Wednesday, August 27, 2025

মমতার সততার মূর্ত প্রতীক, ইটভাটায় কাজ করে সংসার চালান পঞ্চায়েত প্রধান

Date:

চাল নেই, চুলো নেই। বর্ষায় ছাতা নেই, শীতে কাঁথা নেই। নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর সংসার। সেই পরিবার থেকেও ভোটে দাঁড়িয়ে জনপ্রতিনিধি। সেখান থেকে পঞ্চায়েত প্রধান। এখনও রোদে পুড়ে, জলে ভিজে ইটভাটায় ৫০০টাকা রোজের শ্রমিক। নেননি কোনও সরকারি সুবিধাও। দুর্নীতি নিয়ে যখন তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি, ঠিক সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এমনই এক সৎ-নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সন্ধান মিলেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে। যদিও তথাকথিত সংবাদমাধ্যমে এই পঞ্চায়েত প্রধানের জীবনযাত্রার ছবি তুলে ধরা হয় না। প্রাইম টাইমে তাঁর সততা নিয়ে চর্চাও হবে না।

আরও পড়ুন:শীতলকুচিতে তৃণমূল সদস্যের বাড়িতে ঢুকে কু*পিয়ে খু.ন! মৃ*ত পরিবারের ৩ জন

রাজ্যে যখন শাসক দলের একের পর এক হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত প্রধান, সদস্যের নাম জড়িয়েছে দুর্নীতিতে, সেখানে ব্যতিক্রম বালুরঘাটের ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মুকুল মুর্মু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সততার প্রতীক নিয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে জয়লাভ। আর সেই ঘাসফুল প্রতীক-ই মুকুলবাবুকে সৎতার
অঙ্গীকারে আবদ্ধ করেছে। লোভবর্জন করে নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষকে সেবা করার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

পঞ্চায়েত প্রধান মানেই আমাদের সামনে ভেসে ওঠে এক কাল্পনিক ছবি। পেল্লাই বাড়ি হবে, বিলাসবহুল গাড়ি হবে, তা কিন্তু নয়। ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান মুকুলবাবু থাকেন টিনের চালার মাটির বাড়িতে। আর প্রতিদিন সকালে ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতে যান। সেখানে তিনি আরও দশজনের মতো একজন শ্রমিক। আর সেই কাজ শেষ হলে যান পঞ্চায়েতে। তখন প্রধান। আবার প্রধানের দায়িত্ব শেষ করে ফের যান ইটভাটায়। শাসকদলের প্রধান হয়েও সংসারের খরচ জোগাড়ে তাঁকে নামতে হয়েছে খেতমজুরের পেশায়। ইটভাটার শ্রমিকের কাজে। ইটভাটায় ইটের ছাঁচ তৈরির কাজ করেন। তাই বলে নিজের পেট চালাতে গিয়ে পঞ্চায়েতের কাজকর্মে কোনও ফাঁকি দেন না। প্রধানের কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শই আমার অনুপ্রেরণা। সেই লক্ষ্যেই পথ চলছি।

বালুরঘাটের ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চকরাম এলাকার বাসিন্দা মুকুলবাবু। মাটির বাড়িতেই থাকেন। ছোট থেকেই পড়াশুনা করার ফাঁকে শ্রমিকের কাজ করতেন। আর্থিক কারণে মাধ্যমিক পাশ করার পরে আর লেখাপড়া করতে পারেননি। শ্রমিকের কাজ করেই সংসার চালিয়ে গিয়েছেন। পরোপকারী ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তি থাকায় গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুকুল মূর্মূকে তৃণমূল প্রার্থী করে। ভোটে জয় লাভ করে তিনি প্রধান হন। তবে প্রধান হওয়ার পরেও তাঁর জীবনযাত্রা পাল্টায়নি। প্রতিদিন সকালে সাইকেল নিয়ে এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষের সমস্যার কথা শোনেন। এরপর ইটভাটায় কাজে যান। তারপর পঞ্চায়েত অফিসের কাজ শেষ করে আবার ফিরে যান ইটভাটায়।

মুকুল মুর্মু বলেন, “প্রধান হয়ে সরকারি প্রকল্পের সুযোগ নিয়ে নিজের জন্য কিছু করব কেন? তাতে তো এলাকাবাসীর কাছে আমার মাথা হেঁট হয়ে যাবে। আর সেই মানসিকতা নিয়ে কাজ করার জন্য আমাকে এই চেয়ারে বসানোও হয়নি। আমি থাকব পাকা বাড়িতে আর গ্রামের গরিবরা থাকবে ভাঙা মাটির বাড়িতে, তা হয় না। আমি যা কাজ করি, তাই দিয়েই সংসার চালাই। রোজ ইটভাটায় কাজ করে সময় মতো অফিসে যাই। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শই আমার অনুপ্রেরণা। সেই লক্ষ্যেই পথ চলছি। আগামীতেও চলবো।”

 

 

Related articles

বিরক্ত মিঠুন? এড়াচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির একাধিক কর্মসূচি

বারবার রং বদল করে আপাতত গেরুয়াতে ঠেকেছেন ডিস্কো ড্যান্সার মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। ভোটের আগে বা বিজেপির. (BJP)...

আরজি কর কাণ্ডে ভুয়ো প্রচারের অভিযোগ! নোটিশ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীকে

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়া অভয়ার মৃত্যুকে ঘিরে ভুয়ো প্রচার মামলায় নোটিশ ধরাল কলকাতা পুলিশ। পুলিশের...

দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যে ডেঙ্গি-উদ্বেগ! টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে আশঙ্কা 

দুর্গোৎসবের মুখে একদিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে ডেঙ্গি সংক্রমণ রাজ্যবাসীর কপালে ভাঁজ বাড়াচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে...

মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী! কিনলেন শাড়ি 

বর্ধমানে প্রশাসনিক সভায় এসে হঠাৎ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হাজির মুখ্যমন্ত্রী। শুধু মহিলাদের হাতের কাজই ঘুরে দেখলেন না, কেনাকাটাও...
Exit mobile version