সংসার সামলে বিড়ি বাঁধেন, কুঁড়েঘরের পঞ্চায়েত প্রধানের জীবন কাহিনী আপনাকেও গর্বিত করবে

চারপাশে যখন ভুরিভুরি দুর্নীতির অভিযোগ তখন এমন এক পঞ্চায়েত প্রধান সত্যিই নজিরবিহীন। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট-১ নম্বর ব্লকের নিমদাঁড়িয়া-কোদালিয়া তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত। প্রধানের নাম সুপর্ণা দাস

0
1

চাল নেই। চুলো নেই। বর্ষায় ছাতা নেই। শীতে কাঁথা নেই। এমনভাবেই অনাড়ম্বর জীবন-যাপন করেন তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত প্রধান। শুধু তাই নয়, প্রকৃত অর্থেই গ্রামের অভিভাবক তিনি। গ্রামবাসীদের প্রতি মানবিক। আবাস যোজনায় নাম এসেছিল। কিন্তু বৃহত্তর স্বার্থে নিজের নাম নিজেই বাদ দিয়েছেন। পরিবর্তে গ্রামের অন্য দরিদ্র পরিবারকে সেই বাড়ি দিয়েছেন।

আরও পড়ুন:“আপনাকে ত্যাজ্যপিতা করে দেব”, দত্তক নেওয়া গ্রামে মহিলাদের ক্ষোভের মুখে সুকান্ত

চারপাশে যখন ভুরিভুরি দুর্নীতির অভিযোগ তখন এমন এক পঞ্চায়েত প্রধান সত্যিই নজিরবিহীন। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট-১ নম্বর ব্লকের নিমদাঁড়িয়া-কোদালিয়া তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত। প্রধানের নাম সুপর্ণা দাস। দুই সন্তানের পড়াশোনার খরচ তুলতে বিড়ি শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁর একটি ছোট্ট সেলুন চালান। সেই রোজগারেই কোনওরকমে সংসার চলে।

পঞ্চায়েত পঞ্চায়েত প্রধানের এমন আটপৌড়ে জীবন-যাপনের গল্প এখন রাজ্যজুড়ে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে। দেশের দরিদ্রতম মুখ্যমন্ত্রী হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দলের একজন পঞ্চায়েত প্রধান ত্রিপল ঢাকা ঘরে থাকছেন। আবাসের ঘর নিচ্ছেন না। এটাই তো নীতি, এটাই তো আদর্শ।

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের প্রতীকে জেতেন সুপর্ণা দাস। দল তাঁকে প্রধান করে। সুপর্ণাদেবী প্রতিদিন ভোরবেলা উঠে সংসারের কাজ সেরে বিড়ি বাঁধতে বসেন। মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তাকে স্কুলে পাঠিয়ে পঞ্চায়েত অফিসে যান। বাড়ি ফিরে ফের বিড়ি শ্রমিকের কাজ করেন। গত পাঁচ বছর ধরে এটাই পঞ্চায়েত প্রধান সুপর্ণা দাসের রুটিন। সুপর্ণাদেবীর কথায়, “আমি পঞ্চায়েতের প্রধান হিসাবে সাম্মানিক পেয়ে থাকি। সংসারের খরচ বেড়েছে। তাই বিড়ি বাঁধার কাজও ছাড়িনি। প্রধান হওয়ার পর গ্রামের বাচ্চাদের স্কুলমুখী করেছি। মহিলাদের স্বনির্ভর করতে ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে অনেক কাজ করতে পেরেছি।”