কালিয়াগঞ্জকাণ্ডে নয়া তথ্য পেল পুলিশ, মৃ.ত্যু নিয়ে ‘শকুনের রাজনীতি’ বিজেপির: কটাক্ষ কুণালের

কুণাল সাফ জানান, বিভিন্ন সূত্র ও এলাকা মারফৎ যে খবর সামনে আসছে সেখান থেকে জানা যাচ্ছে, আসলে যে ধর্ষণ বা গণধর্ষণের যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সত্যি কী না? নাকি ব্যক্তিগত কোনও সমস্যা, নাকি এটি নিছকই বিষপান করে আত্মহত্যা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ধর্ষণ বা খুন নয়। মূলত প্রেমঘটিত কারণেই বিষপান করে আত্মঘাতী হয়েছে কালিয়াগঞ্জের (Kaliagaunj) ছাত্রী, এমনই অভিযোগ সামনে আসছে। ময়নাতদন্তের (Post Mortem Report) প্রাথমিক রিপোর্ট সামনে আসার পর বিষপানের বিষয়টি জানা গিয়েছে বলে অভিযোগ পুলিশ সুপারের। এদিকে প্রশাসনের কাছে থাকা সমস্ত প্রমাণ যথাসময় আদালতে পেশ করা হবে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনই জানিয়েছেন রায়গঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার সানা আখতার। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতে পেশ করলে বিচারক ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে কালিয়াগঞ্জের মর্মান্তিক ছাত্রীমৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে চড়ছে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক পারদ। ইতিমধ্যে জেলাশাসকের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে দিল্লিতে নালিশ জানাতে চলেছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন (NCPCR) এবং এসটি কমিশন।

রবিবারই কালিয়াগঞ্জে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো। তিনি ঘটনার ময়নাতদন্ত ও মেডিক্যাল রিপোর্ট চেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও প্রশাসনের তরফে কেউ তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি বলে অভিযোগ। আর সেকারণেই রীতিমতো ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি জানান, জেলাশাসক সিভিল সার্ভিস আইন লঙ্ঘন করেছেন। আর সেকারণেই তাঁর বিরুদ্ধে দিল্লি গিয়ে তিনি নালিশ জানাবেন। তবে এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) অভিযোগ, কালিয়াগঞ্জে যে ঘটনা ঘটছে তা বিজেপির (BJP) “আরোপিত বিশৃঙ্খলা” ছাড়া আর কিছুই নয়। যে মেয়েটি মারা গিয়েছেন তাঁর মৃত্যু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কোনওমতেই মৃত্যু কাম্য নয়। পুলিশ ইতিমধ্যেই মেয়েটির ময়নাতদন্ত করেছে এবং ইতিমধ্যে ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফি হয়েছে। পুলিশ প্রস্তুত সবরকম প্রশ্নের উত্তর দিতে। তবে এরপরই কুণাল সাফ জানান, বিভিন্ন সূত্র ও এলাকা মারফৎ যে খবর সামনে আসছে সেখান থেকে জানা যাচ্ছে, আসলে যে ধর্ষণ বা গণধর্ষণের যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সত্যি কী না? নাকি ব্যক্তিগত কোনও সমস্যা, নাকি এটি নিছকই বিষপান করে আত্মহত্যা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তবে বিজেপি মৃতদেহ নিয়ে ‘শকুনের রাজনীতি’ করছে বলেও এদিন তোপ দাগেন কুণাল। তাঁর সাফ প্রশ্ন তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই কীভাবে বিজেপি নোংরা রাজনীতিতে মেতে উঠেছে তার উদাহরণ টেনে আনেন কুণাল। পাশাপাশি ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন তোলেন, কিন্তু কেন পুলিশকে মৃতদেহ নিয়ে ছুটতে হল? কারা ক্যামেরার পিছন থেকে আসল চক্রান্ত করছিল? তবে এই রকমের সামাজিক সম্পর্ককে রাজনীতির সঙ্গে টেনে আনা উচিত নয়। কেন্দ্রের টিম ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে রাজ্যের কোনও উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে কথা না বলে যে রাজনৈতিক মন্তব্য করে বিষয়টিতে প্ররোচনা দিচ্ছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে পুরো বিষয়টিতে বিজেপির প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। তবে কুণাল বারবার বলেন, যে কোনও মৃত্যুই অত্যন্ত মর্মান্তিক। আর মৃত্যুকে নিয়ে কখনোই নোংরা রাজনীতি করা উচিত নয়।

তবে এদিন প্রিয়াঙ্কর অভিযোগের পালটা দিয়েছেন রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় (Sudeshna Roy)। তিনি জানান, কারা এসেছেন জানি না। আমাকে কেউ কিছু জানায়নি, ফোনও আসেনি কোনও। আর তারপরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজ্যকে কিছু না জানিয়েই কেন এমন পদক্ষেপ নেওয়া হল? সবটাই কী পরিকল্পনামাফিক? নাকি এর পিছনে বিজেপির সরাসরি যোগাযোগ আছে কী না? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

 

 

Previous articleরাজ্য আসছেন নীতীশ কুমার, মঙ্গলে নবান্নে মমতার সঙ্গে বৈঠক
Next articleআর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ২ ইনটার্ন সাসপেন্ড ও শোকজ