গরু পাচারেও নাম উঠে আসছে বিজেপি ঘনিষ্ঠ কয়লা মাফিয়া রাজুর

নিহত রাজু ঝা-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল গরু পাচারকাণ্ডের কিংপিন আবদুল লতিফের। কয়লা পাচারকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অনুপ ঝা বা লালার একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল আবদুল লতিফ

শনিবার ভরসন্ধ্যায় বর্ধমান জাতীয় সড়কের উপর আততায়ীর গুলিতে খুন হয়েছে কয়লা মাফিয়া তথা বিজেপি নেতা রাজু ঝা। রাজুর সঙ্গে দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, লক্ষ্মণ ঘড়ুইয়ের মতো প্রভাবশালী বিজেপি নেতাদের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তারই মাঝে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

নিহত রাজু ঝা-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল গরু পাচারকাণ্ডের কিংপিন আবদুল লতিফের। কে এই আবদুল লতিফ? কয়লা পাচারকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অনুপ ঝা বা লালার একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল আবদুল লতিফ। কয়লা পাচার দুর্নীতির তদন্তে যখন সিবিআই ও ইডি তৎপর হয়ে ওঠে, তখন ২০২১ সালের পর থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় লালা ও লালার সহযোগী সিন্ডিকেট। সেই সময় আবদুল লতিফ ধান্দা বন্ধ হয়ে যায়। রাজু ঝা-এর সঙ্গে যোগ দেয় সে।
বীরভূমে বকলমে লতিফের ব্যবসা সামলাতেন রাজুই। শুধু গরু-কয়লা নয়, লতিফের অন্যান্য ব্যবসাও দেখাশোনা করত রাজু। এমনকী সেখানে বিপুল বিনিয়োগও করেছিল। লতিফকেও সিবিআই তলব করেছিল। কিন্তু হাজিরা দেয়নি। সূত্রের খবর, বাংলাদেশে গাঢাকা দিয়েছিল লতিফ। দিন দশেক আগে বীরভূমে ফেরে সে। শনিবার সন্ধেয় সেই আবদুল লতিফের গাড়ি (নম্বর: WB48D7032)-তেই খুন হয় রাজু। যা ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

গতকাল, শনিবার সন্ধ্যায় রাজু বিলাসবহুল গাড়িতে চেপে দুর্গাপুর থেকে কলকাতার দিকে যাচ্ছিল। শক্তিগড়ে ল্যাংচা হাবের হঠাৎ গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। এই সময় অন্য আরেকটি গাড়ি থেকে দুই দুষ্কৃতী পিস্তল হাতে নেমে আসে। রাজু গাড়ির সামনের সিটেই বসেছিল। দুষ্কৃতীরা তাকে লক্ষ্য করে পরপর এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। রাজুর বুকে গুলি লাগে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে দুষ্কৃতীরা জানালার কাচ ভেঙেও গুলি চালাতে থাকে। ঘটনাস্থলেই ওই মাফিয়া মারা যায়।

উল্লেখ্য, দুর্গাপুরের প্রভাশালী ব্যবসায়ী বলে পরিচিত রাজু বাম আমল থেকেই কয়লা পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিল। ২০১১ সালের পর তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর তার কারবারে ভাঁটা আসে। ২০১৯ সালের পর কয়লা পাচার প্রায় বন্ধ-ই হয়ে যায়। সেইসময় সে বিজেপিতে যোগ দেয়। তার নামে একাধিক মামলা হয়। পশ্চিম বর্ধমানের বেশ কয়েকটি থানায় তার নামে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে দুর্গাপুরে থাকতেন তিনি। সেখানে তাঁর একটি হোটেলও রয়েছে। যদিও বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁকে দেখা যাচ্ছিল না। মাসখানেক আগেও দুর্গাপুরের একটি জায়গায় গুলি চলে। সেখানে উপস্থিত ছিল রাজু ঝা। তখনও রাজু ঝা-ই টার্গেট ছিল বলে মনে করছে পুলিশ। যদিও সে যাত্রায় বেঁচে যায় রাজু।