সমলি.ঙ্গ বিবাহ নিয়ে জানাতে হবে মতামত! সুপ্রিম শুনানি চলাকালীন রাজ্যগুলিকে চিঠি কেন্দ্রের

রাজ্যের মুখ্যসচিবদের দেওয়া চিঠিতে সাফ জানানো হয়েছে, আগামী দশ দিনের মধ্যে সমলিঙ্গের বিবাহ নিয়ে মতামত জানাতে হবে। আর সেই বিষয়টিতে যাতে কোনও বিলম্ব না হয়।

শুধুমাত্র যৌনাঙ্গের উপর ভিত্তি করেই পুরুষ এবং মহিলাকে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। মঙ্গলবারই সমলিঙ্গ বিবাহের (Same Sex Marriage) শুনানি চলাকালীন এমনই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court of India) প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের (Chief Justice DY Chandrachud) নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ। কেন্দ্র তার আগেই দেশের শীর্ষ আদালতে একটি হলফনামা জমা দিয়ে সাফ জানিয়েছিল সমলিঙ্গ বিবাহকে যদি স্বীকৃতি দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে তা সমাজের উপর একটা খারাপ প্রভাব পড়বে এবং তা সমাজকে নষ্ট করবে। আর এমন অবস্থায় সমলিঙ্গ বিবাহের আইনি স্বীকৃতি নিয়ে রাজ্যগুলির (States) মতামত জানতে চাইল কেন্দ্র। বুধবারই এই বিষয়ে দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলির মতামত স্পষ্টভাবে জানতে চাইল কেন্দ্রীয় সরকার। আর কেন্দ্রের এমন সিদ্ধান্তের পর স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবারের পর বুধবারও সমলিঙ্গ বিবাহের পরবর্তী শুনানি শুরু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এরই মধ্যে কেন্দ্রের তরফে চিঠি লিখে রাজ্যগুলির মতামত জানতে চাওয়া হল। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টেও সমলিঙ্গ বিবাহের মামলায় রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পক্ষ হিসাবে যুক্ত করার দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যে শীর্ষ আদালতে হলফনামা দিয়েছে কেন্দ্র। যদিও সুপ্রিম কোর্ট সেই অনুরোধ নাকচ করে দিয়েছে। তবে রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলির মতামত আগামী দশ দিনের মধ্যে জানাতে হবে। এর আগে রাজ্যগুলির সমলিঙ্গের বিবাহের বিষয়ে মতামত সুপ্রিম কোর্টে জানাতে পারবে কেন্দ্র, এমনটাই জানানো হয়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে এবার রাজ্যগুলিকে চিঠি দিল কেন্দ্র। বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবদের দেওয়া চিঠিতে সাফ জানানো হয়েছে, আগামী দশ দিনের মধ্যে সমলিঙ্গের বিবাহ নিয়ে মতামত জানাতে হবে। আর সেই বিষয়টিতে যাতে কোনও বিলম্ব না হয়। তবে বুধবার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী মুকুল রহতগি দাবি করেন, ১৯৫৪ সালের স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্টের সাহায্যেই সমলিঙ্গের দু’জনের বিবাহকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেওয়া সম্ভব। এজন্য পৃথক আইন করার প্রয়োজন নেই। এরপরই ৩৭৭ ধারার কথা মনে করিয়ে বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানান তিনি।

তবে মঙ্গলবারই কেন্দ্রের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা প্রশ্ন করেন, আদালতের বেঞ্চ কি আদৌ সমলিঙ্গের বিবাহকে ‘বিশেষ বিবাহ আইন’-এ স্বাকৃতি দেওয়া নিয়ে শুনানি করতে পারে? যদিও এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় স্পষ্ট জানান, আদালতের মামলাকারীদের বক্তব্য শুনতে আগ্রহী। তাই সব পক্ষের সওয়াল জবাব শুনেই তবে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হবে। বুধবার শীর্ষ আদালত এই অনুরোধ নাকচ করার পর কেন্দ্র আদালতকে অনুরোধ করেছে, অন্তত রাজ্যগুলির সঙ্গে পরামর্শ করার এবং তাদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে মতামত জানানোর অনুমতি দেওয়া হোক। ততদিন পর্যন্ত সমলিঙ্গ বিবাহের আইন স্বীকৃতির মামলাটিকে মুলতবি রাখা উচিত বলেও জানিয়েছে কেন্দ্র। আর কেন্দ্রের এমন বক্তব্য শোনার পর দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, আদালতের কী করা উচিত তা আদালতই ঠিক করবে।

পাশাপাশি মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, যথার্থ পুরুষ বা নারী বলতে কী বোঝায়, তা নিয়ে নিশ্চিত কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব নয়। বেঞ্চ আরও জানায়, জন্মের সময় কে কোন যৌনাঙ্গ নিয়ে জন্মেছে তা নারী-পুরুষ যাচাই করার একমাত্র মাত্রা নয়। এরপরই বিষয়টি অত্যন্ত ‘জটিল’ বলেও উল্লেখ করেছে বেঞ্চ।

 

 

Previous articleউন্নাও গণ*ধর্ষণকাণ্ড: জামিনে বেরিয়েই নির্যাতিতার বাড়িতে আ*গুন ধ.র্ষকদের! অ.গ্নিদগ্ধ নাবালিকার সন্তান ও বোন
Next article‘সংকটের মুহূর্তে রাজনীতি নয়’, সুদানে আটক ভারতীয় প্রসঙ্গে কংগ্রেসকে তোপ জয়শঙ্করের