে। সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakravorty) থেকে সুশান্ত ঘোষ (Sushanta Ghosh), সিপিএমের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও তাঁদের পরিবারের নাম উঠে আসছে চিরকুটে চাকরি ও নিয়োগ দুর্নীতিতে। এবং বাম আমলে অনিয়ম করে পার্টির হোলটাইমাদের পরিবারের অযোগ্য লোকেদের যে মুড়ি মুরকির মতো চাকরি দেওয়া হতো, তার প্রকাশ্যে আনছেন সিপিএমের (CPIM) লোকেরাই। প্রাক্তন সিপিএম নেতা সমীর পুততুন্ড (Samir Pututundu) পর্যন্ত বলছেন, বাম জমানায় যোগ্যদের বঞ্চিত করে চিরকুটে চাকরির ব্যাপক প্রচলন ছিল।

প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক (Forward Block) নেতা তথা বর্তমানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ সম্প্রতি দাবি করেছেন, বাম আমলে দলের কোটায় চাকরি হতো। যোগ্যতা না দেখেই চাকরি দেওয়া হতো। শরিক দলের সুপারিশেও চাকরি হয়েছে। উদয়নবাবুর কথায়, “বাম আমলে আমিও ফরওয়ার্ড ব্লক করতাম। বলতে বাধা নেই চাকরি ভাগ হতো। বড় অংশ পেত সিপিএম। কারণ তারা বড় পার্টি। জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম পার্টি হিসেবে পরের অংশ পেত ফরওয়ার্ড ব্লক। বাকী সামান্য অংশ আরএসপি (RSP), সিপিআইয়ের (CPI) জন্য ভাগ হতো। সেই কোটা অনুযায়ী যাদের নাম থাকতো তারাই চাকরি পেতেন। শুধু দেখা হত মাধ্য়মিক পাস কিনা। কীভাবে পাস করছে তা দেখার দরকার নেই। একটা সার্টিফিকেট হলেই হবে। অর্থাৎ, কোটায় চাকরি। সেটা কী যোগ্যতা! শুধুমাত্র একটা কোটা পেলেই হতো। অনেককে চাকরি দিয়েছিলেন আমার বাবা। আমিও চাকরির জন্য সুপারিশ করেছি।”

তবে উদয়নের এই বক্তব্যকে তখন “পাগলামি” বলে মন্তব্য করেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। গত, শনিবার ফিরহাদ হাকিম উদয়নের মন্তব্য নিয়ে বলেন, “ও কী পাগলের মতো বকছে তা আমার জানা নেই। চিরকুট দিয়ে কোনওদিন লোক ঢোকানো যায় না। এর জন্য আবেদনপত্র লাগে।”

এবার সেই ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) গলাতেই শোনা গেল অন্য সুর। এবার একেবারে উল্টো কথা বললেন। উদয়নের কথার সুর টেনেই আজ, সোমবার ফিরহাদ বললেন, “চিরকুট বা লিস্ট যাই হোক না কেন বাম আমলে নিয়ম-বহির্ভূতভাবেই চাকরি হয়েছে। তা না হলে বাম নেতাদের পরিবারের লোকজন চাকরি পান কী করে?”
